#ব্রতকাহিনি_সম্ভারে_মৌখিক_চর্চা..
#প্রিয়াঙ্কা_সরকার
ঘটনাই যেখানে সূচনা, সেখানে পালিত আকর ছুঁয়ে দিয়েই কথক হয় পাঁচালি প্রাণ, ভক্তি সুখ ও পরিতৃপ্তি আঘ্রাণ। আঞ্চলিক কিংবা কাহিনির ভূমি, যাই বলি না কেন, মায়ের মুখে ছোটো ছোটো কাহিনি জুড়…
#ব্রতকাহিনি_সম্ভারে_মৌখিক_চর্চা..
#প্রিয়াঙ্কা_সরকার
ঘটনাই যেখানে সূচনা, সেখানে পালিত আকর ছুঁয়ে দিয়েই কথক হয় পাঁচালি প্রাণ, ভক্তি সুখ ও পরিতৃপ্তি আঘ্রাণ। আঞ্চলিক কিংবা কাহিনির ভূমি, যাই বলি না কেন, মায়ের মুখে ছোটো ছোটো কাহিনি জুড়েই পেয়েছি ব্রতের মূল্যায়ন। প্রতিপদে যখন মতানৈক্য ঘিরে এসেছে মনে, আলতো তারার চুলের মতো হাত বুলিয়ে দিয়েছেন স্নেহ পরশ, স্বাভাবিক চর্চা কাহিনি। ক্রমে আকর্ষণ আর গল্প মান্যতার কদর ছুঁয়েই প্রতিবারেই। কৌতুহলের বীজ বপন করেছি, তবে সবটুকু পাওয়া হয়ে ওঠেনি আজও। ঋণ যখন স্বীকার করতে হয়, তখন সুচন্দ্রা ভট্টাচার্যের " ব্রত কাহিনি " জুড়ে দিয়েছে নিবৃত্তি আর বিবৃত্তির সাতকাহন৷ আজ তাই অনুশাসনের বাঁধনে আঁকছি ব্রতকাহিনি " হুদুম দেও "।
সে এক চৈত্রের দুপুরে মা ধরিত্রী বসুমতী আসন্নপ্রসবা। এ যে ইন্দ্রের কৃপা, মা কি ফেলতে পারেন! মায়ের কাছে সন্তানের একরত্তি আশ্রয় তো আশ্রম৷ অবাঞ্ছিতের বুকে মায়ের তাই কতো অভিমান। আশ্রয়ের বুকে চাপা রাখেন ধরিত্রী, অভিমানী। এমন শ্রী সৌন্দর্য যে আশ্রয় প্রার্থী, কিন্তু সমাজ! সে কি শিহরণ জাগায় বুকে! এই সমাজে রূপের অনলে বিদ্যুৎ ঝলসে কামনার নিমন্ত্রণ করতে যতো সাকার, " পাপ " বোধের নিরলস আমন্ত্রণটা ততটাই নিরাকার৷ ভালোলাগার উত্তেজনায় যে জ্বর পুরুষ লালিত আহ্বান, যে বুকে প্রকৃতির মানবীই অচ্ছুৎ জাতি রূপে স্থান পায়। ছা পোষার সাধারণীর কি এমন আশ্রমে প্রেমিক হৃদয় সাড়া দেয়! আর ব্রাহ্মণ্যধর্ম নিরিখে স্বপ্নের আশ্রয়, উফফ! ও তো জাঁতাকলের সাতকাহন, তাই বসুমতীর ঠাঁই নাই৷ "হায়রে! নির্দয় দুনিয়া "।
নিষ্ঠুর জগতে কলা গাছের আচ্ছাদন যখন দেবভোগ্য বলে আস্ফালন করে, তখনও কলার ঝোপে বিচি ফল আশ্রয় দেয়। আসলে ভুক্তভোগী তো আঘাতের হাতছানির সারমর্ম বোঝে৷ কিন্তু বসুমতী, আপন সন্তান হুদুমকে যে উষ্ণতার অনলে কটাক্ষকে পাশে রেখে, মন জুড়ানো
স্নিগ্ধতায় দেবতার সুখপাত্র করতে চান। মা, বলে ওঠেন, " ওরে ধওলা ম্যাঘ, কালা ম্যাঘ দুইজনা সোদর ভাই, একচিলকা পানি দ্যাও কোলার ছাওয়া ধুবার যাই " ( ব্রতকাহিনি সুচন্দ্রা ভট্টাচার্য) পিতা ইন্দ্র এ আকুল প্রার্থনায় গলে গেলেন। বিগলিত মায়ের বিস্ময় সুখে আশীর্বাদ পুষ্ট হলো আটিয়া কলা। সে হলো রাজবংশীয় সম্প্রদায়ের উপাচারের সঙ্গী। মাখলা বাঁশের চালুন কুলোয় আটিয়া কলার পাতা না বিছালে, আর কাঁচাকলার ভুজ্যি না দিলে শুদ্ধি নেই। হুদুম হলো বৃষ্টির দেবতা। সেখানে বামুনের স্থান
নেই ; আছে মেয়েদের স্থান... " পর্জ্জন্যবীর্যে বসুমতীর গর্ভাধান "।
ঋণস্বীকার -
সুচন্দ্রা ভট্টাচার্যের " ব্রতকাহিনি "।