সৃষ্টি সাহিত্য যাপনঅনুগল্প (২০০ শব্দ)গল্প: উইন্টার ভ্যাকেশনকলমে: বিভা মিত্র ভদ্রতা: ০১/০২/২০২১
অফিস কেরানী মন্মথ বাবু বড়ই খাদ্য রসিক মানুষ। মানে একটু পেটুক গোছের। হাতে টাকা থাকুক বা না থাকুক ধার করে হলেও খাবার বেলায় কোন কমতি নেই…
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
অনুগল্প (২০০ শব্দ)
গল্প: উইন্টার ভ্যাকেশন
কলমে: বিভা মিত্র ভদ্র
তা: ০১/০২/২০২১
অফিস কেরানী মন্মথ বাবু বড়ই খাদ্য রসিক মানুষ। মানে একটু পেটুক গোছের। হাতে টাকা থাকুক বা না থাকুক ধার করে হলেও খাবার বেলায় কোন কমতি নেই। কিন্তু হলে হবে কি! স্বল্প বেতনে ছা-পোষা মানুষ। রোজ রোজ অত ভালো মন্দ জোটাবেন কোত্থেকে? তবে বছরের বিশেষ বিশেষ দিন গুলোতে কোন ছাড় নেই।
আগে প্রতি বছর বড়দিনে পরিবারের সকলকে নিয়ে একসঙ্গে বসে বেশ রসিয়ে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করতেন। কিন্তু আজ কয়েক বছর ধরে ঐ দিন কোন না কোন অতিথি এসে হাজির হবেই হবে। ব্যস সব পন্ড! স্ত্রী তো তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। তাই সে বছর ঠিক করেছেন যে আর বড়দিন মানাবে না। এখন থেকে ফার্স্ট জানুয়ারীটাই খুব মজলিস করে কাটাবেন।
সেদিন স্ত্রী কে বললেন, যা ঠান্ডা! তাতে করে রাতে বেশ জম্পেশ করে কষা চিকেন আর গরম গরম আলুর পরোটা খাওয়া যাক।
সকলে খেতে বসতে যাবেন এমন সময় ডোর বেল। ভাবলেন এই শীতে এত রাতে আবার কে এলো! দরজা খুলতেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই একদল কায় কিচির করতে করতে ঘরে ঢুকেই , সোজা খাবার টেবিলে একেবারে হ্যাংলার মত হামলে পড়লো।
হ্যাঁ মন্মথ বাবুর একমাত্র বোন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উইন্টার ভ্যাকেশনের ছুটি কাটাতে ওই দিন এসে হাজির। নাও হোল আর কি!
তাই তিনি পরের বছর ঠিক করেছেন যে, বাব্বা! আর রাতে নয়। এবার আগে ভাগেই দিনের বেলায় মনের মতো লাঞ্চটা সেরে ফেলবেন।
যেই শুরু করতে যাবেন হঠাৎ বেজে উঠল ডোর বেল। ব্যস!!খুলতেই সেই একপাল হাড় হাভাতে মুখ যেন উঁকি দিয়ে আছে।
পরের বছর ও সেই একই পুনরাবৃত্তি। খাবার টেবিলে সব সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে বসতেই আবারও সেই ডোর বেল। মন্মথ বাবুর তো প্রেশার টাই বেড়ে গেল। আর এদিকে স্ত্রী তো রাগে জ্বলে একেবারে আত্মহত্যার জোগাড়।
অবশেষে এই বছর ঠিক করেছেন একটা অন্য উপায়। অতিথিরা এসে দেখলেন দরজায় বড় বড় ডবল তালা ঝুলছে। আর তাতে একটা কাগজের চিরকুট গোঁজা।
তাতে বড় বড় করে লেখা__আমরা উইন্টার ভ্যাকেশন কাটাতে চললাম।