নিজস্ব সংবাদদাতা,বেলিয়াবেড়া : ঝাড়গ্রাম জেলার জেলা শাসকের বিশেষ উদ্যোগে নবরূপে সেজে উঠতে চলেছে শতাব্দী প্রাচীন বাঘ্রেশ্বর শিব মন্দির। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর- ২ ব্লকের সদর বেলিয়াবেড়ায় ডুলুং নদীর ধারে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী …
নিজস্ব সংবাদদাতা,বেলিয়াবেড়া : ঝাড়গ্রাম জেলার জেলা শাসকের বিশেষ উদ্যোগে নবরূপে সেজে উঠতে চলেছে শতাব্দী প্রাচীন বাঘ্রেশ্বর শিব মন্দির। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর- ২ ব্লকের সদর বেলিয়াবেড়ায় ডুলুং নদীর ধারে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে নদীভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিলেন জেলা শাসক সুনীল আগরওয়াল। মন্দির প্রাঙ্গণের পঞ্চাশ মিটারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ডুলুং নদী। নদীর ভাঙনে মন্দির সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই জেলা শাসক সঙ্গে সঙ্গে সেচ দফতরের আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে তলব করেন এবং উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী এই প্রথম কোনো জেলা শাসক এই প্রাচীন মন্দির পরিদর্শনে এলেন। প্রায় চারশো বছরের পুরনো এই বাঘ্রেশ্বর শিব মন্দিরে প্রতি বছর গাজন উৎসব ও শ্রাবণ মাস জুড়ে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। স্থানীয় আম্বি গ্রামের বাসিন্দা হীরালাল সোম ও শাঁকরারী গ্রামের বাসিন্দা দীপঙ্কর মাইতিরা বলেন, “এই প্রথমবার কোনো জেলা শাসক আমাদের এই মন্দিরে এলেন। আমরা আশাবাদী, এবার মন্দির কেন্দ্রীক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে, আমরা এলাকার বিডিও সহ ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।” জেলা শাসক এদিন মন্দির চত্বর ঘিরে বসার জায়গা, সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেন। তাঁর এই পদক্ষেপে খুশির হাওয়া বয়ে যায় গোটা এলাকায়। শুধু মন্দির নয়, এদিন গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের আরও একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প ঘুরে দেখেন জেলা শাসক। পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ নিয়ে বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তীর কাজের প্রশংসা করেন বিডিও। বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রথমে ব্লকের কানপুর গ্রামে যান, যেখানে ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় নবনির্মিত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এরপর মিরালডিহি গ্রামের ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় পাঁচশো মিটার দীর্ঘ কংক্রিটের রাস্তার কাজ পরিদর্শন করেন। এছাড়াও বেলিয়াবেড়া কলেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পড়ুয়াদের সঙ্গে এই পরিবেশবান্ধব কর্মসূচিতে সামিল হয়ে জেলা শাসক শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন। পাশাপাশি, ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশুদের বসে আঁকো প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে খুদে শিল্পীদের উৎসাহ দেন। জেলা শাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, “মন্দির চত্বর ঘিরে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নদীভাঙন রোধে সেচ দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও এদিন ব্লকের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করা হয়েছে।” এই দিনভর কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা প্রমাণ করে দিল, মানুষের আস্থার জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশাসন উন্নয়নের দিশা দেখাতে সক্ষম। এলাকার মানুষ চান জেলাশাসকের ঘোষণা মতো দ্রুত মন্দির প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যায়ন ও নদীবাঁধ ভাঙন রোধের কাজ শুরু হোক।