অরুণ কুমার সাউ,হলদিয়া: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার পরানচক শিক্ষানিকেতন স্কুলের শিক্ষক কবি লেখক প্রাণনাথ শেঠ। ছড়া ও ছন্দে বর্তমান প্রজন্মকে পাখি চেনাতে কলম ধরলেন তিনি। গাংচিল, বনমালী, জলপিপি ,শালিক, চখাচখি, বাবুই, ফিঙ্গে, মাছ…
অরুণ কুমার সাউ,হলদিয়া: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার পরানচক শিক্ষানিকেতন স্কুলের শিক্ষক কবি লেখক প্রাণনাথ শেঠ। ছড়া ও ছন্দে বর্তমান প্রজন্মকে পাখি চেনাতে কলম ধরলেন তিনি। গাংচিল, বনমালী, জলপিপি ,শালিক, চখাচখি, বাবুই, ফিঙ্গে, মাছরাঙা, হাঁস, বক , টুনটুনি, দোয়েল ইত্যাদি গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ৭৯ টি পাখির ছবিসহ জীবনযাত্রা, দেহের গঠন, খাদ্যাভাস, ঋতু অনুসারে পাখিদের আগমন,পালক, কোন পাখি ভালো সাঁতার কাটতে পারে, কোন পাখি ভালো উড়তে পারে শুধু তাই নয় পুরাণে পাখির কথা, সাহিত্যে পাখিদের কথা, লোককথাতে পাখিদের অবস্থান ইত্যাদি নানান তথ্য ফুটিয়ে তুলেছেন সহজ সরল ভাষায় “ পাখি চেনার কথামালা " নামে বইটির মাধ্যমে। লেখক প্রাণনাথ শেঠ এর বইটি রবিবার হলদিয়ায় পরাণচক শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয়ে একটি সাহিত্যসভা ও গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়। প্রাণনাথ বাবু নিয়মিত সাহিত্য চর্চা করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তিনি মেঘ বল্লরী , দরিয়া, ছরাং- টরাং নামে তিনটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করে চলেছেন।
“ পাখি চেনার কথামালা " বইটি সম্পর্কে লেখক আরিফ ইকবাল খান বলেন- ভীষণ সুন্দর তথ্য দিয়ে ছড়া আকারে ৭৯ টি পাখি সম্পর্কে লিখেছেন। আমাদের চারপাশে পাখি হারিয়ে যাচ্ছে, পাখি মেরে ফেলা হচ্ছে। ধানক্ষেত, মাছের ভেড়িতে, কৃষি ক্ষেত্রে বিষ দিয়ে পাখি মেরে ফেলা হচ্ছে। ফলে চারপাশের পরিবেশ ভীষণ নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশে পাখি থাকাটা খুব দরকার। এই বইটিতে কেবল পাখির বর্ণনা নয় পাখির গুরুত্ব সম্পর্কেও বর্ণনা করেছেন বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চাদের পাখি চেনাতে জানাতে ভীষণ সাহায্য করবে বইটি।লেখক শিশির কুমার বাগ সোশ্যাল মিডিয়ায় বইটি সম্পর্কে লিখেছেন- বাংলা ভাষায় বিভিন্ন পাখি চেনার এ এক আশ্চর্য বই। এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় আছে প্রকৃতি, বিজ্ঞান আর সাধারন জ্ঞানের আশ্চর্য সমাবেশ। আট থেকে আশি - সবার কাছেই প্রিয় ও আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে এই বই। কবি, শিক্ষক পবিত্র ভক্তা বলেন, অনেক পাখি আছে যেই পাখিগুলোকে আমরা সঠিক নামে চিনিনা এই বইটি থেকে পাখিকে চিনব ও জানবো । 'পাখি চেনার কথামালা' - বাংলা ভাষার এক অনন্য সম্পদ হয়ে থাকবে।
ছড়াকার ও সম্পাদক প্রাণনাথ শেঠের উদ্যোগে আয়োজিত এদিনের সাহিত্য সভায় "রোদ সাম্পান" পত্রিকা, অনিমা গুছাইতে ছড়ার বই “ এই ছেলেটা ভেলভেলেটা " ও রেবা ধাড়ার “ আমার লেখালিখি " প্রকাশিত হয়। সেইসঙ্গে কবিতা পাঠ,গান ও আবৃত্তির সমন্বয়ে এক জমজমাট অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন মৌসুমী গুছাইত। ছোট গল্পের ধারা নিয়ে আলোচনা করেন লেখক শিশির কুমার বাগ, ও তপন কুমার মিত্র। পাখি বিষয়ক আলোচনায়, স্মৃতিকথায় সকলের মন কাড়েন লেখক কথাকার আরিফ ইকবাল খান। এছাড়া সাহিত্য বাসরে বক্তব্য রাখেন সুজন কুমার বালা, কবিতা পাঠ করেন মধুসূদন ঘাঁটি, অশোক কুমার বাগ, কাজী শামসুল আলম, পবিত্র কুমার ভক্তা, কৃপাণ মৈত্র, সৌগত কান্ডার, মলয় কুমার মাইতি, জয়দেব মাইতি, ভোলানাথ পাল সহ প্রায় ৭০ জন কবি সাহিত্যিক। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুরজিৎ গুছাইত ও ও পাপড়ি দেবী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুণীজনদের হাতে স্মারক সম্মাননা তুলে দেন "মেঘ বল্লরী"র সম্পাদক শ্রদ্ধেয় প্রাণনাথ শেঠ।