অরুন কুমার সাউ, পাঁশকুড়া: শিক্ষকদের হাতে চক ডাস্টারের বদলে ক্লিনিং ব্রাশ। গলায় ঝুলানো রয়েছে সচেতনতার পোস্টার। সেখানে লেখা রয়েছে স্লোগান-
“করছি মোরা আজকে পণ, নির্মল হোক রেলস্টেশন। খৈনি গুটকা পানের পিক, ফেলছে যারা তাদের ধিক।&quo…
অরুন কুমার সাউ, পাঁশকুড়া: শিক্ষকদের হাতে চক ডাস্টারের বদলে ক্লিনিং ব্রাশ। গলায় ঝুলানো রয়েছে সচেতনতার পোস্টার। সেখানে লেখা রয়েছে স্লোগান-
“করছি মোরা আজকে পণ,
নির্মল হোক রেলস্টেশন।
খৈনি গুটকা পানের পিক,
ফেলছে যারা তাদের ধিক।"
দুই শিক্ষক নিজেদের উদ্যোগে পাঁশকুড়া রেল স্টেশন চত্বরে ফুটওভারব্রিজ-এর পান ও গুটকা দাগ মুছতে শুরু করলেন। তাদের কর্মকাণ্ড দেখে অনেকে অবাক হলেও এলাকাবাসী যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন। অমৃত ভারত প্রকল্পে সেজে উঠেছে পাঁশকুড়া রেল স্টেশন। রেলের উদ্যোগে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি হয়েছে। জংশন স্টেশন হওয়ায় প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী সেই স্টেশন দিয়ে যাতাযত করেন। ফুটওভার ব্রিজটি পরিষ্কার রাখার জন্য রেলের তরফে সচেতনতার বোর্ড লাগানো হলেও একশ্রেণীর রেল যাত্রী তার তোয়াক্কা না করেই উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যে পান ও গুটকা পিকে লাল করে দিয়েছে। এই বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত সাহড়দা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক গবেষক ভাস্করব্রত পতি ও পাঁশকুড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিক্ষক অলোক মাইতিকে। দুজনেই সিদ্ধান্ত নেন আজ থেকে কয়েক মাস আগে দুজনে মিলেই ওভারব্রিজ সাফাই করবেন। এরপর তারা স্টেশন ম্যানেজার ও আরপিএফ এর কাছে অনুমতি নেন। জুন মাসের এক রবিবারের বিকেলে দুজন শিক্ষক সাফাইয়ের জন্য বালতি, শ্যাম্পু, গ্লাভস, সাবান, ডিটারজেন্ট, ব্লিচিং নিয়ে সাফাইয়ের কাজে লেগে পরে। প্রায় দুই ঘন্টার প্রচেষ্টায় বিশাল ফুটওভার ব্রিজের বেশ কিছুটা অংশ তারা পরিষ্কার করে ফেলে। পাঁশকুড়া এলাকার দুই শিক্ষকের সেদিনের সেই কর্মকাণ্ড দেখে অবাক হয়ে যায় নিত্যযাত্রীরা।তাদের কাজ অবশ্য একদিন হয়ে থেমে থাকেনি প্রতি সপ্তাহে একবার কি দুবার তারা পাঁশকুড়ার স্টেশনের সেই ফুট ওভারব্রিজ পরিষ্কার করতে লেগে পরে।রেলস্টেশনের ওভারব্রিজে পান গুটকা পিক লাগাতার পরিষ্কার করে চলেছেন সেই দুই শিক্ষক।
তমলুক হারাধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ,লোকসংস্কৃতি গবেষক লেখক ভাস্করব্রত পতি ও ময়না রাধাবল্লভচক সারদাময়ী বিদ্যাপীঠের রাসায়নের শিক্ষক আলোক মাইতি । গত সোমবার ছিল দশম সপ্তাহের কর্মসূচি । তাঁদের সাথে মাঝে মাঝে যোগ দিচ্ছে তরুণ তুর্কি সহ সমাজের বিশিষ্ট জনেরা। এদিন ভাস্করব্রত পতি বলেন "যত্রতত্র পান গুটখার পিক ফেলে অপরিষ্কার করছে অসচেতন নাগরিক।মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছি,আমাদের কাজ হয়তো একদিনে হবে না, কিন্তু একদিন নিশ্চয়ই হবে ।
মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটবে। তাই আমরা প্রতি সপ্তাহে নিজেদের কর্ম ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করে ছুটির দিনগুলিতে বা কখনো কখনো রাত্রি ন'টা থেকে দশটা এ ধরনের কর্মসূচি গুলো আমরা করে চলেছি। শিক্ষক আলোক মাইতি বলেন "যত্রতত্র পান গুটকার পিক ফেলে জীবানুর উপদ্রব হচ্ছে পাশাপাশি সৌন্দর্যের ব্যাঘাত ঘটছে । শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করেন, তাই স্টেশন চত্বরে জীবনমুক্ত এবং পরিষ্কার থাকা খুবই জরুরী।