অরুন কুমার সাউ, তমলুক : আজ হ্যামিল্টন হাইস্কুলে শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবস উদযাপন যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালিত হয়। সেই সাথে আগামী ২০২৬-২৭ বর্ষে ১৭৫ তম দিবস উদযাপনের এর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো।শহীদ ক্ষুদিরাম …
অরুন কুমার সাউ, তমলুক : আজ হ্যামিল্টন হাইস্কুলে শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদান দিবস উদযাপন যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালিত হয়। সেই সাথে আগামী ২০২৬-২৭ বর্ষে ১৭৫ তম দিবস উদযাপনের এর প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো।শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দফায় দফায় এদিন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক ও ছাত্ররা এসে ক্ষুদিরাম বসুর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। ক্ষুদিরাম বসু এখানেই স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত হন।১৮৫২ সালে তমলুকের সল্ট এজেন্ট চার্লস হ্যামিল্টন এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হেরিটেজ মর্যাদাপ্রাপ্ত সেই বিদ্যালয় আজও ক্ষুদিরামের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে রয়েছে। তমলুকের হ্যামিলটন স্কুলে ১৯০১ সাল থেকে ১৯০৪ সাল পর্যন্ত এই স্কুলে পড়াশোনা করতেন ক্ষুদিরাম বসু। শোনা যায় এই সময় দিদি অপরুপা দেবী ও জামাইবাবু অমৃতলাল রায় এর সাথে তমলুকের রামসাগর পুকুর পাড়ে থাকতেন ক্ষুদিরাম। আজও বিদ্যালয়ের অ্যাটেনডেন্স রেজিস্টরে ক্ষুদিরাম বসুর নাম রয়েছে।
বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে কাঠবাদাম বৃক্ষ। এই গাছকে জুড়ে ক্ষুদিরামের একটা সময় কেটেছে। শুধু তাই নয় একবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ক্ষুদিরাম বসু আর এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটির দরখাস্ত করেছিলেন। সেই দরখাস্তের কপি আজও রয়েছে বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়ে পড়া কালীন তমলুকের রক্ষিত বাটিতে প্রতিষ্ঠিত গুপ্ত সমিতি মাতৃসদন এর সদস্য হয়েছিলেন। এই বিদ্যালয়ের পড়াকালীন তিনি অন্যান্য বিপ্লবীদের সঙ্গে গোপনে ব্যায়াম কুস্তি লাঠি খেলা কলাকৌশল শিখতেন।
সোমবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা, প্রাক্তন শিক্ষকেরা এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র তথা তাম্রলিপ্ত পৌরসভার পৌর প্রধান ডঃ দীপেন্দ্র নারায়ন রায়, অধ্যাপক আশুতোষ দাস, প্রাক্তন বিধায়ক ব্রহ্মময় নন্দ, কাউন্সিলর চঞ্চল কুমার খাঁড়া ,শিল্পী ও ভাস্কর চন্দন বৈতালিক, কবি অরিন্দম প্রধান, ডা: সৌগত মাইতি সহ কৃতি প্রাক্তন ছাত্ররা।
তমলুক শহরের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র জয়দীপ পান্ডা বলেন,এই স্কুলের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িতে রয়েছে ক্ষুদিরামের স্মৃতি কাহিনী। আজও স্কুল চত্বরে পুরনো বিল্ডিং সহ গাছ বিভিন্ন গাছ সেই সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। কবি ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র অরিন্দম প্রধান বলেন, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার প্রাচীন স্কুলের অন্যতম তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুল। এই স্কুলেই ক্ষুদিরাম বসু পড়েছিলেন।একজন হ্যামিল্টনিয়ান হিসাবে আজ নিজের কাছে নিজে গর্বিত । আজ প্রস্তুতি সভায় বহু মানুষের সঙ্গে নতুন করে আত্মিক যোগ হয়। সেইসঙ্গে হ্যামিল্টনের সমস্ত প্রাক্তনীকে এই বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।