মন্থরা ,কৈকেয়ী, রাবণ আজো বেঁচে ....
রাবণ , কৈকেয়ী , মন্থরা আজো দিব্যি বহাল তবিয়তে এই সমাজের বুকে বেঁচে আছে । আজো মন্থরারা কুমন্ত্রণা দেয় একের নামে অন্যের কানে । কারো ভালো কেউ সহ্য করতে পারেনা । কারো ভালো চাইবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ন…
মন্থরা ,কৈকেয়ী, রাবণ আজো বেঁচে ....
রাবণ , কৈকেয়ী , মন্থরা আজো দিব্যি বহাল তবিয়তে এই সমাজের বুকে বেঁচে আছে । আজো মন্থরারা কুমন্ত্রণা দেয় একের নামে অন্যের কানে । কারো ভালো কেউ সহ্য করতে পারেনা । কারো ভালো চাইবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই , অথচ গালভরা শুভেচ্ছাবার্তা দিবে আর পিছন থেকে ছুরি মারবে । ' কানভরো আন্দোলন ' চালিয়ে অন্যের কানে কুমন্ত্রণার বিষ ঢেলে অন্যের ক্ষতি করতে মন্থরাদের দল আজো জীবিত ।
না তারা এখন আর কুঁজি নয় ; বরং সুন্দর মানুষের মুখোশ পরা থাকে ।
কৈকেয়ীরাও নিজের স্বার্থের জন্য অন্যের সর্বনাশ করতে আজো সিদ্ধহস্ত । তারা ঠিক জানে কখন কোন ' বর ' ( অস্ত্র ) প্রয়োগ করতে হয় । সুযোগসন্ধানী কৈকেয়ীরা উপযুক্ত সময়ে অন্যের ক্ষতি করে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে ওত পেতে থাকে । তারাও যে ভদ্রবেশী ভালোমানুষের মুখোশ পরে বন্ধু সেজে থাকে , ঠিক সময়ে ছোবলটা মারে।
ত্রেতাযুগের রাবণ অনেক ভদ্র সভ্য ভালো মানুষ ছিলেন , এখনকার ভদ্র মুখোশধারী রাবণদের থেকে । তিনি মুখোশ পড়তেননা । যেটা করতেন প্রকাশ্যে । রাবণের দশ মাথা ছিল ঠিকই , অর্থ্যাৎ দশরকমের চরিত্রকেই তিনি প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন । এখনকার রাবণদের একটা মুখ হলেও অনেক চরিত্র মনের ভিতর । সব চরিত্রগুলো সুন্দর মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখে । গিরগিটিরাও লজ্জা পায় মানুষের এতো রঙ বদলানো দেখে ।
রাবণ বলপূর্বক সীতাকে হরণ করলেও পশ্চাতাপ ছিল , তিনি জোর করে অপবিত্র করেননি সীতাকে । এমনকি শত্রুর স্ত্রী'কে মেরেও ফেলেননি । কোনদিন নারীহত্যা করেননি তিনি । এখনকার রাবণরা জোর করে ধর্ষণ করে , নানারকম অত্যাচার করে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে পৈশাচিক উল্লাস করে ।
সীতার রূপের প্রতি রাবণের লোভ ছিল কিন্তু সংযমী ছিলেন । সীতাকে না পাবার জন্য অ্যাসিড ঢেলে রূপ বিকৃত করেননি । অপহরণ করার পাপবোধ ছিল তার মনে তাই স্পর্শ করেননি সীতাকে । যেহেতু অহংকারী ছিলেন তাই মাথা নত করেননি শত্রুর কাছে । তাই অপরাধবোধ থাকলেও স্বেচ্ছায় সীতাকে ফেরৎ না দিয়ে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করে প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ শত্রুর হাতে প্রাণ দিয়েছেন ।
কিন্তু এই সময়েই ভদ্রলোকের মুখোশ পরে রাবণরা দিব্যি মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকে । কারন আপনিও রাবণদের তেল মাখনে বাঁচিয়ে রাখেন , পাছে আপনারও দরকার পরে রাবণদের ।
সীতারা সেই যুগেও অপমানিত , লাঞ্ছিত , বঞ্চনার স্বীকার হয়েছিল । আজো সীতারাই বদনাম কুড়ায় , অপমানিত হয় । আজো সীতাদেরই সতীত্বের প্রমাণ দিতে হয় । আজো কত সীতা আত্মহত্যা করে । সেইদিনও সীতাকে আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে হয়েছিল । ' পাতালপ্রবেশ ' অর্থাৎ স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে ডেকে নেওয়া কি আত্মহত্যা করা নয় ! ! !
🖋#কথাছবি_কর