কবিতা :- " এ কোন মৃত্যু "কলমে :- দেবাশিস সেনগুপ্ত। ২৪-১১-২০২০
আমি একবার তোমার গোলাপী ওষ্ঠে চুম্বন করলাম, একবার জন্মভূমির মাটির ওপর।তোমার উষ্ণ ঠোঁট আমাকে পুড়িয়ে দেয়;আমার সমস্ত শরীর কালো কলুষিত করে।ছ্যাঁকা ছ্যাঁকা দাগ আমার…
কবিতা :- " এ কোন মৃত্যু "
কলমে :- দেবাশিস সেনগুপ্ত।
২৪-১১-২০২০
আমি একবার তোমার গোলাপী ওষ্ঠে চুম্বন করলাম, একবার জন্মভূমির মাটির ওপর।
তোমার উষ্ণ ঠোঁট আমাকে পুড়িয়ে দেয়;আমার
সমস্ত শরীর কালো কলুষিত করে।ছ্যাঁকা ছ্যাঁকা
দাগ আমার বুকের ভিতরে,জ্বালা করে।
মাটির বুকে চুম্বন করে দেখি, বড় ঠান্ডা তার শরীর- হিম শীতল ঠান্ডা। শুধু কান্নার কলধ্বনি।
ছুটে যাই কান পাতি তোমার বুকের ওপর।
উত্তেজিত বুকে শুধু উষ্ণতার আন্দোলন--নব সৃষ্টির হাত ছানি।
দ্রুত ফিরে যাই মাটির কাছে। কান পাতি মাটির হৃদয়ে, বোঝবার চেষ্টা করি কলধ্বনি কারণ, উৎসস্থল। শুনি কাঁদছে মা আমার। বুকের মাঝে হাপরের ওঠা নামা। বইছে অঝোরে অশ্রুধারা।
তারই ক্রন্দন ধ্বনি।
মাটিতে চুম্বন করে প্রশ্ন করি কাঁদছ কেন মা?
নিশ্চুপ মা আমার! গলা ভারী, চোখের জল মুছে নেয়- তবুও শব্দ বাজে বুকে।
আজ প্রগতির নামে তোদের এগিয়ে চলা। ভাবিস
মায়ের কথা কোনদিন! গাছের পর গাছ কাটছিস,
পুকুর নদী নালা বুজিয়ে মকান,কল কারখানা প্রগতির ধ্বজা তুলে। আড়ালে কাঁদে মা।
ভালো আছিস তোরা!?
জল তুলেছিস, তেল তুলেছিস বুকটা আমার খালি।
ঝরে পড়ছে বালি। বুকটা আমার শূন্য ভরবি কবে আর!
মা হয়ে বলতে পারিনা সন্তান আমায় করে চলছে
বলাৎকার। চারদিকে রাহাজানি, আতঙ্কবাদ, যুদ্ধের দামামা,দম্ভের আস্ফালন, নির্যাতিতের হাহাকার।
উন্নত জীবন যাপন,গাড়ি চড়ছিস, ধোঁয়া ছাড়ছিস --দম আর পারিনা নিতে,বন্ধ হয়ে আসে। বুক ভর্তি কালি শুধু কালি।
বরফ যাচ্ছে গলে,ফেঁপে উঠছে সমুদ্র জলরাশি!
একদিন সব, সব ডুবে যাবে জলে। বৃহৎ জলরাশি গ্রাস করবে স্থল বনাঞ্চল।
মরবে আমার সন্তানেরা,বিনষ্ট হবে জীবকুল।
তাই তো চোখে জল বক্ষ টলমল।
ভারাক্রান্ত মনে ফিরে আসি ঘরে। দেখি, মা ঘুমিয়ে আছে ছেলে নিশ্চিন্তে বুকের পরে।
চুপি চুপি শুয়ে পড়ি পাশে। ঘুম উবে যায় শুধু মায়ের মুখটা ভাসে, কালো বিবর্ণ।
ভয়ে বুকটা দুরু দুরু, জলে ভেজা।
মৃত্যু ভয় আমাকে হাতছানি দেয়, ধীরে ধীরে জাপটে ধরে।
এ কোন মৃত্যু--!!