Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-লেখনি-সম্মাননা

বিভাগ -গল্প 
ভালোবাসার টেডি মালা সেন দে ১০।২।২০২১
অনিতা আমার চলার পথে বন্ধু হয়ে এসেছিলো । আমরা প্রতিদিন চলতে চলতে কত না বন্ধু পাই । তাদের জীবনযাত্রা ভিন্ন ভিন্ন , কিছু সুখ দুঃখ নিয়েই পথ হাঁটতে হয় । তারই মাঝে কখন মনের দিক থেকে খ…

 


বিভাগ -গল্প 


ভালোবাসার টেডি 

মালা সেন দে 

১০।২।২০২১


অনিতা আমার চলার পথে বন্ধু হয়ে এসেছিলো । 

আমরা প্রতিদিন চলতে চলতে কত না বন্ধু পাই । তাদের জীবনযাত্রা ভিন্ন ভিন্ন , কিছু সুখ দুঃখ নিয়েই পথ হাঁটতে হয় । তারই মাঝে কখন মনের দিক থেকে খুব কাছাকাছি এসে যাই । 

    আমার ছোটবেলা কেটেছে উত্তর কোলকাতায় ।

আমরা ভাই বোনেরা বড় হতে থাকি সেখানে । লেখাপড়া শিখে দিদির বিয়ে হয় কোলকাতায় । আমার বিয়ের পর চলে আসতে হয় কোলকাতার বাইরে। ওর বদলির চাকরীর জন্য পশ্চিমবঙ্গের অনেক জেলায় ঘুরেছি । তারপর আমরা পাকাপাকিভাবে উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতে থাকতে আরম্ভ করি । প্রতিদিনের সংসারের ব্যস্ততা , মেয়েদের পড়াশুনার দেখভাল এভাবেই চলতে থাকে আমার জীবন । আমি যে সব সময় খুব বেশী বন্ধু নিয়ে সময় কাটিয়েছি এমন নয় । তবে মনের মিল যদি হয়ে যায় কখনো সে বন্ধু আমার মনের অনেকটা জায়গা নিয়ে বসেছে । 

    যার কথায় এই গল্পের শুরু অনিতা , ও আমার বাল্যবন্ধু না স্কুল কলেজেও পড়িনি একসাথে । কিন্তু আজ ও আমার মনের অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে । ওর সরলতা ওর ভাগ্য জয়ের ইতিহাস আমাকে অনুপ্রেরণা যোগায় প্রতিটা মুহূর্তে । 

তখন ভালোবাসার মাস চলছে , ভালোবাসা জানাবার এক একটি দিন নিজস্ব আঙ্গিকে ধরা দেয় প্রিয়জনের কাছে । যদিও আমরা হলাম বড় সেকেলে । তবে একালের ভালো নতুন কিছু দেখলে ভালো লাগে বৈকি । 

যাক অনিতার কথায় ফিরে আসি । অনিতা শোনালো ওর এই ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার গল্প । অনিতা বললো , ওর বিয়ের আট বছর পর একদিন মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ওর স্বামীর চলার শক্তি হারিয়ে যায় । ডাক্তার হাসপাতাল করে বেসরকারি অফিসে চাকরী করা অমল বাবুর পুঁজি শেষের দিকে । কোনো কূলকিনারা না পেয়ে কি করবে ভাবছে তখন নাকি মাথায় আসে এক ভাবনা । বাড়িতে বৃদ্ধ শ্বশুর , ছেলেমেয়ে আর নিজেরা এক নাজেহাল অবস্থা । 

অনিতা অনেক হাতের কাজ জানত । মেয়ের স্কুলের হাতের কাজ ওকেই করে দিতে হতো । ও দেখেছে ভালবাসার দিনে টেডি দিয়ে জানায় ভালোবাসা , এক সুন্দর মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া । তখনই ঠিক করে মেয়ের স্কুলের জন্য তো অনেক বানিয়েছে , টেডি দিয়েই ব্যবসা শুরু করবো । আমি সেদিন মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওর কথাগুলো শুনছিলাম । অনিতা আরও বললো , ভালো রেখে ভালবাসার মানুষকে যে কাছে টানতে পারে , সেই ভালোবাসা একটা টেডিকে জড়িয়ে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাক প্রিয়জনের মনে। এই সুন্দর মুহূর্ত দেখবো বলে কত রাত জেগে কাটাই রূপ দিতে একটা টেডির । আজ টেডি আমাকে দিয়েছে ভালোবাসার মানুষগুলোকে ভালো রাখার শক্তি । 

কথায় কথায় কখন দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমেছে । আমি উঠে পড়লাম ওর বাড়ির সোফা থেকে । কিছুটা পথ একলা হাঁটলেও ওর জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ের গল্প সঙ্গী হলো । ভাবতে খুব ভালো লাগলো আজ অনিতা আরও কত মেয়েকে সাথে নিয়ে মেতে ওঠে ভালোবাসা জানাবার এই টেডি দিবসে ॥