Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

গঙ্গায় ভেসে আসা লাশ আটকাতে মালদার গদাই চরে সতর্ক বঙ্গ প্রশাসন

গঙ্গায় ভেসে আসা লাশ আটকাতে মালদার গদাই চরে সতর্ক বঙ্গ প্রশাসন ।
লাশ ভেসে যায় জলে।চেখে খায় কাক মনের আনন্দে ।ডাঙায় থাকলে শিয়াল কুকুর ।জলে কাক।হায়রে মানুষ।তোমার কি ভবিতব্য ।চির নিদ্রায় শায়িত হয়েও তোমার শান্তি নেই।মা গঙ্গায় ভাসিয়ে থেক…



গঙ্গায় ভেসে আসা লাশ আটকাতে মালদার গদাই চরে সতর্ক বঙ্গ প্রশাসন ।


তরুন চট্টোপাধ্যায়

লাশ ভেসে যায় জলে।চেখে খায় কাক মনের আনন্দে ।ডাঙায় থাকলে শিয়াল কুকুর ।জলে কাক।হায়রে মানুষ।তোমার কি ভবিতব্য ।চির নিদ্রায় শায়িত হয়েও তোমার শান্তি নেই।মা গঙ্গায় ভাসিয়ে থেকেও শান্তি নেই।তোমার শরীরে মারন ভাইরাস ।যদি সেই ভাইরাস মেশে তাহলে তো উড়কুট উঠে যাবে মানব সভ্যতার ।অথচ তুমি কিছুই জানো না।তোমার নিথর দেহ ভাসতে ভাসতে গঙ্গা বা যমুনা যেখানেই হোক তোমার রক্ষা নেই।তুমি আজ লাশ।তাইতো লাশ ভেসে যায় জলে।

ভাসতে ভাসতে তোমার দেহ উওর প্রদেশ, বিহার ছাড়িয়ে তোমার অভিমুখ বাংলার দিকে।তবে ভয় নেই।বাংলার নব নির্বাচিত মমতা সরকার আগে থেকেই তৈরি।মালদার মানিক চকে এসে পৌঁছালে এখানকার সরকার তোমার যথার্থ কেয়ার নেবে।তোমার দেহ তুলে ব্যবস্থা করবে সরকার ।যত্ন সহকারে তোমার দেহ পুঁতে দেবে মাটির গভীরে ।না না শিয়াল কুকুর তোমাকে স্পর্শ করার সাহস পাবে না।সে রকম পরিকল্পনা ই রয়েছে বাংলার সরকারের ।

পশ্চিমবঙ্গের মালদা থেকে উওরপ্রদেশের হামির পুরের দূরত্ব প্রায় এক হাজার কিলোমিটার ।আর বিহারের বক্সারের দূরত্ব তো পাঁচশো কিলোমিটারের ও বেশি।হামিরপুর আর বক্সারের সঙ্গে মালদহকে যেন এক সুতোয় বেঁধে দিয়েছে গঙ্গা ।

নরেন্দ্র মোদীর সফেদ গঙ্গা পরিকল্পনা আজ বাক্সবন্দি ।রাম তেরী গঙ্গা মায়েলীর কথা আজ যে বড়ই প্রাসঙ্গিক ।গঙ্গা ময়লাই শুধু হচ্ছে না,ভেসে আসছে লাশ শয়ে শয়ে।সৌজন্যে ভারতের কোভিড ।জয় শ্রী রাম বলে যাঁরা গঙ্গায় ডুব দিতে চেয়েছেন তাঁরা কি বলবেন জানি না।তবে ময়লা জল যে আরো দূষিত হচ্ছে এনিয়ে তো আর কোন চিন্তার অবকাশ নেই।

উওরপ্রদেশ আর বিহার থেকে চোখ এড়িয়ে যে কোন সময়েই এসে পড়তে পারে লাশ।মালদার গঙ্গায় ।আগাম সতর্ক বাংলার প্রশাসন।মানিকচকের কাছে যেখানে গঙ্গা এই রাজ্যে ঢুকছে সেখানে জারি হয়েছে সতর্কতা ।তৈরি আছে নৌকা নিয়ে মাঝির দল।যদি কোন দেহ আসে তা তুলে পরীক্ষা করা হবে।তারপর করোনা বিধি মেনেই সৎগতি।

ঝাড়খণ্ডের সাহেব গঞ্জের উল্টো দিকেই মানিক চকের গদাই চর। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে দেহ যদি ভেসে আসে তা প্রথমেই আটক করা হবে এই গদাই চরেই।কারন মানিক চকে গঙ্গা খুবই চওড়া । কিন্তু গদাই চরে তা কম।ফলে এই গদাই চরকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।নৌকো তো আছেই।সঙ্গে রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের স্পীড বোর্ড । একটিও দেহ যেন এদের চোখ এড়িয়ে না চলে আসে তার জন্য বিশেষ সতর্কতা তো থাকছেই। থাকছেন প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্তা ব্যক্তিরা । ঘন ঘন বৈঠক চলছে । কি ভাবে আটকানো যাবে এই শব।

উওরপ্রদেশের হামির পুর ও বিহারের বক্সার থেকে মালদার জলপথের দূরত্ব যে অনেকটাই তাতো আগেই বলেছি। তাই ভাসতে ভাসতে দেহে পচন তো ধরবেই।তাহলেও বঙ্গ প্রশাসন কোন ভাবেই হাল্কা ভাবে নিচ্ছেন না এই কাজটিকে।ঘাটে পিপি ,কিট সবই রাখা আছে।দেহ এলে পরীক্ষা ও তারপর বিধি মেনে সৎকার।

কার দেহ,কোন সম্প্রদায়ের দেহ সেসব এখন গৌন। ভেসে আসা দেহ গুলি উপযুক্ত সন্মান সহকারে তা মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে পারলে তা কুকুর বিড়ালের হাত থেকে রক্ষা তো পাবেই।সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কা কমবে সংক্রমণ ছড়ানোর।আর গঙ্গা ও মুক্ত হবে এই দূষন থেকে।সরকারের এই পরিকল্পনা কে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।মানুষ ও তাকিয়ে আছেন মানিকচকের গঙ্গা পাড়ে। দেহ দেখলেই খবর পাঠাবেন প্রশাসন কে।যাতে করে সেই দেহ উঠে আসে গঙ্গা থেকে।সৎগতি হয় সেই পচা গলা দেহ গুলির ।

উওরপ্রদেশের সরকার আর বিহার সরকারের মধ্যে গঙ্গা তে মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলা নিয়ে চাপান উতোর আজও অব্যাহত । এক রাজ্য আর এক রাজ্যের দিকে আঙুল তোলা তো আছেই।বিহার সরকার উওরপ্রদেশের দিক থেকে আসা গঙ্গায় জাল বিছিয়েছেন। যাতে করে উওরপ্রদেশের লাশ ঢুকতে না পারে বিহারে। আবার উল্টো দিকে উওরপ্রদেশের সাফ জবাব এই দেহ বিহারের গ্রামের । দেহ যে রাজ্যের হোক না কেন তা না সৎকার করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার মতো গর্হিত কাজটিকে কোন রাজ্য ই ভালো চোখে দেখছেন না।নিন্দার ঝড় উঠেছে সমগ্র ভারত জুড়েই।সমস্ত রাজ্য সরকারের কাছে নির্দেশ আগেই ছিল কোভিড বিধি মেনে মৃত দেহ গুলির অন্তোষ্টি করার। অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা তা গঙ্গায় ভাসিয়ে দিল এ যুক্তি অনেকেই মানতে চাইছেন না। সরকারের নির্দেশ অমান্য করে তা গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার সাহস তাদের হয় কি করে।

পশ্চিমবঙ্গের সরকার যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছেন কোভিড বিধি মেনে দেহ সৎকারের।কিছু কিছু শ্মশান কে শুধুমাত্র কোভিড দেহ সৎকার হবে বলেই আলাদা রাখা হয়েছে।বাকি কিছু রাখা হয়েছে নন কোভিড এর জন্য । কিন্তু আজকের এই ভেসে আসা লাশ যদি গঙ্গা বাহিত হয়ে এ রাজ্যে চলে আসে । আর সেই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সচেষ্ট বঙ্গ প্রশাসন ।

শুধু গঙ্গা নয়, বিভিন্ন রাজ্যে দেখা যাচ্ছে নানা নদীতেই লাশ ভাসতে।তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার গুলিকে কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।কোন ভাবেই নদীতে লাশ ভাসানো যাবে না।

বিহারের বক্সারের কাছে একশোর মতো দেহ পাবার পরেও তা থেমে নেই। ব্রক্ষপুরের কাছেও দেহ মিলতে শুরু করেছে। আর বিহারের বক্তব্য সব দেহ গুলি ভেসে এসেছে গঙ্গায় উওরপ্রদেশের কোন জায়গা থেকে।আবার উওরপ্রদেশের বক্তব্য এই সমস্ত দেহ বিহারের গ্রামের ।

দেহ উওরপ্রদেশের বা বিহারের কিংবা অন্য কোন রাজ্যের তা নিয়ে জলঘোলা করে লাভ নেই। দেহ গুলি কোন সম্প্রদায়ের তা দেখার ও কোন দরকার নেই।যেটি দরকার তা হলো মৃত্যু মিছিল কে আটকানো । আর এর পরেও যারা লাশ হয়ে যাচ্ছেন তাদের সদগতি।

আজ অথবা কাল আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবো। দেশ জুড়ে ই চলছে তার প্রস্তুতি ।কিন্তু গঙ্গা দিয়ে বা অন্য নদী দিয়ে ভেসে যাওয়া লাশের ছবি তো সহজে ভোলা যাবে না। তা তো ইতিহাস হয়ে লেখা থাকবে দেশের মানুষের মনে।

না, রাম তেরী গঙ্গা মায়লী সিনেমার গঙ্গা সফেদ গঙ্গা থেকে যত সমতলে নেমে এসেছিলেন তত ময়লার ছবি চাক্ষুষ করেছেন দিনে দিনে। তাই আজ আমাদের প্রতিজ্ঞায় থাকুক লাশ ভাসবে না গঙ্গায় ।

সফেদ গঙ্গা নাই বা পেলাম।লাশ হীন গঙ্গা তো পেতেই পারি।

আর সেই চেষ্টা ই করে চলেছেন আমাদের রাজ্যে, আমাদের সরকার ।

একটিও শব ভেসে না ঢুকে পড়তে পারে মালদার মানিক চক দিয়ে ।

আর যদিও বা ঢোকে তার সৎকার করবেন আমাদের সরকার ।