Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

এভারেস্ট দিবসে ফিরে দেখা

✍🏼সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 
"বিকজ্ ইট ইজ্ দেয়ার!" সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তর ছিল এটাই। উত্তরদাতা বিখ্যাত পর্বতারোহী জর্জ ম্যালোরি। প্রশ্ন ছিল, কেন বারবার এভারেস্ট পর্বতারোহীদের হাতছানি দিয়ে এসেছে। উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট। ৮…

 




✍🏼সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 


"বিকজ্ ইট ইজ্ দেয়ার!" সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তর ছিল এটাই। উত্তরদাতা বিখ্যাত পর্বতারোহী জর্জ ম্যালোরি। 

প্রশ্ন ছিল, কেন বারবার এভারেস্ট পর্বতারোহীদের হাতছানি দিয়ে এসেছে। উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট। ৮৮৪৮.৮৬মিটার। ২৯০৩১.৭ফিটের নেপালি ভাষায় 'সাগরমাথা' বা তিব্বতিতে 'চোমোলুঙমা'।তৎকালীন দক্ষিণ এশিয়ার খ্যাতনামা ব্রিটিশ সার্ভেয়ার কর্ণেল স্যার জর্জ এভারেস্টের নামেই এর আধুনিক নামকরণ হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন এক বাঙালি। অঙ্ক কষে মেপে দিয়েছিলেন এর উচ্চতা। তিনি এক তরুণ সার্ভেয়ার রাধানাথ সিকদার।


রহস্যময় এভারেস্ট। দুর্গম এভারেস্ট। তাকে জয় করবার অমোঘ আকর্ষণ বারবার তাড়িয়ে নিয়ে বেরিয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত পর্বতারোহীদের। এসো জয় করো দেখি! সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এন্ড্রু আরভিনের সঙ্গে জুটি বেঁধে এভারেস্ট জয় করার স্বপ্ন দেখেছিলেন জর্জ ম্যালোরি। সেটা ১৯২৪। হারিয়ে গিয়েছিলেন দুজনেই। বহু পর্বতারোহী হারিয়ে গিয়েছেন এভারেস্ট অভিযানে। সংখ্যাটা খুব একটা কম নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বাঙালি তরুণী পর্বতারোহী ছন্দা গায়েনের স্মৃতি এখনো টাটকা। কিন্তু অভিযান বন্ধ হয়নি।

বারবার ছুটে এসেছেন রেমন্ড ল্যামবার্ট, ক্রিস বনিংটনের মতো দক্ষ ও অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরা। অবশেষে ১৯৫৩র আজকের দিনে, অর্থাৎ ২৯শে মে, স্থানীয় সময় সকাল ১১:৩০মি মানুষ জয় করল এভারেস্ট। স্বর্ণাক্ষরে লেখা হল তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারির নাম। দিনটি নেপাল সরকারের পক্ষ থেকে

পালন করা হয় প্রতি বছর। যদিও এবারে অতিমারি আবহে, কাঠমান্ডুতে তা পালন হচ্ছে নমো নমো করে। অংশগ্রহণ করেন মন্ত্রী, ক্রীড়াবিদ, পর্বতারোহী, সরকারি আধিকারিকরা। নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড শহরেও দিনটি পালন করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।


একটু পিছিয়ে যাওয়া যাক।

সেই ১৯২১ থেকেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সুইস ও ব্রিটিশরা। বারবার ব্যার্থতা। ১৯৫৩ সাল। নতুন করে শুরু হল অভিযান। নেতৃত্বে কর্ণেল জর্জ হান্ট। সেই দলে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী এডমন্ড হিলারি ও খুম্বু হিমবাহের আদত অধিবাসী, পরে দার্জিলিঙের বাসিন্দা তেনজিং শেরপা। পাহাড়ের আসল পথ প্রদর্শক কিন্তু শেরপারাই। রুট তৈরি করা থেকে আবহাওয়ার চরিত্র নিরূপণে অতি দক্ষ এই শেরপা সম্প্রদায়ের জুড়ি মেলা ভার! বেস ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করলেন হিলারি ও তেনজিং। প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চললেন দুজনে। তাঁরা যে কিছুতেই হার মানবেন না! অক্সিজেন প্রায় শেষ। কিন্তু অকুতোভয় দুই পর্বতারোহী এগিয়ে চললেন। এবং শেষ পর্যন্ত সফলভাবেই দুজনে পা রাখলেন শৃঙ্গে। জয় হল এভারেস্ট সামিট। রচিত হল ইতিহাস। প্রমাণ হল, প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে মানুষ সব পারে, সব!



ঘুমন্ত কারো মাথায় যদি সাপ জড়িয়ে ধরে (ব্যতিক্রমী ঘটনা) সে রাজা হয়। এই কিংবদন্তি শেরপাদের মধ্যে বেশ প্রচলিত। শোনা যায়, তেনজিংয়ের নাকি এমন হয়েছিল। অজান্তেই মাথায় সাপ জড়িয়ে ছিল। হয়তো ঘটনাপ্রবাহ সেই দিকেই গড়াল। হিলারিকে সঙ্গী করে তেনজিং জয় করলেন এভারেস্ট। পরে পুরস্কৃত হলেন ব্রিটিশ এম্পারার্স মেডেলে। পর্বতারোহী মহলে হলেন 'টাইগার অফ্ টাইগার্স'। দার্জিলিং শহরে স্থাপন করলেন হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট। সত্যি হল কিংবদন্তি!