সৃষ্টি সাহিত্য যাপন#ওগো_আমার_আগমনী#কলমে_তনিমা_সাহা
মহামায়া সনাতনী শক্তিরূপে গুণময়ী চিন্ময়ী মায়ের মৃন্ময়ী রুপঐ বেজে ওঠে শঙ্খ ধ্বনি, মায়ের আগমনী বার্তা নিয়ে আসছেন মা আমাদের মাঝে ।
শরৎ আকাশে পেঁজা তুলোর মতো নীল আভাআর চারিদিকে নতুনের …
সৃষ্টি সাহিত্য যাপন
#ওগো_আমার_আগমনী
#কলমে_তনিমা_সাহা
মহামায়া সনাতনী শক্তিরূপে গুণময়ী
চিন্ময়ী মায়ের মৃন্ময়ী রুপ
ঐ বেজে ওঠে শঙ্খ ধ্বনি,
মায়ের আগমনী বার্তা নিয়ে
আসছেন মা আমাদের মাঝে ।
শরৎ আকাশে পেঁজা তুলোর মতো নীল আভা
আর চারিদিকে নতুনের সাজ সাজ রব কানে ভাসছে ।
কাশের বন সাদা হয়ে সেজে উঠেছে
ভোরের শিউলি ফুলের গন্ধ সুধা বাতাসে উড়ে বেড়ায়
আর হালকা ঠান্ডা আলতো হাতের কোমল ছোঁয়া
স্পর্শ করে জাগিয়ে দিয়ে যায় ,
মায়ের আগমনী ।
কচি কাচারা খুব ভোরে শিউলি ফুল সাজি ভরে এনেছে ।
ঠাকুমা পুজো সেরে ফেলেছেন,
বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চন্ডী পাঠ
আর ঠাকুমার মাটির নিকানো তকতকে বারান্দায়
বাজছে মহালয়ার চন্ডী পাঠ;
বহু পরাতন রেডিও তে ঠাকুমার দেওয়া কয়েকটা শিউলি ফুল ।
পাশে জ্বালানো দুটো ধূপকাঠি
আর বাড়ির ছোট থেকে বড় সকলেই খুব ভোরে স্নান সেরে ফেলেছে ।
মন প্রাণ ভরে ডুবে সকলেই আর চন্ডী পাঠ ।
একসঙ্গে বসে মন দিয়ে মহালয়া শুনছে।
মাঝে মধ্যে কয়েকটা প্রশ্ন ভেসে আসছে কানে
আসলে ওরা এখন খুবই ছোট
তাই ওরা চন্ডী পাঠ রপ্ত করতে পারলে আর জিজ্ঞেস করবে না ।
কিছু জানার চেষ্টা
খুব ভোরে ঠাকুরদা গঙ্গায় তর্পণের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ।
পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে মোক্ষম ক্ষণে এই তর্পণ,
যা তিনি প্রতি বারের মত আজও করবেন ।
পিতামহ বরাবর করতেন প্রপিতামহ-প্রপিতামহীর উদ্দেশ্যে ।
করজোড়ে আচমনে বিষ্ণু কে স্মরণ করছেন -
"ওঁ তদ্ বিষ্ণোঃ পরমং
পদং,সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ ।
দীবিব চক্ষুরা ততং।।
ওঁ বিষ্ণুঃ,ওঁ বিষ্ণুঃ ।"
ঠাকুর দালানে মায়ের মৃন্ময়ী রূপের সাজের অনেকটাই হয়ে গেছে ।
আজ মায়ের চক্ষুদান হবে যে।
নগেন কাকা মন দিয়ে তার গোছগাছ করছে।
চারদিক ঝকঝকে তকতকে ।
আর নতুনের গন্ধে মাতোয়ারা সকলেই
মায়ের আগমনে সাজ গোজ নানা রঙে রঙিন সবাই ।
মুখ লুকিয়ে ওরনা ঢেকে চলে যাচ্ছে কে ?
কে ও ??
হাতে ত্রিশূল, পায়ে ঘুঙুর
ও কিসের ইঙ্গিত দিয়ে চলে গেল ?
ওপাড়ার সুনয়না।
বছর দুই আগে ভালোবাসার নামে নোংরা ফাঁদে পা দিতে রাজি না হওয়ায়
তার সুন্দর মুখ এসিড ছুঁরে প্রতিশোধ নিয়েছে !
কিছু অসৎ চরিত্রের মুখোশধারী স্বার্থপর ।
আজও সে খুঁজে পায়নি ,
তাদেরকে বধ করে অশুভ শক্তির দমন করতে উদ্যত।
ঐ জানালার ফাঁক দিয়ে হাত নেড়ে নেড়ে কাকে ডাকছেন উনি ?
কে ঐ বুড়িমা ??
উনি রমা দিদা।
ওনার একমাত্র মেয়ে হিয়াকে কিছু ধর্ষক একেবারে শেষ করে ফেলে ।
তার পর থেকে উনি উন্মাদের মতো তার হিয়াকে খুজে বেড়াচ্ছেন ।
ওনাকে বাড়ির লোকজন আটকে রেখেছে,
নাহলে উনি হিয়ার খোঁজে নিজেকেই একেবারে হারিয়ে ফেলবেন ।
মা তুমি আমার সন্তানকে রক্ষা করো
ওর জ্বালা যন্ত্রণা দূর করে ওকে মুক্ত করো।
আমি মা হয়ে আর সহ্য করতে পারছি না !
সাহস দাও ,আরও আরও
লড়াই করবার মত শক্তি দাও।
তুমি জাগো মা ,
তুমি জাগো ।
বাজলো তোমার আলোর বেণু
মাতালো রে ভূবন।
শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ভোরের আগমনী
ওগো আমার আগমনী ।
_________________**********__________________