Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

বেঙ্গালুরুর বনেদি বাড়ির পুজোয় কলকাতার স্বাদ

✍️সোমনাথ মুখোপাধ্যায় দেশমানুষ ডেস্ক :  সাবেক বাঙ্গালোর অধূনা বেঙ্গালুরুর বনেদি পাল পরিবারের দুর্গাপুজো দেখতে ঢল নেমেছে মানুষের। প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি পুজোয় মেতেছেন বেঙ্গালুরুর পুরনো বাসিন্দারা।


রীতিমতো পঞ্জিকা অনুযায়ী নির্ঘণ্…

 



✍️সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 

দেশমানুষ ডেস্ক :  সাবেক বাঙ্গালোর অধূনা বেঙ্গালুরুর বনেদি পাল পরিবারের দুর্গাপুজো দেখতে ঢল নেমেছে মানুষের। প্রবাসী বাঙালিদের পাশাপাশি পুজোয় মেতেছেন বেঙ্গালুরুর পুরনো বাসিন্দারা।




রীতিমতো পঞ্জিকা অনুযায়ী নির্ঘণ্ট মেনেই হয়েছে নবপত্রিকা স্নান। ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন, অধিবাস থেকে সপ্তমীর পুজো সব শাস্ত্রীয় আচার মেনেই হচ্ছে বলে জানান পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা পাল পরিবারের বধূ রোজি পাল। হবে সন্ধিপুজো। তিনি জানান, প্রতিমা শিল্পীরা এসেছেন কলকাতা থেকে। পাল পরিবারের প্রতিমা শান্ত মাতৃমূর্তি। পুজো করছেন কলকাতা থেকে যাওয়া পুরোহিতরা। সঙ্গে পুজোর অচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ঢাকিরাও এসেছেন কলকাতা থেকে। পুজোর কদিন দেদার পেটপুজোর আয়োজনে ব্যস্ত রয়েছেন কলকাতার হালুইকররা। মিষ্টি তৈরির ময়রা, কারিগররা সকলেই এসেছেন কলকাতা থেকে। তাঁদের থাকার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পাল পরিবারের পেন্ট হাউজ্। পুজোর আবহ, বিশুদ্ধ বাঙালি রান্না, বাংলার মিষ্টি, বাংলা গানের মূর্ছনার পাশাপাশি আধুনিকতা ও সাবেকিয়ানার মেলবন্ধনে জমে উঠেছে প্রবাসে শারদোৎসব। 


রোজি দেবী জানাচ্ছেন, তিনি আদতে কলকাতার মেয়ে। বিবাহ সূত্রে প্রবাসী। মাঝে কিছুদিন স্বপরিবারে লন্ডনে বসবাসের পর এখন বেঙ্গালুরুর স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। মূলত তাঁর উদ্যোগেই এবার বেঙ্গালুরুতে অনুষ্টিত হচ্ছে একমাত্র বাড়ির পুজো।এক কথায় পাল পরিবারের বধূ রোজির হাত ধরেই এক টুকরো বিশুদ্ধ কলকাতার  শারদোৎসবের স্বাদ লুটেপুটে নিচ্ছে বেঙ্গালুরু। বেঙ্গালুরুর হিন্দুস্তান এরোনটিক্স এলাকা এখন পুজোর আনন্দে বুঁদ। মানুষ আসছেন। পুজো দেখছেন। ঢাকের তালে কোমর দোলানো থেকে সন্ধিপুজোর ১০৮ প্রদীপ জ্বালানো, ধুনুচি নাচ। মেতে উঠেছেন বাসিন্দারা। রোজি আরো জানান, এ বছর তাঁদের পুজো পা দিল দ্বিতীয় বর্ষে। বাংলা গান, বাঙালি খাওয়াদাওয়ার রসনাতৃপ্তি আর বাঙালির বিখ্যাত নির্ভেজাল পুজোর আড্ডার যুগবৎ ত্রহ্যস্পর্শে বেঙ্গালুরুর বুকে এক টুকরো মিনি কলকাতা তৈরি হয়েছে পাল পরিবারের এই দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে।


কলকাতার দুর্গাপুজোর স্মৃতি খুব মিস্ করতেন রোজি। তাঁর কথায়, পৃথিবীর যে প্রান্তেই তিনি থাকুন না কেন বাঙালিয়ানা ও বাংলার ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন। সেই ভাবনা থেকেই বেঙ্গালুরুতে চলে আসার পর কয়েকবছর আগে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন সোসাইটির কমিউনিটি হলে।

তিনি বলেন, বেঙ্গালুরুতে এ বছর প্রায় একশোটি দুর্গাপুজো হচ্ছে। কিন্তু সেগুলি সবই আবাসন বা এপার্টমেন্ট অথবা বারোয়ারি পুজো। তাঁদের পুজোটাই একমাত্র বাড়ির পুজো। রোজীর এই প্রবাসে দুর্গা পুজো করার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার পিছনে রয়েছেন পাল পরিবারের গৃহকর্তা সিতাংশু  শেখর পাল ও তার স্ত্রী শিপ্রা পাল। পাল দম্পতি জানান, মহামারী, লক ডাউনের মধ্যে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে সকলে চলেছে। এটাই সঠিক সময় যখন সব অনিশ্চয়তার ভয় কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার। ভয়কে জয় করতে হবে। আর মা তো বরাভয়দাত্রী। তাই ভয়কে জয় করতে গেলে দুর্গাপুজোর থেকে ভালো আর কী বা হতে পারে। মায়ের আশীর্বাদে সব কিছু ভালো হবে। সীতাংশু শেখর আরো বলেন, পুজো হচ্ছে সমস্ত রকম সরকারি কোভিড বিধি মেনেই। যাদের মাস্ক নেই তাদের জন্যে রাখা হয়েছে নতুন মাস্ক। মন্ডপ যেমন স্যানিটাইজ করা হচ্ছে তেমনি দর্শনার্থীদের জন্যও রয়েছে স্যানিটাইজারের ব্যাবস্থা। 

বেঙ্গালুরুর বিশিষ্ট পশু প্রেমী ও সমাজসেবী রোজি আরো জানান, মানব ধর্ম সবার আগে। সকলেই তো মায়ের সন্তান। আর এ তো মাতৃপূজা। তাই মায়ের সব সন্তানরাই যাতে এই পুজোয় অংশ নিতে পারেন সেদিকে খেয়াল রেখে সবার জন্যে অবাধ প্রবেশ তাঁদের পাল বাড়ির পুজোতে। 



ভিন্ রাজ্যে গিয়েও ঐতিহ্য আর নাড়ির টান ভোলেনি পাল পরিবার। তাই পাল পরিবারের হাত ধরেই এবার বেঙ্গালুরু প্রতক্ষ করছে  দুর্গাপুজোর বনেদিয়ানা। সঙ্গে উপরি পাওনা বিশুদ্ধ কলকাত্তাইয়া দুর্গাপুজোর স্বাদ।