Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লেখক ও সাংবাদিক তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা গুচ্ছ

একটি চাঁদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে অজস্র চাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় রোজ
একটি পাখির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ঝাঁক ঝাঁক পাখি উড়ে আসে আমার চারপাশে
ভাবতে ইচ্ছে করে আমিও কি এই পাখিই ছিলাম।
সেতো কেটে গেছে বহুকাল ইতিহাস হয়ে গেছে বুড়ো,টিউব কলের …



একটি চাঁদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে অজস্র চাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায় রোজ
একটি পাখির সঙ্গে কথা বলতে বলতে ঝাঁক ঝাঁক পাখি উড়ে আসে আমার চারপাশে
ভাবতে ইচ্ছে করে আমিও কি এই পাখিই ছিলাম।
সেতো কেটে গেছে বহুকাল ইতিহাস হয়ে গেছে বুড়ো,টিউব কলের মুখে মুখ লাগিয়ে জলখাওয়া এখন না হয় ঝকঝকে জলের বোতলে পাখি জল খায়।
জ্যামিতি বক্স ছিল লোহার কদিন বাদে লাল মরচে পড়ে চাঁদার ডিগ্রি মাপতে ভুল হয়ে যেত
তবুও উপপাদ্যের সঙ্গে লসাগু গসাগু গা ঘেঁষাঘেঁষি ।
বদল মেনে নিয়ে আজ দাঁড়িয়ে কচিকাচার ইস্কুলের সামনে ঝকঝকে পোষাকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ।
স্বর্গ দেখিনি আমি দেখবার ইচ্ছে ও নেই তবে রোজ ভোরে ঈশ্বরের বাগানের সামনে হাঁটে আমার বাল্যকাল।

বিদ্যালয়ের কাছেই।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।।
*******************************

 কাঁচা হাতে সাজা গৃহস্থালির ঘর
ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্লাস্টিকের জার
কমা স্টিলে বাসন কোষন যত
এখানে সেখানে রয়েছে পরে আজও ।

দড়িতে ঝোলানো ছেঁড়া লুঙ্গি জাঙ্গিয়ার
জড়ো করে রাখা শাড়ি শায়া ব্লাউজ
পা ভাঙাচোরা চৌকিতে জল ঘটি
কলসীর মুখে মাকড়সার সংসার ।

দৃশ্য পট টা কতদিন আর আগে
লকডাউন এর পর ছেড়ে আসা ঘর
আজও আছে পড়ে স্মৃতি মেদুরতা নিয়ে
পরিত্যক্ত ঘরের কোনায় ইঁদুরেরা বাস করে।

ঘর ছেড়ে আজ পথেতে হেঁটেছে যারা
পরিযায়ী নামে শহূরে মানুষ বলে
কাগজে কাগজে প্রতিদিন এরা লিড
পেটে নেই ভাত পথ টা হেঁটেই চলে।

কত আর নেবে ঘর আর গেরস্হালি
আবার তো আসবে ফিরে সে ঘরে
বরং এগুলি সাক্ষী থাকুক একা
দিন শেষ হলে আবার তো ফিরে যাবে।

দেশে দেশে এরা শ্রম বিক্রি করেই
সাজানো গোছানো এতটুকু রৌদ্দুর
ভাতের থালাতে মাছি ভনভন করে
পড়শীরা যে আগেই চলেছে পথে।

ছায়া পাখিদের গ্রামে কত দিন থাকা যাবে
কাজ নেই মাঠে ,পেট তো শোনে না কথা
ক্ষুধার জ্বালায় পরিযায়ী হয়ে হাঁটা
আবার ফিরবে পুরানো ঠিকানা ধরে।

চলছে চলছে এমন করেই চলা
ছায়া পাখিদের চোখেতে জ্বলছে আগুন
লাল মাটি আর বনধা ভূমিতে চাষ
বারোমাস ধরে ভুখা শ্রমিকের দল।

যাবার জন্য হাঁটেনিতো এরা পথ
হেঁটেছিল পথ বাঁচতে জীবনভোর
কিন্তু সে জীবন অনাহারে কেন বৃথা
আবার তাইতো জীবিকার পথে ফেরা।

পরিযায়ী বলি কিংবা ভিন দেশী
খাবার দেখলে পশুপাখি ছাড়ে বাসা
এরাও তাই তো সব বছরেই ফেরে
এবার ফেরাটা অন্য তো হতে পারে।

ফেরা  ।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
**************

 ছড়িয়ে দিলেই ভাত
আসতো যদি কাক
কোথায় চিচিং ফাঁক
খুলে যেতোই দ্বার।

আসতো যদি চিঠি
নীল খামেতেই ইতি
ঠিকানা থাক বা না থাক
প্রাপক পেতো ডাক।

ভাসিয়ে দিলাম মন
যা ভেসে যা দূর
আলোর রেখার টান
গৃহস্থালির সন্ধান ।

টানছি হাল রোজ
কোথায় সমুদ্রর
এটি বোধহয় খাঁড়ি
জলের সঙ্গে আড়ি।

চলতে গিয়ে থামা
পথেই এসে নামা
যাবোই বা কতদূর
কমছে যে রৌদ্দুর ।

ইকরি মিকরি চামচিকরি
শব্দ ভরা ব্যাঞ্জনা
বুকের কোনে ইশান মেঘে
বৃষ্টি আসার সম্ভাবনা ।

আয় বৃষ্টি আয় তেড়ে
মাঝ নদীতে বান ডেকে
সবুজ বনে রোদ হলুদ
ভাটার টানে সব ফতুর।

এই জীবনে থাক বাকি
আরেক জীবন পাই যদি
পুষিয়ে নেব সুদ আসল
গাছে গাছে থাক মুকুল ।

ঝরা পাতা যায় ঝরে
কচি পাতা আয় ওরে
ডালে ডালে ফুটুক ফুল
মৌমাছি দের হট্টগোল ।

আগডুম বাগডুম রেলগাড়ি
আমবাগানের পাশ ঘেঁষে
দাঁড়িয়ে গেছে ইস্টিশনে
নামবো আমি সেইখানে ।

গন্তব্য  ।
তরুন চট্টোপাধ্যায়
*****************

 নদীর কিনারে চৌকো বাড়িটা
শাওলায় ঢাকে মুখ
ঢেউ বরাবর রাত চরাচর
বৃষ্টি এনেছে সুখ।
রেনু রেনু সুখ মনের নদীতে
অবগাহনের দিন
মেঘ সরে যায় কানন লুকায়
বাদল এনেছে দুখ।
সুখ দুখখের ধারাপাত লিখি
মন কেমনের বেলা
তোমার শরীরে সেই নদীটাই
ফিকে হয়ে এল বেলা।
জল থই থই নদী নেচে যায়
নীল পরী লেখে খাম
একদিন এসো কাছটাতে বসো
কানে কানে বললাম।

নদী
তরুণ চট্টোপাধ্যায়