অরুণ কুমার সাউবনমালী তুমি পরজনমে হইয়ো রাধা ...ঋতুদা তোমার উপমা শুধুই তুমি। আজও তুমি তোমার কথায় ‘বঙ্গ জীবনের অঙ্গ' হয়ে রয়েছো। যে মানুষ গুলোর সৃষ্টিশীল কাজ দেখে আমার হিংসা হয় আবার অনুপ্রাণিত হই তাদের মধ্যে তুমি অন্যতম একজন।…
অরুণ কুমার সাউ
বনমালী তুমি পরজনমে হইয়ো রাধা ...
ঋতুদা তোমার উপমা শুধুই তুমি। আজও তুমি তোমার কথায় ‘বঙ্গ জীবনের অঙ্গ' হয়ে রয়েছো। যে মানুষ গুলোর সৃষ্টিশীল কাজ দেখে আমার হিংসা হয় আবার অনুপ্রাণিত হই তাদের মধ্যে তুমি অন্যতম একজন। আর দশ জনের থেকে তুমি সম্পূর্ণ আলাদা। তোমাকে চিনেছি তোমার সিনেমা ‘দহন' দেখে। তখন বয়স অনেক কম ছিলো ঠিক করে তাই সেদিন বুঝতে পারিনি। কিন্তু পরে বুঝেছিলাম সত্যি ,সাধারণ মধ্যবিত্ত নারীদের মনের কথা এভাবে বলা যায়। ১৯ টি ছবির মধ্যে তোমার ১২ টি ছবি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রে আমার মনে হয় ঋত্বিক ঘটকের পর তুমি একটা আলাদা মোড় এনেছিলে। বাঙালি চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষজন একটু ভিন্ন স্বাদের ছবি পেতে শুরু করেছিল তোমার হাত ধরে। তোমার চলচ্চিত্রে ধরা দিয়েছিল সাহিত্য আর ছিল নতুন গল্প বলার ধরন। শুধু তাই নয় টলিউডের নতুন শিল্পীদের যেমন তুমি হাত ধরে কাজ শিখিয়েছিলে তেমনি আবার বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতা- অভিনেত্রীদের এনে তুমি দেখিয়ে দিয়েছিলে দুই চলচ্চিত্র জগতের মেলবন্ধন। কলকাতা শহরের কিছু সিনেমা প্রেমী মানুষজন সিনেমা বিমুখ হয়ে পড়েছিল আর তুমি তাদের তোমার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আবার সিনেমামুখি করে তুলেছিলে। অল্প বাজেটের মধ্যে ছবি করেও যে মানুষের মন ছুয়ে যাওয়া যায় তা তুমি দেখিয়ে দিয়েছো। তোমার প্রতিটি সিনেমায় প্রেম কাহিনী ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। বিভিন্ন রূপে প্রেম ধরা দিয়েছে। হীরের আংটি,১৯শে এপ্রিল, শুভ মহরত, সব চরিত্র কাল্পনিক,চোখের বালি, রেনকোট, বাড়িওয়ালি, দহন, দোসর একটার পর একটা ছবি মনে দাগ কেটে দিয়েছে। তুমি কতটা সাহসী ছিলে তা দেখিয়ে দিয়েছো নারী চরিত্রদের মাধ্যমে। নারী মনের গহনে যে যন্ত্রনা কষ্ট, নারীর প্রেম, ভালোবাসা, কখনো নারীর প্রতিবাদ তোমার কাজ, হাতের শিল্পের দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট পারদর্শিতার পরিচয় দেখিয়ে দিয়েছ । তোমার চলে যাওয়াটাকে আজও মেনে নিতে পারিনা। তোমার কাছ থেকে যে আরো ভালো ভালো কাজ পাওয়ার আশা করে বসেছিল সমগ্র ভারতবর্ষের মানুষ। কোন অভিমানে তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলে? জানিনা তুমি কেমন আছো? তবে যেখানেই থাকো ভালো থেকো ঋতুদা।
“প্রিয়া তেরা ক্যাইসা অভিমান "