দেশমানুষডেস্ক: কে কি খাবেন, কেমন ভাবে খাবেন,সেটি একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ ।এ ব্যাপারে আদালত কখনোই নাক গলাবে না।আজ মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়ে জানান খাদ্যাভ্যাস মানুষের নিজস্ব পছন্দের ব্যাপার ।এই ব্যাপারে আদালত হস্তক্ষেপ…
![]() |
সংগৃহীত ছবি |
তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ ।এ ব্যাপারে আদালত কখনোই নাক গলাবে না।আজ মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়ে জানান খাদ্যাভ্যাস মানুষের নিজস্ব পছন্দের ব্যাপার ।এই ব্যাপারে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না।আর এই রায় হালাল ও ঝটকা দুটি পদ্ধতি কেই মেনে নেন।যার যেমন ভাবে খাবার ইচ্ছে তিনি সেই ভাবেই খেতে পারেন।
হালাল নিষিদ্ধের দাবিতে এই রায় দিয়ে ছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ।একটি শুনানি হয় হালালের ওপরেই।আজ সেই শুনানির রায় দিতে গিয়ে একথা জানান সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ।কোর্টে আবেদন কারীর অভিসন্ধি নিয়ে ও প্রশ্ন ওঠে।পাশাপাশি এই আবেদন টিকেও খারিজ করে দেওয়া হয়।
পশুদের ওপর নির্মম অত্যাচারের প্রতিরোধী আইনের 28 নং ধারায় আছে বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী পশু হত্যার নানা পদ্ধতি আছে।সেগুলোর কোনটাই অপরাধ নয়।মুসলিম দের হালাল পদ্ধতি তে মাংস কাটা ও হিন্দুদের ঝটকা পদ্ধতি তে মাংস কাটা নিয়ে অবৈধ কিছু নেই।যে যার মতো মাংস কাটতে পারেন।দুটি পদ্ধতিই বৈধ।
সম্প্রতি এই আইন কে চ্যালেঞ্জ জানায় অখন্ড ভারত মোর্চা নামে একটি দক্ষিন পন্থী সংগঠন।তাঁদের দাবি হিন্দুদের ঝটকা পদ্ধতি তে এক কোপেই পশুটির জীবন শেষ হয়ে যায় ।কিন্তু হালাল পদ্ধতি পশুটি যন্ত্রণা পেয়ে মরে।তাই এই পদ্ধতির বদল দরকার । |
কিন্তু দক্ষিণ পন্থী এই সংগঠনের আপিল টি খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট ।বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কউলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কার জানিয়ে দেন মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে নাক গলাতে পারে না আদালত।
বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরী বলেন,কে নিরামিষ খাবেন ,কে আমিষ খাবেন তা আদালত নির্ধারণ করবে না।সেই এক্তিয়ার নেই আদালতের ।যিনি হালাল খেতে চান হালাল খান।যিনি ঝটকা খেতে চান তিনি ঝটকা খাবেন।
দক্ষিণ পন্থী এই সংগঠনের উদ্দেশ্যে ও অভিসন্ধি মূলক বলে কোর্ট জানায়।
প্রাক্তন বিজেপি নেতা বৈকুন্ঠ লাল শর্মা 1998 সালে অখন্ড ভারত মোর্চা নামে সংগঠন টি তৈরি করেন।অবশ্য এটি রেজিস্টার্ড হয় 2014 সালে।তারপর থেকে বার বার ঝামেলা তে জড়িয়েছে এই দক্ষিণ পন্থী সংগঠন টি।
লভ জিহাদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী দের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার বিরুদ্ধে এরা রাস্তায় নামে।2018 সালে হনুমান জয়ন্তী তে তরোয়াল হাতে বাইক মিছিল বার করে এই সংগঠনের সদস্যরা ।
সে সময় পূর্ব দিল্লির চারটি মসজিদে রঙ মাখানো ও গেরুয়া পতাকা ঝোলানের অভিযোগ ওঠে এই সংগঠনের বিরুদ্ধে ই।বিষয় টি নিয়ে তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ ।
হালাল হলো একটি আরবি শব্দ ।যার অর্থ বৈধ, উপকারী, ও কল্যাণ কর।যে সব বিষয়ে ইসলামে বৈধ ঘোষনা করা হয় তাহাই হালাল।
আজ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে হালাল ও ঝটকা দুটি পদ্ধতি কেই বৈধ ঘোষনা করা হয়।মানুষের খাদ্যাভ্যাস একান্তই নিজস্ব ।আর সেই খাদ্য কে কি ভাবে খাবে সেটি আদালত ঠিক করে দিতে পারে না।
ঝটকা পদ্ধতি তে একেবারে মাংস কাটবেন না হালাল পদ্ধতি তে আড়াই প্যাঁচে কাটবেন এনিয়ে মাথাব্যথা নেই আদালতের ।আর তা জানিয়ে দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ।
অখণ্ড ভারত মোর্চা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে খুশি না হলেও দেশের মানুষ খুশি।কারন ভারতের মতো ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে বিভিন্ন মানুষের খাদ্যাভ্যাস আলাদা ।আর সেই খাদ্যাভ্যাসে সম্পর্কে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিলেন সুপ্রিম কোর্ট ।খুশি সব ধর্মের মানুষ ।
যে যার নিজস্ব সংস্কৃতি নিয়ে বিবিধের মাঝে মিলনের মধ্যে চলুক।
খাদ্যাভাসে থাকুক নিজস্ব বৈচিত্র্য ।আদালতের রায় সেই কথাই উঠে এলো।