Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

৮ই ভারত বনধের ডাক কৃষকদের, বেকায়দায় বিজেপি

সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 
কৃষি বিল ২০২০কে কেন্দ্র করে আন্দোলন চলছে কৃষকদের। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রত্যাশিত ভাবেই বিলের পক্ষে সওয়াল করলেও, প্রথম থেকেই বিরোধিতার পথে হেঁটেছে দেশের সর্বস্তরের কৃষক সংগঠনগুলি। আইন প্রত্যাহার করতে হবে, এই …

 

ছবি সংগৃহীত



সোমনাথ মুখোপাধ্যায় 


কৃষি বিল ২০২০কে কেন্দ্র করে আন্দোলন চলছে কৃষকদের। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রত্যাশিত ভাবেই বিলের পক্ষে সওয়াল করলেও, প্রথম থেকেই বিরোধিতার পথে হেঁটেছে দেশের সর্বস্তরের কৃষক সংগঠনগুলি। আইন প্রত্যাহার করতে হবে, এই দাবী নিয়ে কার্যত হুমকি দিয়েছে তারা। তাদের সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সরকারের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে কৃষক সংগঠনের নেতাদের। কিন্তু কোনো সমাধান সূত্র মেলেনি। ফলে আন্দোলনের দশম দিনের মধ্যেই আগামী ৮ই ডিসেম্বর ভারত বনধ্ ডাকলেন কৃষকেরা। সমর্থন জানিয়েছে সিপিআইএম, সিপিআই, আরএসপি সহ অন্যান্য বামপন্থী দলগুলি।

এই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের বোঝাতে না পারা, বিরোধীদের আক্রমণ সহ অবরুদ্ধ রাজধানীকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানো নিয়ে কার্যত খানিকটা ব্যাকফুটে বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবক্ষেকদের মতামত তেমনটাই।


কৃষি বিল নিয়ে প্রথম থেকেই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। কংগ্রেস সহ অন্যান্য দল বিরোধিতা করে গিয়েছে লাগাতার। তা সত্তেও গত সেপ্টেম্বরে আইনটি সংসদে পাস হয়ে গিয়েছে স্রেফ সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে। বিরোধীরা হইচই বাধালেও তা ধোপে টেকেনি। লাগু হয়েছে আইন।

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবী, এই আইনের সুফল পাবেন কৃষকেরা। সংশোধিত অত্যাবশ্যক পণ্য আইন, কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন, কৃষকদের সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ণ শীর্ষক তিনটি আইন সংসদের দুই কক্ষে পাস হয়ে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। এর ফলে কৃষিক্ষেত্রের উন্নতির সাথে কৃষকদের সার্বিক উন্নতি হবে। তেমনি দাবী সরকারের।

কিন্তু সংঘাত বেধেছে তারপর থেকেই। সমগ্র কৃষিক্ষেত্র আদতে কর্পোরেট হাতে চলে যাবে এই আশঙ্কায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কৃষকেরা। মূলত পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কৃষকরা আইনের বিরোধিতা করে দিল্লির পথে পদযাত্রা শুরু করেন। অল্ ইন্ডিয়া কৃষাণ সভা সহ বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের নেতৃত্বে দলে দলে মিছিল করে আসতে থাকেন কৃষকেরা। প্রবল শীতে জলকামান, ব্যারিকেড উপেক্ষা করেও আন্দোলনের পথে অনড় তাঁরা। সামিল হয়েছেন রাজস্থান ও তেলেঙ্গানার কৃষকেরাও। ফলে দিল্লি প্রবেশের সবকটি পথ বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। পাশাপাশি বিক্ষোভ চলছে বাংলাতেও। কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মিছিল হয়েছে কলকাতায়। মিছিল করেছে প্রদেশ কংগ্রেসও। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে সমাজমাধ্যম সহ নেট দুনিয়ার বড়ো অংশই আজ সহানুভূতিশীল কৃষকদের প্রতি।


কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চললেও ফল হয়নি। কৃষকরা এককাট্টা। মেলেনি সমাধান সূত্র। এরই মধ্যে কানাডা সমালোচনা করেছে মোদি সরকারের। মোদির নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ রাষ্ট্রপূঞ্জে। সামনের বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। মিটতে না মিটতেই তার পরের বছর পাঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। এর জের নির্বাচনে পড়বে। সূত্রের খবর তেমনি। ফলে ঘরে বাইরে কার্যত বেশ ব্যাকফুটে বিজেপি!

গত ২৬শে নভেম্বরের পর আবার আগামী আট তারিখে আরো একটি দেশ জুড়ে বনধ দেখতে চলেছে দেশবাসী।


বীর বান্দার নেতৃত্বে কৃষক বিদ্রোহ দেখেছে ভারত। বাংলা দেখেছে বাঁশের কেল্লা খ্যাত তীতুমীরের নেতৃত্বাধীন কৃষক বিদ্রোহ। ইতিহাসের কি পুনরাবৃত্তি হবে? প্রশ্নটি তোলা রইলো!