দৈনিক সেরা কলম সন্মাননা বিভাগ- গল্প
শিরোনাম - #বৃষ্টি_বসন্ত
আফসানা আহমেদ সিলভি ২৬/০১২০২১ইং
আকাশ গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ করছে কালো মেঘের গর্জন হচ্ছে।বৃষ্টি তুমি আসবে বলে সংকেত পেয়েছি। বসন্তের ভালবাসায় বৃষ্টি এসে মনের সব ধূলা বালি সরিয়ে …
দৈনিক সেরা কলম সন্মাননা
বিভাগ- গল্প
শিরোনাম - #বৃষ্টি_বসন্ত
আফসানা আহমেদ সিলভি
২৬/০১২০২১ইং
আকাশ গুড়ুম গুড়ুম আওয়াজ করছে কালো মেঘের গর্জন হচ্ছে।বৃষ্টি তুমি আসবে বলে সংকেত পেয়েছি। বসন্তের ভালবাসায় বৃষ্টি এসে মনের সব ধূলা বালি সরিয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছে।
খুব খুশী মনে বের হয়েছিলাম, বই মেলায় যাব প্রিয় বইগুলো ছুঁয়ে দেখতেইচ্ছে করে। সেই উদ্দেশ্য রওনা হোলাম। কিন্ত ভয়ংকর ভাবে একটা দুরন্ত সাইকেল এসে আমাদের রিকশার সাথে খুব জেোরে বারি খেয়ে রিকশা উল্টে গেল আর আমরা মা মেয়ে ছিটকে পড়ে গেলাম।আমার পা কেটে গেল অনেকটা।মেয়েটাও ব্যথা পেয়েছে ডান হাতে।কোলে ছোট্ট দু'বছর বাচ্চা।আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি বুকের মধ্যে বাচ্চাকে জড়িয়ে ধরতে কোনোভাবে বাচ্চার যেন কিছু না হয়।সত্যি বাচ্চাকে জড়িয়ে ধরে পড়েছি আমি। বাচ্চা ঠিক বুকের মধ্যে ছিল আল্লাহর রহমতে, কিন্তু ভীষণ ভয় পেয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে গেছে সে।
আমার কলিজার টুকরা নাতি ছিল সেই বাচ্চাটা।আমার জীবনের হাসির ফোয়ারা এই শিশু যার জন্য পৃথিবীর সব কষ্টগুলো ভুলিয়ে দেয় সুন্দর অনুভব ও অনুভূতিতে।
চারপাশে লোকজন জড়ো হয়ে গেল।ঐ মুহূর্তে একটা গাড়ি মেয়ের পাশ দিয়ে এত দ্রুত চলে গেল সবাই গাড়ি আলার উপর খুব ক্ষেপে গেল কিন্তু গাড়ি আলাকে আটকানো যায়নি।অল্পের জন্য মেয়ে বেঁচে গেল।সবাই ধরাধরি করে মেয়েকে ও আমাকে উঠাতে সাহায্য করল।বাচ্চাকে কোলে নিয়ে উঠলাম কষ্ট করে।বাচ্চাকে কারও কোলে এক মিনিটের জন্য দেইনি।কোমড়ে পিঠে ভীষণ ব্যথা পেয়েছি।সেই যাত্রায় কোনমতে পাশেই হসপিটালে গেলাম। সেখানেই ডাঃ দেখিয়ে পরে বাসায় ফিরে আসলাম।
তারপর পনের দিনের ভোগান্তি হলো।বিছানায় থাকতে হয়েছে।একসময় সুস্থ হয়ে উঠলাম।
সেবার যেতে পারিনি প্রিয় বই মেলায় মন খুব খারাপ।পুরো মাস চলে গেল। ইচ্ছে হলেই অনেক কিছুই চাইলেও হয় না।অবশেষে যখন জানতে পারলাম বই মেলা শেষ তখন নিজের উপর খুব রাগ লাগছিল।
বৃষ্টি সন্ধ্যায় গরম চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে টিভির নিউজ দেখলাম। দারুন খবর শুনলাম।
নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস হচ্ছিল না। খবর টা কী সত্যি! তাড়াতাড়ি খোঁজ নিলাম।
সুখের পায়রা আমার মনে উড়ে এল একঝাঁক সাদা ধবধবে পায়রা আমাকে ভালবেসে জানিয়ে দিল
আরও দুদিন বই মেলার সময় বাড়ল।বাহ্ কি চমৎকার। চমকে চমকে চমকিত হোলাম।আনন্দে আত্মহারা আমি। বইমেলার যাত্রা শুভ হোক। ভালোবাসায় ভালোবাসায় ভরে উঠুক বই মেলা।
বসন্ত নিয়ে এল পাগলা হাওয়ার শ্যামল দিনে মিষ্টি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে। মেঘলা দিনের মেঘমালা বৈশাখী ঝড়ের মতো ঝোড়ো ঝোড়ো দমকা হাওয়ার সাথে সাথে এক পশলা রিনিঝিনি শব্দে বৃষ্টির ছোঁয়া দিয়ে বসন্তের শুভ কামনায় রুপান্তরিতো হলো আমার মনের জানালায় "বৃষ্টি বসন্ত "। শুভ হোক বই মেলা।
আগামীর সুন্দর আগমনে বই মেলা শুভ হোক সেই প্রত্যাশায়-------------।
বৃষ্টি পড়ছে গুড়ি গুড়ি।মেঘের ফাঁকে লুকিয়ে লুকিয়ে চাঁদ হাসছে। আকাশের ঘনঘটা ঝুমঝুম বৃষ্টির ফোঁটায় গাছের পাতায় জল গড়িয়ে পড়ছে। মিষ্টি একটা আবেশে ভাবনার কথাকলি কলমের কালিতে আঁকিবুঁকি করছে রঙিন কোনো বাসনায়।
বসন্তের ভোর আসুক রাত্রির নিস্তব্ধতা কাটিয়ে।এক পশলা বৃষ্টির জলে কেটে যাক সমস্ত দুঃখের মালা।বন্যা হয়ে ভেসে দুঃখের গল্পগুলো। লতানো গাছ গুলো ফুটে থাক বাগানে বাগানে।
ঝুল বারান্দার হাসনাহেনা ফুলগুলো ফুটুক সুঘ্রাণ ছড়িয়ে।লাল সাদার সুতোয় বুনো শাড়ির আঁচলে লজ্জার বৃষ্টি ভেজা বসন্ত সুখ খুঁজে পেয়েছি বসন্ত লগ্নে।
বৃষ্টির রিনিঝিনি ছন্দ লয়ে জেগে উঠুক আনন্দ মুহূর্ত ও ভালোবাসার গল্পগুলো।ভালো লাগে, ভালোবাসি বৃষ্টি বসন্ত।
রচনাঃ
০১/০৩/১৯ ইং