Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

দীনেশ ত্রিবেদীর দলত্যাগ কালি টানতে পারবে না বাংলার অগ্নিকন্যার স্বচ্ছ ইমেজে

তরুন চট্টোপাধ্যায়রাজ্য সভা থেকে দীনেশ ত্রিবেদী র পদত্যাগ নিয়ে জলঘোলা বঙ্গের রাজনিতী ।রাজ্য সভার চেয়ারম্যান কে চিঠি লিখলেন তৃনমূলের নেতৃত্ব ।কারন যে রাজ্য সভায় বক্তব্য রাখতে রাখতে তৃনমূল দল থেকে পদত্যাগ করার ঘোষনা করেন দীনেশ ত্রিব…

 


তরুন চট্টোপাধ্যায়

রাজ্য সভা থেকে দীনেশ ত্রিবেদী র পদত্যাগ নিয়ে জলঘোলা বঙ্গের রাজনিতী ।রাজ্য সভার চেয়ারম্যান কে চিঠি লিখলেন তৃনমূলের নেতৃত্ব ।কারন যে রাজ্য সভায় বক্তব্য রাখতে রাখতে তৃনমূল দল থেকে পদত্যাগ করার ঘোষনা করেন দীনেশ ত্রিবেদী তাই নিয়ে তুমুল বিতর্ক ।কারন এদিন নাকি এই সভাতে তাঁর বক্তব্য রাখার আগাম কোন সিদ্ধান্ত ই ছিল না।কিন্তু কি ভাবে তিনি কথা বলার সুযোগ পেলেন তাই নিয়েই বিতর্কের সূত্র পাত।তবে কি পর্দা কি পিছে।ডাল মে কুছ কালা হ্যায় ।

তা নিয়ে তর্ক উঠেছে বলেই এত কথার যবনিকা পাত।সে যাই হোক দীনেশ ত্রিবেদী র মত ভেটারেন্ট লিডার দল ছাড়বেন একথা আগাম সঙ্কেত ছিল না তৃনমূল দলের অন্দরে ।তাই এটিকে বিনা মেঘে বজ্রপাত বলা যেতেই পারে।

একুশের ভোটের আগে তৃনমূল দল ছেড়ে অনেকেই বিজেপি মুখী।তৃনমূল দল যতই বলুক না কেন সমুদ্র থেকে এক ঘটি জল বা গাছের দু একটি পাতা ঝড়া তা কিন্তু সত্যি নয়।বরং বলা যেতে পারে তৃনমূল দলের শক্তি ক্ষয়।আর বিজেপি দলের শক্তি বৃদ্ধি ।

ক্ষতি বা লাভ নিয়ে এই প্রতিবেদনের অবতারণা নয়।বরং বলা ভালো ভোটের আগে বোধোদয় ।এতদিন যে দলের হাত ধরে ক্ষমতার অলিন্দে ঘোরাফেরা আজ হঠাত্ এমন কি ঘটলো যাতে করে দলত্যাগ করে চলে যেতে হবে আর এক দলে।যে দলের নীতিকে এতদিন দুরমুশ করে এসেছেন আজ হঠাৎ সেই দলে কি এমন মধুর সন্ধান পাওয়া গেল।একেবারে অন্য মেরুর সঙ্গে সন্ধি স্থাপন ।আর এটিই অবাক করেছে জনগনকে।

শুভেন্দু অধিকারী দীর্ঘ দিন দল থেকে দূরে থেকে ঘুঁটি সাজিয়ে ছিলেন।তারপর একে একে পদ ছাড়া। তারপর বিজেপি দলে আবির্ভাব ।দলে নাকি থাকা যাচ্ছে না।দল এখন দেড়জনের কোম্পানি ।তাই বড় দলে পা রাখা।তবে সেই দলে এতদিন মন্ত্রী ছিলেন কি ভাবে তা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে।আসলে উত্থান পতনের গল্প ই তো থাকে।

রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর মতো এতটা নাটকীয়তা না থাকলেও নাটক তো ছিলই ।আর একেবারে সেই নাটক ক্লাইম্যাক্স এ পৌঁছে যায় অতি দ্রুত।বাকিদের দল বদলে গল্প সে ভাবে এগিয়ে না গেলেও একে একে উইকেট পতন ঘটতে দেখেছেন জনগন ।

আসল কথা হলো নাটকের স্কীপটি লেখা হয়েছিল অনেক আগেই।শুধুমাত্র সময় ও সুযোগ মতো সেই স্কীপটি ধরেই একে একে রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ ।দিল্লি কে কথা দিয়ে রেখেছিলেন বঙ্গ রাজনীতির চানক্য মুকুল রায় ।আর তার পুরস্কার তিনি সর্বভারতীয় বিজেপির সহ সভাপতি ।

প্রথমেই বলেছি দলের লাভ ও ক্ষতি নিয়ে প্রতিবেদন লিখতে বসিনি।আর সে লেখার ইচ্ছে ও নেই।2011 সালে কঠিন সংগঠনের বামপন্থী দের পরাজিত করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসেছিল তৃনমূল দল।বঙ্গ জুড়ে সেদিন পরিবর্তনের হাওয়া উঠেছিল ।আর সেই হাওয়া তে ছিল নন্দীগ্রাম ও সিঙুরের টাটকা স্মৃতি ।

একুশের আবহাওয়া কিন্তু ঠিক তেমন নয়।মমতা সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ একেবারে নেই সেকথা বলবো না।নিশ্চয় আছে।তবে তা 2011 সালের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।কাজ করতে গিয়ে কিছু ভুল ক্রটি নিশ্চয় হয়েছে।জনগন তা জানেন।কিন্তু সেই ভুল শোধরাতে মমতা বন্দোপাধ্যায় চেষ্টা আজও চালিয়ে যাচ্ছেন ।দুয়ারে সরকার সহ নানা কর্ম সূচী ইতিমধ্যেই জনমনে দোলা দিতে সক্ষম হয়েছে।ফলে পরিবর্তনের পরিবর্তন হবার মতো হাওয়া নেই ভোট বাজারে ।তাই হলফ করে বলা যায় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা এবারের ভোটেও কাজ দেবে।

তৃনমূল ছাড়া শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দোপাধ্যায় ভোট বাজারে দামি ঘোড়া ।বিজেপি দলে এই দুই নেতাকে আটকাতে তৃনমূলের ছোট বড় নেতা মাঠে নামলেও তেমন একটা সুবিধা যে করতে পারেন নি তা তো ধ্রুব সত্যি ।কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায় মাঠে নামতেই বিজেপির হাওয়া কমতে শুরু করেছে।তবে লড়াই এ ভোটে হবে ।আর সেই লড়াই এ তৃনমূল দলের জয়ের মার্জিন ও কমবে।কিন্তু ক্ষমতায় যে মমতা বন্দোপাধ্যায় থাকবেন তা নিয়ে সংশয় থাকছে না।

ভোট নিয়ে লিখতে চাইনি।তবুও অবধারিত ভাবে সেই ভোটের জয় পরাজয়ের গল্প চলে আসছে।

লেখার মূল প্রতিপাদ্য হলো তৃনমূলের বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতা বিজেপি দলে চলে আসা নিয়ে ।কেন এলেন।ওনাদের বক্তব্য দলে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না।কিন্তু একথা কেন বিশ্বাস করবেন জনগন।

পিকে ও অভিষেকের শক্তি বৃদ্ধি কি এর মূল কারন।রাজনীতি তে শক্তি বৃদ্ধি করতে সকলেই চাইবেন এটিতো সত্যি ।একসময় শুভেন্দু অধিকারী বা মুকুল রায় রা তো দলে শক্তিশালী নেতা ছিলেন।রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও শক্তি নিয়ে ই তৃনমূল দলে রাজ করেছেন।তবে কেন আজ এই ছবি।দলের মধ্যে থেকেই তো বিরোধিতা করা যেতো।মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে তো সরাসরি কথা বলা যেতো।আর তাতে করে তৃনমূল সুপ্রিমো যদি তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করতেন ,তখন না হয় অন্য কোন পথ।তা কিন্তু ঘটে নি।অক্সিজেন নেই বলে অন্য পথ কেন।ইনহেলার দিয়ে ও তো নিঃশ্বাস নেওয়া যায় ।তা কিন্তু কেউ করলেন না।সরাসরি বিজেপি দলে নাম লিখিয়ে নিজেদের সন্মান হারানো এঁদের মহান নেতার তকমা পেতে সাহায্য করলো না।

দীনেশ ত্রিবেদী ও অন্য কিছু নয়।দল বদল করে অন্য দলে পা বাড়িয়ে তিনিও প্রমান করে দিলেন যে দল তাঁকে এতদিন লালন পালন করে রাজ্য সভার মুখ করে তুললেন সে সুনাম তিনিও রাখতে পারলেন না।

ভোট আসছে।চলছে নানা অঙ্ক ।আর সেই অঙ্ক ধরেই দীনেশ ত্রিবেদীর দলত্যাগ ।অক্সিজেন টক্রিজেন এসব কথার কথা।এগুলো সবই সেই নাটকের ম্যানুসক্রিপ্ট।

তৃনমূল দল জিতুক বা হারুক সেটি বড় কথা নয়।আসল কথা হলো একুশের ভোটেও মমতা বন্দোপাধ্যায় সেই হিরো।লড়াকু নেত্রী ।বাংলার অগ্নিকন্যা ।ইতিহাস মমতার পক্ষেই রায় দেবে।জয় পরাজয় সেখানে সত্যি তুচ্ছ ।

অগ্নি কন্যা কে বাংলা যে আজও ভালবাসেন ।