Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লালকেল্লাতে জাতীয় পতাকাই উড়ুক, কিন্তু কৃষকদের সমাধান সূত্র ও তো চাই

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।দিল্লির লাল কেল্লায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বিক্ষোভরত কৃষকরা জাতীয় পতাকার পাশে গোষ্ঠী গত পতাকা উত্তোলন করে গর্হিত কাজ করলেন।একথা সত্য ।এই ঘটনার নিন্দা করার মতো ভাষা নেই।শান্তি ভাবে মিছিল করার কথা প্রতিশ্রুতি দিয়…

 

ছবি সংগৃহীত

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।

দিল্লির লাল কেল্লায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বিক্ষোভরত কৃষকরা জাতীয় পতাকার পাশে গোষ্ঠী গত পতাকা উত্তোলন করে গর্হিত কাজ করলেন।একথা সত্য ।এই ঘটনার নিন্দা করার মতো ভাষা নেই।শান্তি ভাবে মিছিল করার কথা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন তাঁরা ।কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি তাঁরা রাখলেন না একেবারেই ।উল্টে জাতীয় পতাকার অবমাননা করলেন।সোসাল মিডিয়া জুড়ে দড়ি বেয়ে ওঠার ছবি ভাইরাল হলো।সমগ্র দেশ সহ বিশ্ব জুড়ে বহে গেল নিন্দার ঝড়।আর সেই নিন্দা তো সত্যিই প্রাপ্য তাঁদের ।

কিন্তু এরি মাঝে যে প্রশ্নটি বার বার উঠে আসছে তা হলো সত্যি কি এই সব কৃষকেরাই এই কাজ করেছেন।না ডাল মে কুছ কালা হ্যায় ।হাওয়ায় তো অনেক কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে ।কেউ কেউ বলছেন বিক্ষোভকারীরা এই কাজ করেন নি।এতদিন ধরে পুলিশের লাঠি জল কামান খেয়ে ও যাঁরা মাটি আঁকড়ে পড়েছিলেন তাঁরা কেন লাল কেল্লা তে অশান্তি পাকাতে যাবেন।এদের ছদ্মবেশে সরকার পন্থীরাই আন্দোলনের মুখে কালি ছেটাতে এই সব অভিসন্ধি মূলক কাজ করেছেন।আবার কেউ কেউ বলছেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ এই কাজ করতে প্ররোচিত করেছেন।

যাই ঘটুক ভবিষ্যতে তা জানা যাবে।তবে লাল কেল্লার মতো এমন একটি জায়গা তে এই ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।তাই নিন্দা তো স্বাভাবিক ।তবে সব দায় কৃষকদের ওপরেও চাপানো ঠিক নয়।প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকেরা দিল্লির রাজপথে ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করতে চেয়ে ছিলেন।আর সেই মিছিলের উদ্দেশ্যে ছিল বেশি মানুষের সমর্থন আদায় করা।এর মধ্যে অন্যায়ের কিছু নেই।আর এই মিছিল কে প্রথমে অনুমতি না দিলেও পরে 36 টি সর্ত আরোপ করে মিছিলকে অনুমতি দেন প্রশাসন।প্রতিবাদ কারীরা সেই সর্ত মেনে নিয়ে মিছিল টি শুরু করেন।কিন্তু পরের ঘটনাটি যদি তাঁরা ঘটিয়ে থাকেন তা হলে তা তো গর্হিত অপরাধ ।কিন্তু এতো আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বলয়ে কৃষকেরা প্রবেশ করলো কি ভাবে তা নিয়ে তো প্রশ্ন থাকছেই।পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ও প্রশ্ন তো উঠছেই।নিরাপত্তার বলয় ভেদ করে যেখানে মাছি ঢোকবার উপায় নাই সেখানে লাল কেল্লার মাথায় চড়লো কি করে কৃষকেরা।তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত ছিল।ভাবনার যথেষ্ট কারন তো থাকছেই।

            কৃষকদের এই আন্দোলন তো একদিনের নয়।নভেম্বর মাসের 26 তারিখ থেকে দিল্লির সীমান্তে অবস্থান করিতেছিলেন তাঁরা ।উওর ভারতের প্রবল শীতকে অগ্রাহ্য করে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।আন্দোলন চলতে চলতে বেশ কিছু কৃষক মারাও গেছেন।তবুও তাঁরা দমেন নি।আন্দোলন থেকে এক চুল ও সরেন নি।কিন্তু সেই কৃষকরা কি এই হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রজাতন্ত্র দিবসে।

আর এখানেই থেকে যাচ্ছে এক জিজ্ঞাসা চিহ্ন ।

সেই কৃষকরা কি এতো সহজে লাল কেল্লা তে উঠে নিজেদের এই শান্তি পূন্য আন্দোলনে জল ঢেলে দিতে পারেন।আর এই কাজ তাঁরা কি করবেন এমন এক দিনে।

সত্যি মিথ্যা এই মুহূর্তে হয়তো বলা সম্ভব নয়।তবে হাওয়া তে ভাসা খবর গুলি একসঙ্গে জুড়ে নিলে যেটি সত্যি বলে মনে হচ্ছে তা হলো এর পিছনে রয়েছে নানা রহস্য ।দেরিতে হলেও তা প্রকাশ্যে আসবে।

ইতিমধ্যেই এগারো দফা আলোচনা হয়েছে।সমাধান সূত্র ও খোঁজ চলছে।সেই সময় এই ঘটনা যে কৃষকদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হবে তা তো জানা কথা।আর এই কথা কৃষকেরা যেমন জানেন ঠিক তেমন ই জানেন দেশের সরকার ।তাই আসল ঘটনার খোঁজ করাটি খুবই জরুরি ।

সরকার এই কৃষি আইনের পক্ষে।আর পক্ষে বলেই এই আইন পাশ হয়েছে।কৃষকেরা বাঁধা দিচ্ছেন ।কারন তাঁদের যুক্তি এই আইন রদ না হলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।আর কে আর নিজের ক্ষতি চান।বিরোধী দলগুলি ও কৃষকদের পাশে থাকায় এই আন্দোলন দিন দিন আরো প্রকট রুপ ধারন করেছে।কারন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃষকদের বিশ্বাস ফিরে না এলে এই আন্দোলন রত কৃষকদের থামানো যাবে না।

লাল কেল্লা তে যে ঘটনা ঘটলো তা দুর্ভাগ্ জনক।এ নিয়ে কারো কোন সংশয় নেই।কিন্তু কৃষকেরা যে আন্দোলন করছেন সেই বিষয়ে তো অন্য কথা বলা যাবে না।

বিক্ষোভকারীরা অতি উৎসাহী হয়ে যদি লাল কেল্লা তে গোষ্ঠী গত পতাকা উড়িয়ে থাকেন তা হলে সেই ঘটনা সত্যিই নিন্দনীয় ।কিন্তু সরকার যদি কৃষকদের এই আন্দোলন ভাঙতে একাজ করেন থাকেন তাহলে তো নিন্দার ভাষা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

এখন এই কাজটি ভাল মন্দ ছেড়ে অবিলম্বে ঘটনার পূনাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন ।আর সেই সঠিক তদন্তের ওপরেই নির্ভর করবে ঘটনার পরম্পরা ।

আর চাষীদের নিয়ে ও সমাধান সূত্র খুঁজতে হবে।কৃষি বিল যদি চাষীদের মঙ্গলের জন্য হয়ে থাকে তাহলে কৃষকেরা সেই বিলের বিরোধিতা করবে কেন।তাঁরাও তো চাইবেন নিজেদের ভালোমন্দ।

              বিরোধী পক্ষ নিজেদের স্বার্থ কে চরিতার্থ করতে কৃষকদের ভুল বোঝাতেই পারেন।কিন্তু সরকারের ও তো দায়িত্ব থাকছে সঠিক কথা চাষীদের বুঝিয়ে বলা।কৃষকদের স্বার্থে কাজ করা।

মনে রাখতে হবে দেশে সবুজ বিপ্লব এসেছিল এই চাষীদের হাত ধরেই।