তরুন চট্টোপাধ্যায়
15 ও 16 মার্চ সমগ্র দেশ জুড়ে ব্যাঙ্কের দরজা বন্ধ ।বেসরকারিকরন আটকাতে চাষীদের ধাঁচে আন্দোলনে নামতে চলেছেন ব্যাঙ্কের কর্মচারী । যত দিন যাচ্ছে মোদী সরকারের মুখ ও মুখোশের থেকে বেরিয়ে আসছে আসল চরিত্র ।দেশের অর্থনীতি …
যত দিন যাচ্ছে মোদী সরকারের মুখ ও মুখোশের থেকে বেরিয়ে আসছে আসল চরিত্র ।দেশের অর্থনীতি কে চাঙ্গার পরিবর্তে বেসরকারী করনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে দেশের বিজেপি সরকার ।দেশের লাভজনক সংস্হার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ করে মুনাফা খোর ব্যবসায়ী দের হাতে মালিকানা তুলে দিতে চাইছেন।ফলে সাধারণ কর্মী, গ্রাহক ও অবসর প্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের সংগঠন গুলি পথে নামতে বাধ্য হচ্ছেন ।
এ বারের বাজেটে দুটি রাষ্টায়ও ব্যাঙ্ক কে বেচে দেওয়ার কথা ঘোষনা করেছেন দেশের অর্থ মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।এরি প্রথম দফা প্রতিবাদ হিসাবে এ মাসের 15 ও 16 তারিখে ব্যাঙ্কের ধর্ম ঘট ডাকলেন ব্যাঙ্কের কর্মী ইউনিয়ন ।আর এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে দফায় দফায় ধর্ম ঘট হবে বলে জানা গেছে।আর তাতেও থেমে থাকবে না এই আন্দোলন ।দরকার হলে টানা ব্যাঙ্কের কাজ বন্ধ রাখা হবে।
জানি ব্যাঙ্কের ধর্মঘট হলে গ্রাহকদের অসুবিধা হয়।কিন্তু মানুষের স্বার্থে ও তাঁদের আমানতের সুরক্ষার তাগিদেই এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই ব্যাঙ্কের কর্মী দের হাতে।ফলে দেশের অর্থ নিতীর হাল যাতে করে কয়েকজন মুনাফা খোরের হাতে না যায় তাঁর জন্য এটুকু ক্ষতি স্বীকার তো করতেই হবে।আরো যে সব রাষ্টায়ও সংস্হা কে বেচে দেওয়ার পরিকল্পনা গোপনে করা হচ্ছে তার ও প্রতিরোধ করা হবে বলে জানা গেছে।এক কথায় রাষ্টায়ও সংস্হা গুলিকে কিছুতেই বেসরকারিকরণের দিকে যাতে মোদী সরকার নিয়ে যেতে না পারেন তার জন্য প্রস্তুতি চলছে।দরকার হলে চাষীদের কায়দায় মাঠে নামতে চলেছেন রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের কর্মীরা।সঙ্গে সকল মানুষ কে সাথী করেই।
রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ রুখতে দিল্লির সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের পথেই হাঁটতে চলেছেন ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসার দের ইউনিয়ন গুলি।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের ( অধুনা পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক) ইউনিয়নের প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারি দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় সভা করছি।ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হলে সর্ব প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গ্রাহক ও ব্যাঙ্কের কর্মচারী বৃন্দ।সেই কারনে যে কোন মূল্যে এই জনবিরোধী নিতীর পরিবর্তন চাই।দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের ভূমিকা অনস্বীকার্য ।সবুজ বিপ্লবের ফসল এসেছিল এই রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের হাত ধরেই।তাই চাষীরাও এই আন্দোলন কে সমর্থন করছেন।
আগামী 15 ও 16 মার্চ রাষ্টায়ও ব্যাঙ্ক বিক্রির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন ।আর এবারের আন্দোলন হবে মাটি কামড়ে ।বেসরকারি করন থেকে কেন্দ্রীয় সরকার না সরলে কৃষকদের ধাঁচেই আন্দোলন করতে চান তারা।আর সমস্ত ব্যাঙ্কের দরজা বন্ধ হলে এই জনবিরোধী নিতী থেকে সরতে বাধ্য হবেন দেশের বিজেপি সরকার ।আর তা না হলে সমূহ বিপদ।সমাজতান্ত্রিক ধাঁচে সমাজ ব্যবস্থার মূল পিলারেই আঘাত করতে চাইছেন মোদী সরকার ।ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ তারই অঙ্গ।
এতদিন এই সরকার ব্যাঙ্কের 51 শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি 49 শতাংশ বেচে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলতেন।তাতে করে অন্তত নিতী নির্ধারণের ক্ষমতা থাকতো সরকারের হাতে।কিন্তু বর্তমানে গোটা ব্যাঙ্ক কেই বিক্রি করতে চাইছেন।ফলে অর্থনীতির চাকা থেমে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা তো থাকছেই।সাথে সাথে গ্রাহকদের স্বার্থ ও লঙ্ঘিত হবে।কর্মচারীদের কথা নয় বাদই দিলাম ।এছাড়া অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সংস্হার দিকেও নজর কেন্দ্রীয় সরকারের ।সেগুলি কেও বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছেন বর্তমান বিজেপি সরকার ।আসলে বেসরকারি সংস্থার হাত শক্ত করাটাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য ।
কিন্তু ব্যাঙ্কের কর্মচারী সংগঠনের ডাকা এই দুদিন ব্যাঙ্কের ধর্মঘট কেন্দ্রীয় সরকারের এই কাজকে সহজ হতে দেবে না একথা ধ্রুব সত্য ।অবশ্যই কর্মী ইউনিয়নের সঙ্গে তাঁরা বসবেন।একটি সন্মান জনক সূত্র খুঁজতে ও চাইবেন।কিন্তু এবারের ব্যাঙ্কের কর্মী দের নিজস্ব কোন পাওনা গন্ডার দাবি নেই।মূল দাবিই হলো বেসরকারিকরণ আটকানো।ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কাজটি সহজ হবে না।
ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হলে দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও বিঘ্নিত হবে।তাই আদা জল খেয়ে মাঠে নামা বলে জানান ব্যাঙ্কের সব কটি ইউনিয়নের ই সদস্য রা।
বেসরকারি করন আটকাতে ব্যাঙ্কের কর্মী রা আজ পথে।গ্রাহকদের ও উচিত সেই সব কর্মী দের পাশে দাঁড়িয়ে বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে গলা মেলানো।দিল্লির সীমান্তে দেশের চাষীরা।ব্যাঙ্কের কর্মচারীরাও তৈরি সেই একই ধাঁচে আন্দোলনে নামতে ।
15 ও 16 মার্চ ব্যাঙ্কের দরজা বন্ধ করে সেই বার্তাই দিতে চলেছেন সমগ্র দেশ জুড়ে ব্যাঙ্কের কর্মী বৃন্দ।
দেশের স্বার্থে এই আন্দোলন একথা বুঝতে হবে দেশ বাসী কেই।
নতুবা সমূহ বিপদ।রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের দরজা তে ঝুলে যাবে বেসরকারি বোর্ড ।
না না তাতো হতে দেওয়া যাবে না।কখনোই নয়।
দেশের অর্থ মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বাজেট পেশের সময় গড়গড় করে দুটি ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ বললেও, দেশের মানুষ তা মানতে নারাজ ।