#চলমান_সিঁড়ি_ও_সেই_মেয়েটা#ভৌতিক_গল্প#শম্পাশম্পি চক্রবর্তী @copyright protected কয়েক রাত ধরে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নটা আসছে প্রবালের। রাত বারোটা বা তার ও বেশি । কোনো একটা শুনশান মেট্রো স্টেশন । প্রবাল একাকী এসে বসেছে কোনো একটি সিটে। হ…
#চলমান_সিঁড়ি_ও_সেই_মেয়েটা
#ভৌতিক_গল্প
#শম্পাশম্পি চক্রবর্তী
@copyright protected
কয়েক রাত ধরে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নটা আসছে প্রবালের। রাত বারোটা বা তার ও বেশি । কোনো একটা শুনশান মেট্রো স্টেশন । প্রবাল একাকী এসে বসেছে কোনো একটি সিটে। হঠাত্ কার যেন শীতল স্পর্শ। চমকে উঠে তাকাতেই কেউ নেই। জন মানব শূন্য মেট্রো স্টেশনে সে একা। সে সিট ছেড়ে উঠে পড়ে। এগিয়ে যায় এসক্যালেটর বা চলমান সিঁড়ির সামনে। ঠিক তখনি নারী কন্ঠে সুতীব্র চিৎকার" বাঁচাও বাঁচাও"। প্রবাল চলমান সিঁড়িটার লোহার পাদানিতে পা দেয়। সিঁড়ি নামার বদলে ওপরে উঠতে থাকে। দ্রুত । এতো দ্রুত প্রবাল টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় । তার পা ঢুকে যায় চলমান সিঁড়ির মাঝে। খিলখিলিয়ে নারী কন্ঠস্বরের হাসি। কিছুতেই সে পা বার করতে পারেনা। অসহ্য যন্ত্রণা । তলিয়ে যাচ্ছে প্রবাল। শরীরটা ক্রমশ চলমান সিঁড়ির খাঁজে আটকে যাচ্ছে তার । নিজেকে ওই দৈত্যাকৃতি যন্ত্রটা থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আনার অদম্য চেষ্টা করে সে। পারে না সে কিছুতেই পারেনা। তার সর্বাঙ্গ ভিজে যাচ্ছে লাল তাজা রক্তে। গলাটা এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার করছে। সে চিৎকার করে বাঁচাও বাঁচাও। নারী কন্ঠস্বর পুনরায় হেসে ওঠে। তার মনোমোহিনী হাসি অনুরণনের ন্যায় আঘাত খেতে খেতে নাম না জানা মেট্রোস্টেশনটার চার দেয়ালে মিলিয়ে যায় এক সময় । সে দেখতে পায় রক্ত মাংসে সম্বলিত দলা পাকানো তার দেহটা ছিন্নভিন্ন হয়ে চলমান সিঁড়িটার সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে । সেই মেয়েটা। হাসছে শুধু হাসছে সিঁড়ির শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে । ধূসর তার দেহ। একরাশ কালোচুলে ঢাকা পড়েছে তার মুখমন্ডল। ঘুমটা অকস্মাত্ ভেঙে যেতেই প্রবাল বিছানায় উঠে বসে। কপালে হাত দিয়ে উপলব্ধি করে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। পৌষের শীতে কপালে ঘাম ? নিজেকে একটু ধাতস্থ করে। পাশে অপালা ঘুমোচ্ছে অঘোরে। ওর নিঃশ্বাসের মৃদু শব্দ শোনা যাচ্ছে শীতের নীরবতা ভেদ করে। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় প্রবাল। এগিয়ে যায় পশ্চিমের জানলাটার দিকে। আকাশের দিকে চোখ রাখে। নক্ষত্র গুলো একে অপরকে ফেলে এগিয়ে চলেছে দ্রুত । আধখানা চাঁদ মধ্য গগনে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রবাল।,,,,,,,,
---" কাল রাতেও স্বপ্ন টা দেখলাম অপালা। কয়েকটা দিন ধরে একই স্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙে যাচ্ছে । কেন রোজ রাতে এই স্বপ্ন আমার আসছে তার কোনো অর্থ ই আমার জানা নেই। ভয় লাগছে অপালা খুব ভয় লাগছে। স্বপ্ন টা যদি আমার জীবনে কোনো ভাবে সত্যি হয় ?" ব্রেকফাস্ট টেবিলের এক দিকে অপালা অপরদিকে প্রবাল। প্রবালের কথাগুলো হেসে উড়িয়ে দেবে তা আজ পারলো না অপালা যা দুদিন আগেও শুনে হেসে বলে উঠেছিল---" তোমার পেট গরম হয়েছে। কচি ডাবের জল খাও। পেট ঠান্ডা হবে। পেট গরমে অমন আজগুবি স্বপ্ন দেখছো।" আজ কিন্তু প্রবালের চোখমুখ অন্য কথা বলছে। প্রবালের কথাগুলি হেসে উড়িয়ে দেবার মতো মনে ও হচ্ছে না। তার চোখের কোলে কালি ফ্যাকাসে মুখ, ভয়ার্ত দুটি চোখের দৃষ্টি কেন যেন অপালার স্বাভাবিক লাগলো না। প্রবালের মুখের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে কিছু যেন ভাবলো অপালা। তারপর একটা ছোট নিঃশ্বাস ফেলে বলে উঠলো--"প্রবাল আমার সাথে একজনের কাছে যাবে। তিনি একজন কাপালিক। স্বপ্ন এবং তার প্রভাব সম্পর্কে বিশদে তোমাকে বলে দেবে আশা রাখি।কেন এই স্বপ্ন তুমি দেখছ? কারণ কী এ সবের উত্তর হয়তো তাঁর জানা।" প্রবাল রাজী হোল । আর রাজী না হওয়ায় কোনো কারণও ছিলো না। দীর্ঘ এক মাসের ওপর সময় ধরে এই একই স্বপ্ন তার মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যে করেই হোক এই স্বপ্নের হাত থেকে তার মুক্তি চাই। তা যদি কোনো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হয় হোক বা কোনো সাধু সন্ন্যাসীর দ্বারাই হোক। অপালা ও প্রবালের এমন অবস্থার মুক্তি চাইছিল । কারণ তার মন যেন বলছিল প্রবাল আসতে আসতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আর এরকম যদি চলতেই থাকে হয়তো প্রবাল উন্মাদ ও হয়ে যেতে পারে। অগত্যা সেই দিনই সেই ত্রিকালদর্শী কাপালিক শচীদানন্দ বাবার কাছে মহাকাল শ্মশানে প্রবাল কে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো অপালা।,,,,,,,
শুনশান মহাকাল শ্মশান চত্তরের কাছে যখন অপালা গাড়ি টা থামালো তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গেছে। কাপালিক শচীদানন্দ এই শ্মশানেই থাকেন তা অপালার অবগত আছে অনেক বছর আগে থেকেই। কারণ পারিবারিক অনেক সমস্যা মেটাতে মা ও বাবার সাথে শচীদানন্দ বাবার কাছে এসেছে সে। তিনি কতো সহজে তাদের পারিবারিক সমস্যার সমাধান করেও দিয়েছে তা নিজে চোখে দেখেওছে। তার একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ তার রাঙা পিসি যে আত্মহত্যা করেছিল কয়েক বছর আগে বসন্ত পূর্ণিমা রাতে। কিন্তু কী কারণে সে আত্মহত্যা করেছিল তা ধোঁয়াশা ছিলো। সকলেই যখন তার মৃত্যু নিয়ে নানা দ্বন্দ্বের মধ্যে কাটাচ্ছিল ঠিক তখন কে যেন পরামর্শ দিয়েছিল শচীদানন্দ বাবার কাছে যেতে ও জানতে বিধবা রাঙা পিসিমার মৃত্যুর কারণ। বাবা, মা,ও ঠাকুমার সাথে অপালা এই শ্মশানে এসে ছিল সেই প্রথম। এবং শচীদানন্দ বাবার কাছে শুনেছিল রাঙা পিসিমার আত্মহত্যার গোপন রহস্য । সব শুনে স্তম্ভিত হয়েছিল আঠারো বছরের অপালা সহ তার বাবা,মা ও ঠাকুমা।। রাঙা পিসিমা আসলে ধর্ষিত হয়েছিল এবং তা বাড়ির বিহারী চাকর রতনলালের কাছে। আর তার পরিণতি রাঙাপিসিমার আত্মহত্যা। সবশুনে বাড়ির সকল সদস্য যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রতনলালের ওপর রতনলাল বাধ্য হয়ে স্বীকার করেছিল সত্য। বিধবা রাঙা পিসিমার অপরূপ সৌন্দর্য না কী রতনলাল কে আকৃষ্ট করেছিল সেদিন থেকে যেদিন রাঙা পিসিমা শ্বশুর ঘর থেকে চিরদিনের জন্য বাপের বাড়িতে চলে আসে। রতনলালের একতলা ঘরের জানলার মুখোমুখি ছিল রাঙা পিসিমার ওপরের ঘর। জানলা পথে রতনলাল রোজ ই দেখতো আলুথালু বেশে রাঙা পিসিমাকে । এতো রূপ কেবল হেলাফেলায় যাবে রতনলালের বত্রিশ বছরের যৌবণ যেন তা মানতে চাইলো না। কিন্তু রাঙা পিসিমা কে সে একটা সামান্য মানের চাকর হয়ে কী করে পাবে আর রাঙা পিসিমা তাকে ধরা দেবেই বা কেন তাই রাঙা পিসিমা কে অন্যপথে তাকে পেতে হবে তার জন্য যে করেই হোক বুদ্ধিকরে একটা পথ বার করতে হবে। রাঙা পিসিমার যৌবণ ক্রমশ তাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে দিতে থাকে তখন সে গোপনে শুধু সুযোগ খুঁজতে থাকে কীভাবে রাঙা পিসিমা কে নিজের করে পাবে । আর তারজন্য যে করেই হোক একটা সুযোগ তার চাই। আর তাতেই লালসা নিবৃত্ত হবে তার। এবং সুযোগ টা এসেই গিয়েছিল বসন্ত উৎসবের রাতে। সন্ধ্যা হতেই পরিবারের সকলেই যখন রাধাগোবিন্দ মন্দিরে গিয়েছিল । একাকী রাঙা পিসিমা তার নিজ ঘরে। দরজা ভেজানোই ছিলো ঘরে ঢুকে এসেছিল শ্বাপদসম রতনলাল। রাঙা পিসিমা চরম বাধা দেওয়া সত্ত্বেও সর্বনাশ টা করেই বেরিয়ে গিয়েছিল সরীসৃপের ন্যায় রতনলাল । আর রাঙা পিসিমা লজ্জা ঢাকতে বেছে নিয়েছিল আত্মহননের পথ। অবশ্য সে সব অনেক বছর আগের কথা। ভাবলে আজও শিহরিত হতে হয় অপালা কে,,,,,,,
শ্মশানের দক্ষিণ প্রান্তের বুড়ো বট গাছের তলায় বসে শচীদানন্দ বাবা। স্ট্রিট লাইটের আলো আধো আলো আধো ছায়াময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে স্থানটির। পায়ে পায়ে প্রবাল কে নিয়ে অপালা খুব কাছে এগিয়ে গেল শচীদানন্দের। বসলো দুজনে শচীদানন্দের পায়ের তলায়। শচীদানন্দ তাকালেন তাদের দিকে। অপালাকে দেখে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো ওনার ঠোঁটের প্রান্তে । সর্বোজ্ঞ শচীদানন্দ শান্ত কন্ঠস্বরে বলে উঠলেন---" চলমান সিঁড়ি । মনে পড়ে প্রবাল মাত্র মাস খানেক আগের একটি ঘটনা। ভুলে যাবার মতো তো সেদিনের ঘটনা ছিলো না যা এখন ভুলে যেতে পারো। বলো প্রবাল ঘটনাটা বলো। আর ঘটনাটা বললেই তোমার মুক্তি নয়তো মৃত্যুই তোমার শেষ শাস্তি সে নির্বাচন করবে। আর মৃত্যু তোমার স্বপ্নের মধ্যে থাকাকালীনই ঘটবে আমি, বা কোনো ডাক্তার, কবিরাজ কেউ তোমাকে রক্ষা করতে পারবে না। কিন্তু আজ যদি ঘটনাটা সবিস্তারে বলো অপালার ,আমার কাছে তাহলে তোমাকে সে আর বিরক্ত করবে না। " প্রবাল কিছুক্ষণ শচীদানন্দের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর বলতে শুরু করলো ---" মাস খানেক আগের ঘটনা। সেদিন অফিস থেকে বের হতে একটু দেরী ই হয়ে গিয়েছিল প্রবালের । রাত বেশ। বাস বা ট্যাক্সি কিছু না পেয়ে অগত্যা মেট্রো ধরার জন্য উপস্থিত হোল প্রবাল মেট্রো স্টেশনে। যথারীতি টিকিট কেটে চলমান সিঁড়িটার দিকে দ্রুত পা বাড়াতেই চোখে পড়ল এক তরুণীর দিকে। তরুণী বিবাহিতা। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল চলমান সিঁড়িতে চড়াতে অভ্যস্ত নয়। সিঁড়িতে ওঠার সে বারবার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। প্রবাল বিরক্ত হোল। তরুণীর পাশ কাটিয়ে সিঁড়ির দু তিনটে ধাপ ওপরে উঠে এগিয়ে যেতে গিয়ে পেছনে তাকাতেই সে চমকে গেল। তরুণীর শাড়ির আঁচল কোনো ভাবে চলমান সিঁড়িতে আটকে গেছে। তরুণী আপ্রাণ চেষ্টা করছে তা টেনে বার করে আনতে। চিৎকার করছে। তার চিৎকার শোনার মতো কেউ ধারেকাছে তখন নেই একমাত্র প্রবাল ছাড়া । কিন্তু প্রবাল এগোবার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করলো না। কে ঝক্কি ঝামেলায় যায় । গেঁয়ো ভূত কী করতে আসে মেট্রোয় যাতায়াত করতে তার ওপর সাধারণ সিঁড়ি ব্যবহার না করে চলমান সিঁড়ি ব্যবহার করার দরকার কী পড়ে? তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে প্রবাল উঠে গেল সিঁড়ির শেষ প্রান্তে। একবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখেছিল তরুণীটিকে। শাড়ি জড়িয়ে রক্তাক্ত শরীরে চলমান সিঁড়ির নীচে পড়ে আছে তরুণী । তার ডান হাতটা সে অতিকষ্টে তুলে প্রবালের থেকে সাহায্য ভিক্ষা করছে। তার ঠোঁট দুটো থরথর করে কাঁপছে । চোখদুটো থেকে বেরিয়ে আসছে অবিশ্রান্ত ধারায় নোনা জল । প্রবাল মুহুর্ত খানেক দেখে আর দাঁড়ায় নি।
পড়ের দিন পেপারে ও টিভি নিউজে শুনেছিল --" রাতের শুনশান মেট্রো স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। চলমান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে কোনোভাবে তরুণীর শাড়ি আটকে এই বিপদ বলেই অনুমান করা হচ্ছে । ঘটনাস্থলে কেউ এমন ছিলো না যে তাকে উদ্ধার করে। দীর্ঘ সময় পড়ে থেকে তার মৃত্যু হয়। "প্রবাল এক নিশ্বাসে কথাগুলি বলে থামতেই শচীদানন্দ পুনরায় প্রশান্তির হাসি হেসে বললেন--" প্রবাল তার মৃত্যুকালীন যন্ত্রণাটুকুই সে তোমাকে রোজ রাতে বোঝাতে আসে। কী অসহনীয় যন্ত্রণা সে ভোগ করেছিল তা বোঝাতেই তোমার কাছে তার আসা। যাতে সেই যন্ত্রণা তুমি নিজে উপলব্ধি করো। কারণ পারলে তুমি ই পারতে ওকে মৃত্যু মুখ থেকে বাঁচাতে সেদিন। কিন্তু তা তুমি করো নি। করো নি কারণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও হুঁশ টুকুর অভাব তোমার ছিল। আর এই হুঁশের অভাবই একটা তরুণীর মৃত্যু ডেকে এনেছিলো সেদিন। যাইহোক ঘটনাটা প্রকাশ করেছ। আর আশা করছি তোমার মধ্যে মনুষ্যত্ব ও জাগ্রত হবে এরপর থেকে। ভবিষ্যতে কেউ বিপদে পড়লে এমনভাবে পাশ কাটিয়ে যাবে না আশা করবো। " প্রবাল আলতো করে মাথা নেড়ে ছিল শচীদানন্দের কথাগুলির প্রত্যুত্তরে।
না এরপর আর প্রবাল ওই ভয়ঙ্কর স্বপ্নের সম্মুখীন হয় নি। এখন সে যেখানেই দেখে কোনো মানুষ বিপদে পড়েছে সে পুরুষ নারী নির্বিশেষে তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা ও করে।
#সমাপ্ত
( সম্পূর্ণ কাল্পনিক । কোনো সত্যতা নেই। আমি অন্ধবিশ্বাসে বিশ্বাসী নই। গল্পের খাতিরে শচীদানন্দের চরিত্র আনয়ন।)