Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন#বিভাগ_গল্প#শিরোনাম_দুই_মাতালের_গপ্পো#কলমে_মৃন্ময়_সমাদ্দার#তারিখ_১৬/০৩/২০২১
মনে করে নেওয়া যাক একটি রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনের একপাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। যেই রাস্তা দিয়ে লোকজন যাতায়াত করছে। সময় তখন মোটামুটি …

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন

#বিভাগ_গল্প

#শিরোনাম_দুই_মাতালের_গপ্পো

#কলমে_মৃন্ময়_সমাদ্দার

#তারিখ_১৬/০৩/২০২১


মনে করে নেওয়া যাক একটি রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনের একপাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। যেই রাস্তা দিয়ে লোকজন যাতায়াত করছে। সময় তখন মোটামুটি সন্ধ্যে সাতটা সাড়ে সাতটা হবে।একটু পরপর ট্রেনের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। স্টেশনের অপরদিকে একটি পুকুর পাড়ে দুজন বসে রয়েছে। তারা গল্প করছে। আর একটু পর পর কি যেন একটা খাচ্ছে গ্লাসে করে। খুব ভালোভাবে  লক্ষ্য করে দেখা গেল তারা মদ্যপান করছে আর জড়ানো গলায় কথা বলছে। তাদের কথাবার্তারই একটু ঝলক তুলে ধরবার চেষ্টা করলাম। 

প্রথম      এই শোন আমরা এখানে প্রতিদিনই তো মাল খাই। 

দ্বিতীয়    হ্যাঁ, রে ভাই। এই জায়গাটা আমাদের জন্য। 

প্রথম       ভাই মাথাটা কেমন যেন করছে। 

দ্বিতীয়     কেনরে আজ সারাদিন কিছু খাস নি। মনে হয়,না, খাবার জন্যই মাথাটা কেমন করছে তোর। 

প্রথম    না রে ঘরে কোন রান্নাই হয়নি কারন বাজার করতে পারিনি পয়সার অভাবে। মালের জন্য পয়সা তো রাখতেই হতো। 

দ্বিতীয়    বাহ তোকে শাবাশী দিতেই হয়। ভাত না খেয়ে মালের জন্য পয়সা রাখিস। 

প্রথম     ভাই এদিকটায় কেন কোন লোকজন আসে না?

দ্বিতীয়    আরে বুঝতে পারছিস না সবাই জানে এখানে আমরা আছি। 

প্রথম     হ্যাঁরে ভাই ঠিক বলেছিস। সবাই এটা জানে। 

       এমন সময় ঝিঁঝিঁপোকা ডেকে উঠলো। 

প্রথম     ভাই শুনতে পারছিস আমাদের বোতল গুলো ঠিক করে রাখ নাহলে কেউ সিঁদ কেটে নিয়ে যাবে। শুনতে পারছিস না সিঁদ কাটার আওয়াজ। 

দ্বিতীয়    হ্যাঁ, ঠিক বলেছিস। আমি সামলে রেখেছি বোতলগুলো। 

       অন্ধকার আরো গাঢ় হলে পরে জোনাকি পোকা উড়তে শুরু করল। 

প্রথম    দেখ তো ভাই,আমার বউ মনে হয় হারিকেন নিয়ে আমাকে খুঁজতে এসেছে। আমাকে লুকিয়ে রাখ, না হলে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে।আর মাল খাওয়া হবে না। 

দ্বিতীয়   নারে ভাই,তোর বউ না ওটা তো আমার বউ এসেছে। ভাই আমাকে বাঁচা। না হলে আমাকে মারতে মারতে বাড়ি নিয়ে যাবে। আমাকে রক্ষা কর ভাই। আমি চলে গেলে তোকে কে সঙ্গ দেবে?

প্রথম    না, না তুই কোথায় যাবি? তোকে কোথাও যেতে দেব না। তুই আমার সাথে এখন মাল খাবি আরে ভাই আমাদের বউ নারে মশাগুলো আমাদের না পেয়ে টর্চ নিয়ে খুঁজতে এসেছে।

         মদ্যপান করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেছে। দুজনেই টলছে। দুজনেই উঠে দাঁড়াল বটে কিন্তু সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না কেউই। একজন টাল সামলাতে না পারলে অন্যজন টলমল পায়ে সামলাচ্ছে। দুজনেই গলা জড়াজড়ি করে একবার এগোবার চেষ্টা করতেই একজন   সাথেসাথেই ভূপতিত। অন্যজনও টাল সামলাতে না পেরে তার ওপর পড়ে গেল। 

        এদিকে আকাশে কখন মেঘ করেছে ওরা জানেনা। মেঘ ডাকছে আর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।ওরা তখনও নিজেদের দুনিয়াতেই পড়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ চমকানো দেখে হঠাৎ প্রথমজন সোজা উঠে দাঁড়িয়ে নায়কোচিত ঢঙের পোজ দিয়ে বলে উঠলো       আমাদের ছবি তুলছিস এই নে আমি দাঁড়িয়ে গেছি। কত ছবি তুলবি তোল।

এই শুনে দ্বিতীয়জনও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গলা জড়াজড়ি করে পোজ দিল। বিদ্যুতের চমকে ওরা ছবি তুলতে লাগলো। 

           এমন সময় কোথাও কড়কড় করে বাজ পড়ল।

          এই শুনে দ্বিতীয়জন বলে উঠলো   বাবা বোকোনা,আমি বাড়ি ফিরছি। ভাই আমি আসছি রে,বাবা খুব বকাবকি করছে। 

প্রথম      তোর বাবা ওপর থেকে বকছে।আর আমার বাবাও তাই। চল ভাই বাড়ি চল। আর বাইরে থেকে লাভ নেই। সবাই বকাবকি করছে। 

            অবশেষে দুজনেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল টলোমলো পায়ে।