Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

খেলা হবে,জাতপাতের সঙ্গে উন্নয়নের,নেতৃত্ব সেই মমতার হাতেই

তরুন চট্টোপাধ্যায়
সেদিন রাস্তা দিয়ে হাটছি।হঠাৎ কানে এলো কজন মহিলার কন্ঠস্বর ।খেলা হবে।কি খেলা, কিসের খেলা, কেন খেলা।না সে সব নিয়ে ওনারা কথা বলছেন না।শুধু নিজেদের মধ্যেই বলে চলেছেন খেলা হবে দেখিস।ঠিক খেলা হবে।খেলা হবে বাংলা জুড়েই।আ…


তরুন চট্টোপাধ্যায়


সেদিন রাস্তা দিয়ে হাটছি।হঠাৎ কানে এলো কজন মহিলার কন্ঠস্বর ।খেলা হবে।কি খেলা, কিসের খেলা, কেন খেলা।না সে সব নিয়ে ওনারা কথা বলছেন না।শুধু নিজেদের মধ্যেই বলে চলেছেন খেলা হবে দেখিস।ঠিক খেলা হবে।

খেলা হবে বাংলা জুড়েই।আর এই শ্লোগান এখন দেওয়ালে দেওয়ালে ।বিশেষ করে তৃনমূল দলের দেওয়াল লিখনে এই কথাটি বেশি করে চোখে পড়ছে।তবে বিরোধী বিজেপি দল ও বসে নেই।মিছিল মিটিং থেকে আওয়াজ তুলছেন খেলা হবে।খেলবেন তো।
আসলে খেলা হবে ,যে যাই বলুন ,ভোটের মাঠে খেলে জনগন বা ভোটারেরা।সেই জনগন, আসলে যারা খেলাটি খেলবেন তাঁরা কিন্তু চুপচাপ ।ভোটের দিন ই খেলবেন।
এবারের বঙ্গ ভোটের ছবি কিন্তু একেবারে আলাদা ।তাই নেতারা যে খুব একটা খেলতে পারবেন বলে মনে হয় না।কারন কেন্দ্রীয় বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখবেন নেতাদের চালচলনে।একটু এদিক ওদিক হলেই দৌড় দেবেন সেই বুথে।তাই জোর জবরদস্তি খুব একটা চলবে বলে মনে হয় না।তবে ভিতরে ভিতরে যে সব দল খেলবেন তা কিন্তু সত্যি ।আর এই সত্যি টিকে পাথেয় করে চলছে খেলা হবে স্লোগান টি।
এবারের বঙ্গের ভোট কে ফুটবলের দল বদল বলা যেতেই পারে।শুভেন্দু অধিকারী সদ্য তৃনমূল দলের মন্ত্রীত্ব ছেড়ে বিজেপি দলে।রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও সেই পথে।আয়ারাম গয়ারাম বলুন আর দল বদলু বলুন।তাঁরা যে অন্য দলের হয়ে খেলতে নামবেন সেকথা তো পরিস্কার ।
শুভেন্দু অধিকারী তো বিভিন্ন সভাতেই বলছেন,মাঠ এক, শুধু জার্সি টি বদল হয়েছে।ঘাসফুলের জায়গায় পদ্ম ফুল।দিল্লি কে ডবল ইঞ্জিন উপহার দিতে তিনিতো এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ।
রাজীব বন্দোপাধ্যায় ও বলছেন ,কেন্দ্র ও রাজ্যে একদলের সরকার দরকার ।নতুবা উন্নয়নের সম্ভাবনা নেই।
ধরে নিলাম কেন্দ্র ও রাজ্যে এক দলের সরকার এলো।তাহলেই কি উন্নয়নের জোয়ার আসবে।অভিজ্ঞতা বলছে যে সব রাজ্যে বিজেপি সরকার আছে সেখানে কি উন্নয়নের বন্যা বহে গেছে।নিশ্চয় নয়।বরং উল্টো টাই ঘটেছে।কেন্দ্রের জনবিরোধী নিতীর বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ থেকেছে।ফলে রাজ্যের উন্নয়নের গতি স্তিমিত হয়েছে।
খেলা তো হবেই।সেটি ফুটবল বা ক্রিকেট যাই হোক না কেন।আটদফাতে নির্বাচন ।এক এক দফা শেষ হবে।স্টং রুমে আটকে থাকবে ইভিএমের ভবিষ্যত ।2  রা মে সব ইভিএমের ফলাফল যোগ করে আসবে ফলাফল ।আর ততদিন অপেক্ষা তো করতেই হবে।
খেলা যে হবে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন অনুব্রত মন্ডল ও।জল বাতাসা, চড়াম চড়াম ছেড়ে এখন তিনিও বলছেন দেখুন না খেলা হবে।
বিজেপি এই বঙ্গের ভোটের নতুন দল তাতো বলাই চলে।মমতার তৃনমূল দু বার মাঠ কাঁপিয়ে তৃতীয় বারের জন্য মাঠে নামছেন।তবে তৃনমূল থেকে দলছাড়া কিছু হেভিওয়েট এখন বিজেপির জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন।ফলে তৃনমূল ছাড়া নেতাদের সঙ্গে তৃনমূল দল কামড়ে পড়ে থাকা নেতাদের খেলা তো হতেই হবে।
তবে খেলার মাঠে প্লেয়ারদের সঙ্গে অধিনায়ক ও থাকেন।কোচ অবশ্য থাকেন মাঠের বাইরে।তৃনমূল দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় ই অধিনায়ক ।দল জয়ী হলে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন।দশ বছর রাজ্য চালানোর অভিজ্ঞতা তাঁর ঝুলিতে।উন্নয়নের নানা খতিয়ান ইতিমধ্যেই রাজ্য বাসী দেখেছেন।
ঠিক এই অবস্থায় বিজেপি দল কিন্তু অধিনায়কহীন ভাবেই মাঠে নামবেন।মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোন মুখই নেই বিজেপি দলে।ফলে মানুষ ভোট দিতে গিয়ে ভাববেন ,কি করবেন।সেদিক থেকে খেলার মাঠে পিছিয়ে বিজেপি।তাঁদের বলতে শোনা যাচ্ছে নরেন্দ্র দামোদর মোদীকে দেখিয়েই তাঁরা খেলতে চান।কিন্তু মোদী তো আর প্রধানমন্ত্রী ছেড়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হতে আসবেন না।ফলে মাঠে নামতে হবে অধিনায়ক ছাড়া ।
এদিকে বাম,কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকীর জোটের ও সেই অবস্থা ।কংগ্রেস বলছেন জোট জিতলে অধীর চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী ।বামফ্রন্ট তা মানতে নারাজ ।তাঁদের ঝুলিতে রয়েছে অন্য নাম।আবার সেকুলার ফ্রন্টের এই জোটে চলে আসা পরিস্থিতি কে আরো ঘোরালো করে তুলেছে।আব্বাস সিদ্দিকী না বলে বসেন দল জিতলে তিনিওতো মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার ।কারন দাবি আদায় করতেই তাঁর নাকি ধর্মের মাঠ ছেড়ে রাজনিতীর ময়দানে নামা।ফলে তৃতীয় শক্তি ও মাঠে নামবেন অধিনায়ক হীন ভাবেই।
এতদিন বিজেপি দল বাংলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী খুঁজে গেছেন হন্যে হয়ে।সৌরভ গাঙ্গুলির নাম ও এসে গিসলো সেই লিস্টে।কিন্তু তা হয়নি।এমনকি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ খুঁজে খুঁজে শেষমেষ তৃনমূলের হেভিওয়েট দের দিকেই হাত বাড়িয়েছেন।
দিলীপ ঘোষ আর এস এস করা ব্যাক্তি।কিন্তু তাঁর আলটপকা নানা মন্তব্য যে বাংলার জনগন মানতে নারাজ ।তাই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে রাখতে রাজি নয় অনেক বিজেপি নেতাই।বাংলার চানক্য মুকুল রায়ের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের সংঘাত অতি পুরানো ।তবে কি শুভেন্দু অধিকারী ।
শুভেন্দু অবশ্য সব কটি সভাতেই বলছেন লাল মাটির দিলীপ ঘোষ আর বালু মাটির শুভেন্দু এক হয়েছেন।তবে সেই দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু কে মানবেন না।ফলে ফলাফল প্রকাশ ও জয় নিজেদের দিকে আনলেও মুখ্যমন্ত্রী পদ কার তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে ।ফলে বিজেপির অধিনায়ক আছ ও অধরা।
এদিকে তৃনমূল দল ,দল বদলের কাঁটা থেকে আস্তে আস্তে সরে আসছেন।মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব কে মাথায় রেখে ভোটের ময়দানে ।মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে যে দল কে এক সেকেন্ড ও ভাবতে হবে না তা সত্য ।ফলে খেলার মাঠে সেই তো এগিয়ে ।
খেলা হবে।বঙ্গের ভোটের সেই খেলা।কদিন আগে সিপিআই এমের কর্মী রা রাজ্যের থানায় থানায় গিয়ে ওসি দের হাতে ফুটবল ধরিয়ে বলে এসেছেন খেলা হবার কথা।
খেলা তো হচ্ছে ।রেফারি নির্বাচন কমিশন।মাঠ সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে।শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মুখ ও দেখা যাচ্ছে। 
তবে খেলা যাই হোক।ফলাফল যাই হোক।একমাত্র খেলার ময়দানে অধিনায়কত্ব বড় কথা।আর এই অধিনায়ক বাংলার ঘরের মেয়ে ।আর তিনি মমতা বন্দোপাধ্যায় ।
খেলা হবে।নিশ্চয় খেলা হবে।
জাতপাতের সঙ্গে উন্নয়নের ।মমতার সঙ্গে বিজেপির ।