ব্যাঙ্ক নেবে গো ব্যাঙ্ক।ঝুড়িতে সরকারী ব্যাঙ্কের সাইন বোর্ড নিয়ে ব্যাঙ্ক বেচার পথে হাঁটছেন দেশের কেন্দ্রীয় সরকার । তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।
ব্যাঙ্ক নেবে গো।ঝুড়িতে রাষ্টীয় ব্যাঙ্কের সাইনবোর্ড নিয়ে পথে পথে ফেরি করতে বেরিয়ে পড়েছেন …
ব্যাঙ্ক নেবে গো ব্যাঙ্ক।ঝুড়িতে সরকারী ব্যাঙ্কের সাইন বোর্ড নিয়ে ব্যাঙ্ক বেচার পথে হাঁটছেন দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ।
তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।
ব্যাঙ্ক নেবে গো।ঝুড়িতে রাষ্টীয় ব্যাঙ্কের সাইনবোর্ড নিয়ে পথে পথে ফেরি করতে বেরিয়ে পড়েছেন দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ।আরো ভালো করে বলতে গেলে বলতে হয় বিজেপির সরকার ।লাভজনক সংস্হা বেসরকারী মালিকদের হাতে তুলে দিয়ে কি লাভ ক্ষতি সে হিসাব না করেও বলতে পারি রাষ্টায়ও সংস্হা গুলি বেচে দেওয়ার পিছনে গভীর এক চক্রান্ত নিত্য খেলে বেড়াচ্ছে ।সরকারি সংস্থার কর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে চঞ্চলতা থাকলেও তাঁরা হাতের পুতুল।নাচায় পুতুল যথা দক্ষ বাজিকরে।
শুধু কর্মীরাই বা কেন গ্রাহকদের মধ্যে ও তো এই বেসরকারিকরণ নিয়ে হতাশার অন্ত নেই।আজও সরকারী ব্যাঙ্কের কাজ কর্ম নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও সুরক্ষার প্রশ্নে সরকারী ব্যাঙ্কের জায়গা সাধারনের মনে আজও এক নম্বরেই।অথচ দেশের সরকার চাইছেন এগুলোর বেসরকারিকরণ ।আর বিরোধীরা একেই বলছেন বিজেপি সরকারের সিন্ডিকেট রাজ।ব্যাঙ্ক বেচে বেসরকারি মালিকদের থেকে লভ্যাংশ অর্জন।তাই বারবার অর্থনিতীর প্রশ্নে নানা প্রশ্ন চিহ্ন ধরা পড়ছে।সরকারের এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যাঙ্কের কর্মী রাও মাঠে নামছেন।ধর্না ধর্মঘট ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।তবুও বিরাম নেই ব্যাঙ্ক বিক্রির অশুভ চক্রান্ত ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক,নীতি আয়োগ ও অর্থ মন্ত্রক ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার বসেছেন।শীর্ষ কর্তারা মিটিং ও করেছেন।কি ধরনের ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ব্যাঙ্ক গুলিকে ।এখনো পর্যন্ত পাঁচটি রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণেরের প্রস্তাব রয়েছে নীতি আয়োগের।আর তার মধ্যে রয়েছে ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ও সেন্টাল ব্যাঙ্ক ।ধাপে ধাপে এই কাজগুলো করা হবে বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র ও ইন্ডিয়ান ওভারসিজ নিয়ে কথা এগিয়ে গেছে।
2021/22 অর্থ বর্ষে বাজেট পেশের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন আগেই জানিয়ে ছিলেন দেশের দুটি রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ করা হবে।10 টি রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের সংযুক্তি করনের মাধ্যমে চারটি ব্যাঙ্কের সাইনবোর্ড রাখা হবে।
নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের কথা মতো এপ্রিল মাস থেকে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে আমূল পরিবর্তন করা হবে।
কেন্দ্রীয় সরকার চাইছেন সংযুক্তি করনের মধ্যে দিয়ে লোকসানে চলা ব্যাঙ্কের হাল ফেরাতে।কিন্তু বাস্তবে তা কি সম্ভব ।আসলে চারটি ব্যাঙ্কের দরজা একটি হলে সেখানে ব্যাঙ্কের পরিধি বড় হবে।মূলধন ও বাড়বে।কিন্তু লোকসান বন্ধ হবে কি।নিন্দুকেরা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন সংযুক্তিকরণ হবার পর ব্যাঙ্ক গুলিকে বিক্রি করার সুবিধার জন্যই বিজেপি সরকার এই পথে হাঁটতে চাইছেন।কমতে কমতে এখন রাষ্টায়ও ব্যাঙ্কের সংখ্যা নেমে এসেছে বারোটিতে।
কিন্তু যে প্রশ্নটি বার বার উঠে আসছে তা হলো ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হলে কারা লাভবান হবেন।আর এর সুদূরপ্রসারী ফল কি হবে।
বেসরকারি ব্যাংকের কাজকর্ম এতদিন তো মানুষ দেখেছেন।লাভ ই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য ।
প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ করে দেশে সবুজ বিপ্লবের মতো অর্থ নৈতিক বুনিয়াদ গড়তে সমর্থ হয়েছিলেন।লাখ লাখ যুবকের চোখের সামনে কর্ম সংস্হানের সুযোগ করে দিতে পেরেছিলেন।সরকারি সমস্ত কাজকর্ম কে ব্যাঙ্কের ছাতার নীচে আনতে সমর্থ ও হয়েছিলেন।আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে আশার দীপ জ্বেলে ছিলেন।এক কথায় ব্যাঙ্কের জাতীয়করণ ছিল সেই সময় মহান পদক্ষেপ।আর তারি ফলশ্রুতি হলো দেশের মাথাপিছু গড় আয় বৃদ্ধি ।মানুষের হাতে টাকার যোগান ।
গ্রামে গঞ্জে সরকারী ব্যাঙ্কের শাখা প্রশাখা গড়ে উঠেছিল সেই অঞ্চলের আর্থিক বুনিয়াদ গড়তেই।লাভের প্রশ্ন ছিল গৌন।গ্রামের কৃষিঋন থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্পে আগ্রহ দেখিয়েছিল সরকারী ব্যাঙ্ক ।
বেসরকারী ব্যাঙ্কের মালিকেরা কখনোই গ্রাম গঞ্জে শাখা খুলতে আসেন নি।আজও আসবেন না।লাভজনক ব্যবসা না পেলে তাঁরা আসবেই বা কেন।আর সেই কারনেই তো ব্যাঙ্কের রাষ্ট্রীয় করন।
সমাজতান্ত্রিক ধাঁচে সমাজ ব্যবস্থার মূল কথাই হলো অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় সংস্হা গুলি রাষ্টের হাতেই থাকবে।দেশের অর্থনীতির চাকা কে সচল রাখে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ।আর সেই চাকা ঘোরানোর ভার যদি যায় বেসরকারি হাতে তাহলে তো বিপদ দুয়ারেই।
যদিও জানা গেছে ,পি এন বি ,কানাডা ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্ক অফ বরোদার বেসরকারিকরণের কোন খবর নেই।তবুও তো শিয়রে সমন।আজ না হলেও কাল তা যে হবে না একথা কে বলতে পারে।
বেসরকারি ব্যাংকে টাকা রেখে গ্রাহক যে কতটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন তা নিয়ে ও সংশয় রহেই যায় ।
ব্যাঙ্ক ফেল হলে সে দায় যে গ্রাহকের ও এই ব্যাপারে ইতিমধ্যেই বিল আসতে চলেছে।জমা টাকার একটি অংশ শুধু সরকার দেবে।কিন্তু বাকি টাকা তো সেই ভাগ্যের ওপরেই তো ঝুলে থাকছে।
ফলে মরন তো গ্রাহক দেরই।
কিন্তু এত কিছুর পরেও বিজেপির সরকার সেই ঝুড়িতে ব্যাঙ্কের সাইন বোর্ড নিয়ে ক্রেতা খুঁজতেই ব্যস্ত ।বেসরকারি করন যদি হবে তবে কেন সরকারী করন করা হয়েছিল সে প্রশ্ন ও থাকছে।
সরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী রা ইতিমধ্যেই আওয়াজ তুলেছেন ব্যতিক্রমী আন্দোলনের ।দরকার পড়লে পথে নামবেন গ্রাহকদের সঙ্গী করেই।
তবুও বাতাসে ভাসছে ব্যাঙ্ক নেবে গো ।ব্যাঙ্ক ।
তরুন চট্টোপাধ্যায় ।