তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা । সাম্প্রদায়িক অশান্তি তে মুসলিমদের দায় কতখানি ।কেউ বলছেন একশো ভাগ।আবার কেউ বলছেন তা কেন হবে।অশান্তি তো কোন এক সম্প্রদায়ের দায় নয়।আর সেটিই সত্যি ।কারন অশান্তি তৈরি হয় নানা পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে ।তাই এ বিচা…
তরুন চট্টোপাধ্যায় ।কলকাতা ।
সাম্প্রদায়িক অশান্তি তে মুসলিমদের দায় কতখানি ।কেউ বলছেন একশো ভাগ।আবার কেউ বলছেন তা কেন হবে।অশান্তি তো কোন এক সম্প্রদায়ের দায় নয়।আর সেটিই সত্যি ।কারন অশান্তি তৈরি হয় নানা পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে ।তাই এ বিচার করার আগে সামগ্রিক ভাবে সমাজের নিখুত চরিত্র টিকে ই তুলে ধরতে হবে।চুলচেরা বিশ্লেষন করাটি ও প্রয়োজন ।একটি প্রসঙ্গে চোখ রাখা যাক।গত তিন বছরে উওর প্রদেশের জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় 120 টি গ্রেফতারের মধ্যে 94 টিকে এলাহাবাদ হাই কোর্ট কেবল নাকচ ই করেন নি উল্টে প্রশাসকদের তুলোধোনা করে ছেড়ে ছেন।বহূ গ্রেফতারের পিছনে বিশদ কারন নেই।আবার অনেকগুলি এফ আই আর জাস্ট কপি পেস্ট।সবকটির একই বয়ান।
গো হত্যার জন্য অভিযুক্ত 41 জনের মধ্যে মুক্তি পেয়েছেন 30 জন।দশজন জামিনে মুক্তি পান।সাম্প্রদায়িক অশান্তি তে অভিযুক্ত 20 জন।আর এই 20 জনের সকলেই মুসলিম ।আর এটিই রহস্য ।শুধু রহস্য নয় মারাত্মক ও বটে।
শাসককুল নানা ভাবে এই আইনের অপ্রয়োগ করে নানা অভিসন্ধি যে সিদ্ধ করে চলেছেন তাতো সত্যি ।ভাবা যাক ডাক্তার কপিল খানের কথা।তিনি 2020 সালে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হন।পরে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে তাঁর মুক্তির পথ আসে।আর এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে এই সব আইন কে কাজে লাগিয়ে শাসক দল কি ভাবে নিজেদের আখের গুছিয়েই চলেছেন।ভয় দেখিয়ে স্তব্ধ করতে চাইছেন শাসকের বিরোধিতা ।গনতন্তের পক্ষে যা শুধু অশুভ নয় ক্ষতিকর ও বটে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বিধান সভা নির্বাচন কে ঘিরেও চলছে নানা অশান্তি ।একে তো এখানে ভোটের মেরুকরণ চাইছেন বেশ কয়েকটি দল।আর এই মেরুকরণ কে কাজে লাগাতে উঠে পড়ে লেগেছেন অনেকেই।
ভোটে হামলা এ রাজ্যে নতূন নয়।পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে লোকসভা ।সব ভোটেই অশান্তির বাতাবরন ছিল।সম্প্রতি বিধান সভার ভোট কে কেন্দ্র করে সেই পারদ বেড়েছে বই কমেনি।
কোথাও কোন অশান্তি হলেই গুজব রটছে নানা মন্তব্য ।এরি মধ্যে লুঙ্গি বাহিনী নামটি কোন এক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে ই করা হচ্ছে বারবার ।তবে কি ধরে নেব লুঙ্গি শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায় ই পরিধান করেন।কিন্তু ভোট ময়দানে নিজেদের আলাদা করতে এই শব্দ বন্ধনী বার বার উঠে আসছে।
সম্প্রতি কোচবিহারে চতুর্থ দফার ভোটে পাঁচ জনের মৃত্যু ঘটেছে।আর এই পাঁচ জনের মধ্যেই চারজন মুসলিম সম্প্রদায়ের ।যাঁরা সি আর পি এফের গুলিতে নিহত হন।ঠিক কি পরিস্থিতিতে গুলি চলেছে সে ব্যাপারে এখনো কেউ পরিস্কার নন।কিন্তু সিআরপিএফের অস্ত্র ছিনতাইয়ের গল্প উঠে এসেছে বার বার।
কিন্তু আসল তদন্ত সমাপ্ত না হলে সেই ব্যাখা সম্পূর্ণ হবে না।হতে পারে এটি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা ।তাই সিআরপিএফের গুলিতে যে চারজন মারা গেলেন তাঁরা সকলেই মুসলিম ।ভোটের লাইনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে যে মারা গেলেন সে তো হিন্দু ।
মৃত্যু মৃত্যুই। হিন্দু মুসলিম এই সব সম্প্রদায়ের কথা যখন উঠছে তখন ধরে নিতে হয় এর পিছনে ভোটের অঙ্ক কাজ করছে।সে যে দল ই হোক।
কোন এক অশান্তির পিছনে লুকিয়ে থাকে নানা ঘটনা।শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায় কে সেই ঘটনার দায় কেন নিতে হবে।
যারা মারা গেলেন তাঁরা কেউ বহিরাগত নন। ভিন প্রদেশ থেকেও আসেন নি। এই রাজ্যের সেই গ্রামের সেই বুধের ই ভোটার তাঁরা ।সমস্ত মৃত্যুর ঘটনাই শোক বহূল।সমস্ত ঘটনার সঠিক ও সত্য তদন্ত দরকার ।
অশান্তি কোন এক সম্প্রদায়ের ফসল একথা বলার মধ্যে ঘৃন্য মনোবৃত্তি কাজ করে।সে শীতলকুচি হোক বা অন্য কোথাও ।
কখনোই কোন ঘটনার দায় কোন এক সম্প্রদায়ের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। অথচ নন্দীগ্রাম থেকে শুরু করে রাজ্যের সর্বত্র এই এক ধরনের মেরুকরণের অপচেষ্টা চলছে বারে বারে।
অসাম্প্রদায়িক ভারতবর্ষের ভোট মানচিত্রে ভোট দেন নানা ভাষা নানা জাতি।সেখানে একুশের ভোটে বার বার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মেরুকরণের যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তা দেশের পক্ষে কখনোই শুভ হতে পারে না।
অশান্তির দায় নির্বাচন কমিশন কেই তো নিতে হবে।সিআরপিএফের গুলি চালনার তদন্তে আনতে হবে উচ্চ পদস্থ আধিকারিক দের।আসল কারন খুঁজে শাস্তি দিতে হবে দোষীদের।
মুসলিম সম্প্রদায়ের কাঁধে সে দায় চাপিয়ে দিতে যারা চাইছেন তাঁদের মনে রাখা উচিত ভারতবর্ষের ধর্ম নিরপক্ষেতার কফিনে আপনারা পেরেক মারছেন।
দায় সমগ্র ভারতবর্ষের ।ভারতের সকল নাগরিকের উচিত দেশের অখন্ডতা রক্ষা করে চলা।
দায় কারো নয় কো মা বললে তো চলবে না।ধর্মের তাস নিয়ে ভোট লড়তে এসে সাম্প্রদায়িক উস্কানি যারা দিচ্ছেন তাঁরা আর যাই হোন দেশপ্রেমিক কখনোই নন।