Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সেন্টাল ভিস্টা।মোদীর স্বপ্ন, মোদীর অহমিকা ।তাই তো এই প্রকল্পের কাজ অত্যাবশ্যক ।মহামারী চুলোয় যাক

তরুন চট্টোপাধ্যায় মোদী সরকারের নানা স্বপ্ন ।মন কি বাত।স্বপ্নের ফেরিওলা বলে কথা।স্বপ্ন বিক্রি করতে করতে একে একে নানা বিক্রির পসরা সাজানো কেন্দ্রীয় সরকার ।ব্যাঙ্ক বিক্রি করতে গিয়ে স্বপ্নের খরিদ্দার খোঁজা।এসব তো ছিলই ।তবে কি এমন হলো…

 তরুন চট্টোপাধ্যায়

মোদী সরকারের নানা স্বপ্ন ।মন কি বাত।স্বপ্নের ফেরিওলা বলে কথা।স্বপ্ন বিক্রি করতে করতে একে একে নানা বিক্রির পসরা সাজানো কেন্দ্রীয় সরকার ।ব্যাঙ্ক বিক্রি করতে গিয়ে স্বপ্নের খরিদ্দার খোঁজা।এসব তো ছিলই ।তবে কি এমন হলো।করোনার এই মহামারী তে আবার কি এলো নরেন্দ্র মোদীর ঝুলিতে।আর তা নিয়ে বিরোধী শিবির উত্তাল।

আরে না না সেটি আর এমন কি।মোদী সরকারের স্বপ্নের সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্প ।সেটি আবার কি? তেমন কিছু নয় তো।নয়া সংসদ ভবন সহ বেশ কিছু নির্মান কার্যের মাধ্যমে দিল্লির মুখ বদলে দেওয়া ।সৌন্দর্যের এক নতূন স্বপ্ন ।এতো ভালো কথাই।এর মধ্যে গোল বাধলো কেন।দেশের রাজধানী সুন্দর ভাবে সেজে উঠলে তো আখেরে দেশের ই লাভ।বিশ্বের দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল ।কিন্তু তাই নিয়ে কেন এতো সোরগোল ।

আসলে সোরগোলের মূল কারন টি হলো অক্সিজেনের অভাবে মরে যাচ্ছে মানুষ ।চিকিৎসা ব্যাবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে বলেই অভিমত চিকিৎসক দের।অতিমারির কোপে প্রায় দিশেহারা দিল্লির আমজনতা।চলছে কার্ফু ।এরি মধ্যে এক সংবাদ মাধ্যমের খবর হলো সেন্টাল ভিস্টা কে অত্যাবশ্যক কাজের তকমা দেওয়া হয়েছে।ফলে যাই ঘটুক না কেন এই কাজটিকে এখন বন্ধ রাখা যাবে না।যুদ্ধ কালীন প্রস্তুতি তে এই কাজ চলবে।আর এতেই রে রে করে উঠেছেন বিরোধী শিবির ।এই কাজ এখন এই পরিস্থিতিতে বন্ধের দাবি তুলছেন তাঁরা ।অত্যাবশ্যক আরো নানা কাজ রয়েছে।রয়েছে মানুষের প্রান বাঁচানোর দায়।আর সে সব কাজে অবহেলা যেন না হয় বলেই এই আপত্তি ।

অর্থ নিতীবিদ কৌশিক বসুর মতে, দেশে এত যন্ত্রণার মধ্যে সেন্টাল ভিস্টা প্রকল্প হলো ঔপনিবেশিকতারই নামান্তর ।

দেশ থেকে মহামারীর প্রকোপ কমলে এ কাজ নতূন করে শুরু করা যেতো।কিন্তু তা না করে এই দুর্দিনে এই কাজকে অত্যাবশ্যক তকমা আঁটা কেউই ভালো চোখে দেখছেন না।কিন্তু কি করা যাবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প বলে কথা।মানুষের মৃত্যু তো সংখ্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

2019 সালে এই প্রকল্পের দরপত্র হাঁকার সময় থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন মোদী সরকার ।অতিমারির আবহাওয়া না থাকলেও আরো অনেক সমস্যা সেই সময় ছিল।অর্থ নিতীর বেহাল দশা না ফিরিয়ে সৌন্দর্যায়ন ঘটানো কে বেঁকা চোখে দেখেন বিরোধী শিবির ।সে না হয় বোঝা গেল বিরোধিতার জন্য ।কিন্তু এই অতিমারির পরিস্থিতি তে সেই কাজ কে অগ্রাধিকার দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।অক্সিজেন আকাল।পথে পথে শবদেহ।লাশ পোড়াবার জায়গা নেই।অথচ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কি অপার চেষ্টা সরকারের ।

    রাহূল গান্ধীর বক্তব্য হলো,কোভিড সঙ্কট দেশ জুড়ে, নমুনা পরীক্ষা নেই,অক্সিজেন নেই,আই সি ইউ নেই।এই পরিস্থিতিতে দেশের সরকারের কাছে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।

অথচ এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার কুড়ি হাজার কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে।সেন্টাল ভিস্টা প্রকল্প সম্পন্ন হোক।কিন্তু এটি কি সঠিক সময় ।যখন দেশজুড়ে হাহাকার ।মৃত্যুমিছিল চলছে রাজপথ জুড়ে ।

অথচ নির্বিকার দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ।প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের সঙ্গে যে জড়িয়ে রয়েছে স্বপ্ন। নরেন্দ্র মোদির অহমিকা তৃপ্ত করার জন্য কি এই কাজ বন্ধ না করে অত্যাবশ্যক তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে।

কার্ফু র মধ্যে ও বিরাম নেই কাজের।ইন্ডিয়া গেটের কাছেও কাজ চলছে।সেখানে কাজ করছেন উওরপ্রদেশ থেকে আসা একদল শ্রমিক ।তাঁদের বক্তব্য হলো আমরা দেশে ফিরে যেতে পারি।কারন এখানে কোভিড সংক্রমণ হলে আমরা দেশে ফিরতে পারবো না।আবার সেখানেও কাজ পাব কোথায় ।তাই এখানেই পড়ে আছি।আমাদের মজুরির অনেকটাই আটকে আছে।সে সব ফেলে যাব কি করে।ফলে মরতে হলে এখানেই মরতে হবে।এছাড়া গত্যন্তর নেই।

সরকারি চিঠি উদ্ধৃত করে এক সংবাদ মাধ্যমের খবর হলো এই প্রকল্প টিকে অত্যাবশ্যক তকমা দেওয়া তে এই কাজ কোন অবস্থাতেই বন্ধ করা যাবে না।এই প্রকল্পের সরকারী দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারী দপ্তর হলো সেন্টাল পাবলিক ওয়াকস ডিপারমেন্ট।2021 সালের 30 নভেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে হবে বলেই তাঁরা জানান।ফলে যাতে কাজ বন্ধ না হয় তাই অত্যাবশ্যক তকমা।

নির্মাণকারী সংস্থা হলো শাপুরজি পালনজি অ্যান্ড কোম্পানি ।নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে তাঁরা তিনটি শিফটে কাজ শুরু করেছেন।সকল শ্রমিক কে কোম্পানি বাসে করে কাজের জায়গায় নিয়ে আসছেন আবার কাজ শেষে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ।কোথাও কোন ক্রটি নেই।আরো বড় মেয়াদের কার্ফু বা অন্য কোন ভাবে কাজ যাতে বন্ধ না হয় সেদিকে নজর ও রয়েছে।180 টি গাড়ি চলাচলের অনুমতি আগাম নেওয়া হয়ে গেছে দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে।

সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, সকলের মত খারিজ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অহমিকা তৃপ্ত করার জন্য সেন্টাল ভিস্টার কাজ চলছে।এবার লকডাউন এড়াতে অত্যাবশ্যক তকমাও দেওয়া হলো।লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ শ্বাস নিতে পারছেন না।অবিলম্বে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে অক্সিজেন ও টিকা সংগ্রহ করুন।

বিরোধীরা তো বলছেন।আর তাঁরা যে বলবেন এ কথাতো স্বাভাবিক ।কিন্তু দেশজুড়ে অতিমারির এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তেও সেন্টাল ভিস্টা এগিয়ে চলেছে রমরমিয়ে ।30 শে নভেম্বর যে এই কাজ শেষ করতেই হবে।

নির্মান কারী সংস্থা দায়বদ্ধ সরকারের কাছে।কারন দরপত্র গ্রহন করার সময় সময় সীমা বেঁধে দেওয়া ছিল।আর তাঁরাও সেই ভাবে কাজ শেষ করতে বদ্ধপরিকর ।

কিন্তু সরকার এই পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ করলে তো তাদের দায় নেই।কিন্তু সরকার যখন অত্যাবশ্যক তকমা সেঁটে দিয়েছে তখন তো কাজ চলবেই।শ্রমিকরা চান বা না চান কাজ তো করতেই হবে।এক শ্রমিক না করলে অন্য শ্রমিক আসবেন।দেশে যে অভাব আছে কাজের।

মহামারী দিয়ে তো আর প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প আটকানো যাবে না।

অথচ বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্য সরকারের খামখেয়ালিপনার জন্য অন্য প্রদেশের মানুষ পেশায় যোগ দিতে পারছেন না।সেখানে নানা নিয়মের বেড়াজালে আটকে পড়ছেন মানুষ ।আর সেটাই স্বাভাবিক ।কারন তাদের তো সরকার অত্যাবশ্যক বলছেন না।

বলছেন সেন্টাল ভিস্টা কে। স্বপ্ন বলে কথা।