নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। মারধর, বোমাবাজির পাশাপাশি রাস্তা কেটে গাছের গুড়ি ফেলে আটকানো হচ্ছে পুলিশের গতিপথ। এমন অভিযোগে উপদ্রুত বাকচার আইন শৃঙ্খলা ফেরাতে…
নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। মারধর, বোমাবাজির পাশাপাশি রাস্তা কেটে গাছের গুড়ি ফেলে আটকানো হচ্ছে পুলিশের গতিপথ। এমন অভিযোগে উপদ্রুত বাকচার আইন শৃঙ্খলা ফেরাতে অভিযানে গিয়ে ফের তীব্র বাধার সম্মুখীন হল ময়না থানার পুলিশ। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের এলোপাথাড়ি ইট বৃষ্টি, কাটারির আঘাতে গুরুতর জখম হলেন থানার ওসি সহ তিন পুলিশকর্মী। তবে এই ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বিগত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই একটু একটু করে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছিল ময়নার উপদ্রুত বাকচা এলাকা। একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের খুন, হতাহত থেকে শুরু করে জখম হন পুলিশকর্মী অফিসার। স্বাভাবিকভাবেই এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বসানো হয় পুলিশ ক্যাম্প। কিন্তু তার মধ্যেও অল্পবিস্তর হামলা বোমাবাজির ঘটনা লেগেছিল। সম্প্রতি অতর্কিতে পুলিশি তল্লাশি অভিযানে দফায় দফায় উদ্ধার হয় প্রায় শতাধিক বোমা। যেগুলিকে কঠোর নিরাপত্তায় নিষ্ক্রিয় করে বোম স্কোয়ারের সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে ফের দিন কয়েক আগে পতাকা লাগানো এবং মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এই ঘটনাতেও অভিযানে গিয়ে ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। রাস্তা কেটে গাছের গুড়ি ফেলে আটকানো হয় পথ।স্বাভাবিকভাবেই উত্তপ্ত বাকচার আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এদিন বিকেলে অতর্কিতে পুলিশি অভিযানে নামে ময়না থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। আর তখনই পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে উপদ্রুত বাকচার গোড়ামাহাল এলাকার বাসিন্দারা ইট পাথর ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। আর তাতেই গুরুতর জখম হন ময়না থানার ওসি গোপাল পাঠক সহ তিন পুলিশ কর্মী। তাদের ময়না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের অভিযোগ, ভৌগলিক অবস্থানগত বাকচার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু দুষ্কৃতী দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বোমাবাজি মারধর করে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। তাই উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতোই এদিন অতর্কিতে এই এলাকায় অভিযানে নামে ময়না থানার পুলিশ। আর তখনই এই প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। অতর্কিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে কাটারি, ইট বৃষ্টি শুরু হয়। তমলুক মহাকুমার পুলিশ আধিকারিক অতীশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অশান্ত রয়েছে এই এলাকা। তাই আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এদিন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই এলাকায় পুলিশি অভিযান চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় ১২জনকে আটক করা হয়েছে।
ময়না ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত মালাকার অভিযোগ করে বলেন, যে ভাবে বিজেপির প্রত্যক্ষ মদতে দিনের পর দিন দুষ্কৃতীরা ওই এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের কর্মীদের মারধর, খুন করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে ওই এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হোক। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, দিনের পর দিন শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতে যেভাবে পুলিশ দল দাসে পরিণত হয়েছে তাতে এলাকার জনগণ অত্যন্ত ক্ষুব্দ। এলাকার বিজেপির কার্যকর্তাদের মাছ লুট করা হয়েছে। সবং থেকে ভাড়া করা গুন্ডা এনে বেছে বেছে বিজেপি কর্মী সমর্থকদর বাড়ি ভাঙচুর, মারধর, বোমাবাজি, মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের ধরার নামে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। আমরা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি জানাচ্ছি।