Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

সৃষ্টি-সাহিত্য-যাপন-দৈনিক-সেরা-লেখনী-সম্মাননা

#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন আজকের সমাজের কিছু কথা
লেখিকা : সোহিনী ঘোষ
২৮/০১/২০২২
বাসে ট্রেনে করে অফিস যাবার সময় রোজ চোখে পড়ে কত মানুষ যাদের মাথার উপর ছাদ নেই। ফুটপাতে স্টেশনে রাত কাটায়। সংসার করে। তাদের ছেলে মেয়েও আছে। ছোট ছোট শিশুর জন্ম দ…

 


#সৃষ্টি_সাহিত্য_যাপন 

আজকের সমাজের কিছু কথা


লেখিকা : সোহিনী ঘোষ


২৮/০১/২০২২


বাসে ট্রেনে করে অফিস যাবার সময় রোজ চোখে পড়ে কত মানুষ যাদের মাথার উপর ছাদ নেই। ফুটপাতে স্টেশনে রাত কাটায়। সংসার করে। তাদের ছেলে মেয়েও আছে। ছোট ছোট শিশুর জন্ম দেয় ওই ফুটপাতে। সেখানেই বড় হয়। কোনোদিন তাদের পেট ভোরে খাবার জোটে না। রাস্তাতেই কোনোমতে কেউ কেউ ভাত সেদ্ধ করে সবাই মিলে খায় দিন কাটায়। প্রতিদিন তাদের নিত্যনতুন জীবন সংগ্রাম। জীবিকা ভিক্ষাবৃত্তি বা অন্য কোনো খুব সামান্য কাজ। তা দিয়েই তাদের ভালবাসার জগৎ তৈরি করে। ফুটপাতবাসীও মা হয়। রাতের অন্ধকারে অনেক বড়োলোক মানুষ তাদের লোভ লালসার শিকার ও করে থাকে। তাদের হয়ে কে প্রতিবাদ জানাবে কে আছে তাদের? কোনো সুবিধা তাদের জন্য নয়। তারাও মানুষ আর পাঁচজন মানুষের মত তাদেরও ক্ষুধা তৃষ্ণা ইচ্ছা ভাললাগা মন সব আছে। কিন্তু তা দেখানোর সাহস বা ক্ষমতা তাদের নেই।


 সমাজ শুধু পয়সাওয়ালাদের চেনে, আমরা ক-জন এই ফুটপাতবাসী মানুষদের মর্যাদা দি বলুন তো! আমরা হেঁটে যাই তাদের পাশ দিয়ে নাকে রুমাল চাপা দি। ঘৃনায় তাকাই না ওদের দিকে।ওদের যে সাধারণ মানুষের মত কোনো সুযোগ নেই আর বিলাসিতা তো স্বপ্নের অতীত।


ছোট ছোট বাচ্চা তাদের পোশাকও জোটে না। শত ছিন্ন বস্ত্র তাদের পরনে। মুখ শুকনো সারাদিন হয়ত খাওয়াও জোটেনি। বাবা মা কখন দুটো রোজগার করে এনে সামান্য আহার তাদের মুখে তুলে দেবে সেই অপেক্ষায় থাকে। খিদের যন্ত্রনা সে বড় সাংঘাতিক। ছোট থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি বা কোনো কাজ আর না হলে চুরি ডাকাতি করে বড় হয়। কে দেবে তাদের কাজ কে বিশ্বাস করবে তাদের?তাদের যে থাকারই জায়গা ওই রাস্তা কে ভালবাসবে?


অনেক বাচ্চা রোদে জলে ভিজে কত কষ্ট করে ২/৩ টাকা রোজগার করে কিছু খাবার খায়। আমরা ক-জন ভাবি তাদের কথা। ওই সব ছোট ছোট বাচ্চা সে আমাদের ঘরেও আছে। আমাদের ঘরের বাচ্চাদের আমরা কত ভালবাসি care করি। খেলনা কিনে দি যা চায় বা দিতে চেষ্টা করি। আমরা পড়াশুনা শিখে শিক্ষিত হয়ে চাকরি করি। আর পরিবেশের সাথে মানানসই হয়ে ওঠার জন্য আমরাও কিন্তু অনেক কষ্ট করি। 


আমাদের মধ্যে অনেকে আবার কিন্তু নানা ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দি তাদের দিকে। অনেকে অনেককিছু ভাবি তাদেরকে ভালবেসে সাহায্য করব। বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে আমরা ওই পথশিশু বা ফুটপাটবাসীদের সাহায্য করে থাকি। আমার একটা কথা মনে হয় সবার কথা বলছি না ব্যতিক্রম কিন্তু সবেতেই থাকে। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা প্রায়ই দেখি অনেক মানুষ এই অসহায় নিরন্ন মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। আর নানা ছবি দিচ্ছে। সে কি কেবলই ছবি দিয়ে মহান হবার জন্য নাকি আদৌ তাদের মনে এই মানুষগুলোর জন্য সহানুভূতি আছে?


এই মানুষগুলোর কাছে যখন কোনো পথশিশু সাহায্য চায় দু-টাকা তখন কিন্তু তাদের সামনে ক্যামেরা থাকে না। কথাটা ভুল বললাম বলে মনে হয় না। অনেকবার দেখেছি দু-টাকা বার করতে গায়ে লাগে। ছুতে ঘেন্না করি যাদের তাদেরই কিন্তু ক্যামেরার সামনে কোলে তুলে নি।


আমরা যারা নিজেদের কে শিক্ষিত বলি, আমরা সত্যিই কি শিক্ষিত? পুঁথিগত বিদ্যায় হয়ত আমরা অনেক উপরে ওই মানুষগুলোর থেকে কিন্তু মনুষ্যত্ব হয়ত আমাদের অনেক কম।


সমালোচিত হওয়ার জন্য লেখাটি নয়, অনেকেরই বিরুদ্ধ মতামত থাকতে পারে। আমি আমার মনে হওয়া লিখলাম। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায়।........