দেবাঞ্জন দাস; ১৬ জুলাই: প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ১৫ জুলাই কলকাতায় ‘প্রোজেক্ট ১৭এ ফ্রিগেট দুনাগিরি’র ওয়াই-৩০২৩-র জলযাত্রার সূচনা করেছেন। উপস্থিত ছিলেন নৌ-বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল পি হরি কুমার এবং ভারতীয় নৌ-বাহিনী ও প্রতি…
দেবাঞ্জন দাস; ১৬ জুলাই: প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ১৫ জুলাই কলকাতায় ‘প্রোজেক্ট ১৭এ ফ্রিগেট দুনাগিরি’র ওয়াই-৩০২৩-র জলযাত্রার সূচনা করেছেন। উপস্থিত ছিলেন নৌ-বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল পি হরি কুমার এবং ভারতীয় নৌ-বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা।
উত্তরাখণ্ডের পর্বতশ্রেণীর নামে নামাঙ্কিত ‘দুনাগিরি’ পি-১৭এ ফ্রিগেট শ্রেণীর চতুর্থ জাহাজ। পি-১৭ ফ্রিগেট (শিবালিক শ্রেণী)-এর উন্নত সংস্করণ এটি। ১৪৯ মিটার দীর্ঘ এই রণতরীতে গাইডেড মিসাইল সহ আছে উন্নত আধুনিক বৈশিষ্ট্য, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের ক্ষমতা, উন্নতমানের সেন্সর এবং প্ল্যাটফর্ম ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা। ‘দুনাগিরি’ এক সময়ের লিয়েন্ডার শ্রেণীর এএসডব্লিউ ফ্রিগেট-এর ‘দুনাগিরি’র নবতম সংস্করণ।
অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে আত্মনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের চাহিদার কথা অনুভব করে ডাইরেক্টরেট অফ নাভাল ডিজাইন্স সহ নৌ-বাহিনীর অন্য দলটির কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও জাহাজ তৈরিতে সাহায্যের জন্য জিআরএসই-র প্রশংসা করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘দুনাগিরি’ হবে বিশ্বমানের এক জাহাজ যা সমুদ্রপথে, আকাশপথে বা জলের তলায় শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
বিশ্বের পরিবর্তিত পটভূমির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে পরিকাঠামো পরিবর্তনের ভূমিকায় জোর দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা সম্বন্ধীয় চ্যালেঞ্জ ক্রমশ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর ‘সাগর’ দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তব রূপ দিতে ভারতের জাতীয় সমুদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় নৌ-বাহিনী, ভারতীয় উপকূল রক্ষীবাহিনী ও অন্যান্য সংস্থা সমুদ্রপথে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অবিরাম তাদের পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী তাঁর ভাষণে বাংলার বীর সন্তান যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বাঘা), ক্ষুদিরাম বসু এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর কথা স্মরণ করেন। ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনের সময় দেশ কখনই তাঁদের অবদানের কথা ভুলতে পারে না বলে মন্তব্য করেন শ্রী রাজনাথ সিং। বেগম রোকেয়া, বীনা দাস সহ বাংলার সাহসী মহিলাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল পি হরি কুমার বলেন, ভারতীয় নৌ-বাহিনীর মূল লক্ষ্য হল দেশের সমুদ্র সীমানাকে রক্ষা করা। পাশাপাশি, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সাহায্য করা। তিনি বলেন, এই ‘দুনাগিরি’ প্রকল্পের ফলে স্থানীয় এলাকায় ৩ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ কাজ করেছে এই প্রকল্পে।
কলকাতার হুগলি নদীতে ‘দুনাগিরি’র জলযাত্রা শুরু হয় সমবেত মানুষের তুমুল হর্ষোল্লাসের মধ্য দিয়ে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে জিআরএসই এই ধরনের মোট তিনটি অত্যাধুনিক ফ্রিগেট তৈরির বরাত পেয়েছে। ১৯,২০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে এই তিনটি রণতরীর প্রথমটি আইএনএস হিমগিরি ২০২০ সালের ১৪ই ডিসেম্বর জলে ভাসানো হয়।
ছবি: টুইটার