দেবাঞ্জন দাস; কলকাতা, ২৭ ডিসেম্বর : ভারতের ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস মিশোর পক্ষে ২০২২ সাল ছিল এক দারুণ বছর, কারণ এ বছর ইন্টারনেট বাণিজ্যকে আমরা সকলের জন্য খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে অনেকগুলো নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। এ বছর মিশো তিনটে বিক্রির …
দেবাঞ্জন দাস; কলকাতা, ২৭ ডিসেম্বর : ভারতের ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস মিশোর পক্ষে ২০২২ সাল ছিল এক দারুণ বছর, কারণ এ বছর ইন্টারনেট বাণিজ্যকে আমরা সকলের জন্য খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে অনেকগুলো নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। এ বছর মিশো তিনটে বিক্রির রেকর্ড করেছে, যা আগের রেকর্ড ভেঙেছে । কর্তৃপক্ষের কথায়, এটা সম্ভব হয়েছে দেশের প্রত্যেক কোণের সেইসব ক্রেতা, যাঁরা খরচের পয়সা উশুল করে নিতে চান তাঁরা আমাদের রোজকার কম দাম এবং বিস্তীর্ণ সম্ভার বেছে নিয়েছেন।
কমিশনবিহীন মডেল এবং পেনাল্টি না দিতে হওয়ার মত শিল্পক্ষেত্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া মিশোর উদ্যোগগুলোর জন্য ক্রমশ বেশি বেশি করে পশ্চিমবঙ্গের এমএসএমই গত এক বছরে মিশোর প্ল্যাটফর্মে যোগ দিয়েছে। গত ১২ মাসে ১৮০ জনের বেশি বিক্রেতা কোটিপতি হয়েছেন, আর পশ্চিমবঙ্গের ৩,৫০০ বিক্রেতা লাখপতি হয়েছেন। এ বছর এই রাজ্য থেকে প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়া সরবরাহকারীর সংখ্যাও ৯০% বেড়েছে। তাদের মধ্যে ৬০% ই-কমার্স যাত্রা শুরু করেছে মিশোর সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের ক্রেতারা যে প্রোডাক্টগুলো সবচেয়ে বেশি কিনেছেন সেগুলো হল ব্লুটুথ হেডফোন ও ইয়ারফোন, শাড়ি, স্মার্টওয়াচ, এক্সটেনশন বোর্ড আর সুতির বেডশিট।
ভৌগোলিক অবস্থান এবং আর্থসামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে ই-কমার্স পাকাপাকিভাবে বাড়তে থাকায় মিশো দেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ ক্রেতা সমাজের নাগাল এবং সাধ্য সমানে বাড়িয়ে চলেছে। ২০২২ সালে ভারত যেভাবে কেনাকাটা করেছে তার কয়েকটা প্রধান লক্ষণ এইরকম।
বিক্রেতারা ২০২২ সালে কমিশন বাবদ ৩,৭০০ কোটি টাকা বাঁচিয়েছেন। এর কারণ শিল্পক্ষেত্রকে প্রাধান্য দেওয়া আমাদের কমিশনবিহীন মডেল।
ভারত জুড়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোকে (SMB) ডিজিটাইজ করা: মিশো ২০২২ সালে ~৫০০,০০০ সরবরাহকারীকে প্ল্যাটফর্মে এনেছে। তাদের ৬১% ই-কমার্সে নতুন এবং এই প্রথম অনলাইনে জিনিস বিক্রি করছেন।
ভারতের কেনাকাটার প্রধান সময়
রবিবার মানুষ বিনোদনে সময় কাটায়। আর ওই দিনটাতেই ভারতীয়রা ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি অনলাইন কেনাকাটা করেছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি কেনাকাটার দিন ছিল বুধবার।
প্রতিদিন রাত ৮টা মিশোর ক্রেতাদের কেনাকাটার প্রধান সময়। ২০২১ সালে দুপুর ২টো থেকে ৩টেয় সবচেয়ে বেশি ট্র্যাফিক আসত।
কয়েক লক্ষ ক্রেতা ‘পিপুল গাছ’, ‘বটগাছ’, ‘আটা কলের পিছনে’ এবং ‘জলের ট্যাঙ্কের কাছে’ ইত্যাদি স্থানীয় ল্যান্ডমার্ক ব্যবহার করেছেন মাল সরবরাহকারীদের পথনির্দেশ দেওয়ার জন্য। ডিজিটাল ম্যাপ যা-ই করুক, দিশি ন্যাভিগেশন টুলের জুড়ি নেই।
ভারতীয়রা এখন নিজের ব্যাপারে অনেক বেশি যত্নবান
২০২২ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সার্চ হওয়া প্রোডাক্ট হল ‘স্মার্টওয়াচ’। এ থেকে বোঝা যায় ভারতীয়রা শারীরিক কসরতের ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠছেন
পুরুষরা কোনোদিন গ্রুমিং প্রোডাক্ট সম্পর্কে এত আগ্রহী হননি। এসবের ৬০% অর্ডারই আসছে টিয়ার ৪ বাজারগুলো থেকে।
টিয়ার ২+ শহরগুলোতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের অর্ডার ৯ গুণ বেড়েছে, যা দেখিয়ে দিচ্ছে ই-কমার্স কীভাবে ভারতের লক্ষ লক্ষ মহিলার নাগালের মধ্যে সেইসব জিনিস নিয়ে আসছে যা তাঁদের আওতার বাইরে ছিল
২০২২ শপিং কার্ট
প্রতি মিনিটে ১৪৮টা শাড়ি বিক্রি হয়েছে এবং দেশের প্রত্যেক কোণ থেকে অর্ডার এসেছে। অর্থাৎ এই পোশাকটার জন্য ভারতের ভালবাসা বেড়েই চলেছে।
প্রতিদিন ৯৩,০০০ টি-শার্ট, ৫১,৭২৫ ব্লুটুথ ইয়ারফোন আর ২১,৬৬২ লিপস্টিক বিক্রি হয়েছে। রাজস্থান প্রচুর ব্লুটুথ ইয়ারফোন কিনেছে, ঝাড়খণ্ড অনেক এক্সটেনশন বোর্ড কিনেছে, হরিয়ানারও ব্লুটুথ ইয়ারফোন বিশেষ পছন্দ আর আসাম যত বডি লোশন কিনেছে তত আর কোথাও বিক্রি হয়নি।