দেবাঞ্জন দাস, ২৪ ফেব্রুয়ারি: মেদিনীপুরের এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর তাঁর স্বপ্নের চাকরিটা আদায় করতে পেরেছেন ৩০০% বেশি মাইনে সমেত। পশ্চিমবঙ্গের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান এবং এক …
দেবাঞ্জন দাস, ২৪ ফেব্রুয়ারি: মেদিনীপুরের এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর তাঁর স্বপ্নের চাকরিটা আদায় করতে পেরেছেন ৩০০% বেশি মাইনে সমেত। পশ্চিমবঙ্গের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান এবং এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষকের হাতে বেড়ে ওঠা অনুশ্রুত দত্তকে বরাবরই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ ঘরের ছেলে হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বাবা, মা দুজনেই অনুশ্রুতর মত উজ্জ্বল ছাত্রকে তার জন্যে উপযুক্ত ভাল মানের শিক্ষা এবং পরামর্শ দেওয়ার ব্যাপারে অনড় থেকেছেন।
২০১৮ সালে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে অনুশ্রুত প্রথম চাকরি পান অ্যাকসেঞ্চার কোম্পানিতে। সেখানে তাঁর ভূমিকা ছিল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যানালিস্টের। কিন্তু নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করায় তাঁর উৎসাহ এবং কোডিংয়ে গভীর আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও কোম্পানি প্রায় এক বছর তাঁকে কাজ দেয়নি। সেইসময় অনুশ্রুত বুঝতে পারেন যে তাঁকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কেরিয়ারে উন্নতি করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট কোডিং দক্ষতা আয়ত্ত করতে হবে। তখনই অনুশ্রুতর এক বন্ধু তাঁর পরিস্থিতি বুঝে তাঁকে স্কেলার চিনিয়ে দেয়।
“স্কেলার অ্যাকাডেমি” প্রোগ্রাম, যা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডেভেলপমেন্টের উপর জোর দেয়, তার মাধ্যমে অনুশ্রুত বুঝতে পারেন যে টেকে কেরিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কোনো একজনের থেকে একান্তে মেন্টরিং পাওয়াকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত ততটা দেওয়া হয় না। নতুন নতুন ধারণাগুলো শিখে এবং বাস্তবে সেগুলোকে প্রয়োগ করে অনুশ্রুত প্রথমবার সেই আনন্দ এবং তৃপ্তি পান, যা কোডের মাধ্যমে বাস্তবের টেক সমস্যার সমাধান করলে পাওয়া যায়। দক্ষতা বৃদ্ধির পর অনুশ্রুত এখন ওয়াইজটেক গ্লোবালে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেন। সেখানে তাঁর মাইনে ৩০০ শতাংশ বেড়েছে।
স্কেলারের প্রাক্তনী অনুশ্রুত দত্ত বললেন “যেদিন আমার সঙ্গে কোডিংয়ের পরিচয় হয়েছে, সেদিনই আমি বুঝে গেছি এটাই আমার আগ্রহের জায়গা। যখন গ্র্যাজুয়েশনের পরে প্রথম চাকরি পেলাম, আমি বুঝতে পারলাম যে কেরিয়ারে সফল হতে চাইলে আমাকে প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হবে। আমি যখন স্কেলার প্রোগ্রামের কথা জানতে পারলাম, শেখানোর পদ্ধতি, পাঠক্রম এবং গোটা প্রোগ্রামটা যেভাবে গঠিত সেটা দেখে খুব খুশি হয়েছিলাম। এই প্রোগ্রাম আমাকে নতুন ধারণাগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল, ফলে আমার জানার ইচ্ছে আরও বেড়ে গেল। স্কেলারের সব মেন্টর আমাকে সঠিক পরামর্শ দিয়ে খুব সাহায্য করেছেন। কেরিয়ারে সফল হওয়া এবং উন্নতি করে যাওয়ার আশু প্রয়োজনই আপনাকে সঠিক পদক্ষেপগুলো নিতে উদ্বুদ্ধ করবে – এটা বুঝে নেওয়া খুব জরুরি। এই উপলব্ধিটাই আমাকে আমার স্বপ্নের চাকরিটা আদায় করতে সাহায্য করেছে। স্কেলার থেকে দক্ষতা বৃদ্ধি করার পর এখন আমি সগর্বে বলতে পারি, সত্যিকারের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে যা যা লাগে সব আমার মধ্যে আছে।”
অনুশ্রুতর সাফল্য সম্পর্কে অভিমন্যু সাক্সেনা, স্কেলার ও ইন্টারভিউ বিটের কো-ফাউন্ডার, বললেন “আজকের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরও দক্ষ কর্মীবাহিনীর প্রয়োজন বাড়ছে। আমরা যত নতুন এবং নির্মীয়মাণ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হব, তত টেক পেশাদারদের এই শিল্পক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্যে নিজেদের আরও উন্নত করতে হবে। কেরিয়ারে সফল হতে গেলে ধারাবাহিকতা আর অধ্যবসায় হল দুটো অত্যাবশ্যক জিনিস। অনুশ্রুতর মত অনেক টেকিই সাধারণ ঘর থেকে আসে এবং নিজেদের কৃতিত্ব দিয়ে এদের নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করা এটাই প্রমাণ করে, যে দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং অনবরত শিখে আপনি কেরিয়ারে উন্নতি করতে পারেন এবং নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। স্কেলারে আমরা শুধু আশা করি এই পেশাদারদের জীবনে যেন আরও বেশি পরিবর্তন ঘটাতে পারি। আমরা প্রতিদিন এটাই চেষ্টা করি, প্রভাব ফেলি।”