তমলুক: রাখী তৈরির মাধ্যমে হোমের প্রতিবন্ধী আবাসিকদের স্বনির্ভর করার পাশাপাশি সামাজিক বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও রাখি তৈরিতে ব্যস্ত আবাসিক প্রতিবন্ধীরা। দুহাত না থাকলেও পা দিয়েই …
আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা! তার পর রাখীবন্ধন উৎসবে মাতবেন আপামর সাধারণ মানুষ। সেই সমস্ত সাধারণ মানুষের হাতে রাখী তুলে দিতে রাতদিন এক করে রাখী তৈরির কাজ করে চলেছে তমলুকের নিমতৌড়ি তমলুক উন্নয়ন সমিতির আবাসিক প্রতিবন্ধীরা। বিভিন্ন সামাজিক বার্তাকে সামনে রেখে পরিবেশ বান্ধব পাটকে কাজে লাগিয়ে নানা রকমের রাখী প্রস্তুত করতে ব্যস্ত আবাসিক প্রতিবন্ধীরা। আর এই পাটের রাখী তৈরির মাধ্যমে স্বনির্ভর হচ্ছে তাঁরা।
বর্তমান সময়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বাড়ছে নাবালিকা বিবাহ। তাই হোমের আবাসিক প্রতিবন্ধীদের রাখীতে নাবালিকা বিবাহের বার্তা তুলে ধরার পাশাপাশি, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ, পরিবেশ রক্ষায় জলসংরক্ষণের মতো বিষয়গুলিকে রাখিতে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁরা। আসন্ন শারদীয়ার আগাম শুভেচ্ছাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাটের রাখিতে। কেউ বিশেষভাবে সক্ষম। কেউ আবার দৃষ্টিহীন। কারোর দৈহিক বিকাশ স্বাভাবিকভাবে ঘটেনি। পার্বতীর দুটো হাত নেই। নিজের পা -কে সম্বল করে মনের জোরেই তিনিও কাজ করে চলেছেন। পার্বতী বলে "অন্যান্যরা হাত দিয়ে রাখি তৈরি করে যে আনন্দ পাচ্ছে, আমার দুটো হাত নেই আমি পা দিয়ে রাখি তৈরি করে আমার খুব আনন্দ লাগছে।"
তমলুকের নিমতৌড়ী হোমের আবাসিকরা রাখি তৈরিতে ভীষণ ব্যস্ত। প্রত্যেক বছরের মতো এবছরও প্রায় লক্ষাধিক রাখি তৈরি লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।
তাঁরা সকলেই ব্যস্ত রং তুলি, পাট, লেশ, দড়ি দিয়ে সুন্দর সুন্দর রাখী তৈরীতে। তাঁদের তৈরি রাখী সকলের হাতে হাতে ঘুরবে ভেবে দারুণ খুশি বিশেষভাবে সক্ষম এইসব শিল্পীরা। রাখীগুলি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনই সমাজ সচেতনতার বার্তাও লেখা রয়েছে সেগুলিতে। সম্প্রীতি রাখী সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বার্তা বহনকারী এই রাখী সবার কাছেই বাড়তি গুরুত্বের হয়ে উঠছে।
এখনও পর্যন্ত এখানে কয়েক হাজার রাখী তৈরী হয়েছে। সামনে আর কয়েকটা দিন তারপরই রাখী বন্ধন উৎসব। ফলে রাখী তৈরির কাকাজে ব্যস্ত সোনিয়া, পম্পা, মালেখা, মারিয়া, মার্জিনারা। ভাতৃত্ববোধ আর সম্প্রতির উৎসব উদযাপনের জোরদার প্রস্তুতি চলছে নিমতৌড়ির এই আবাসিক হোমে। আরে রাখি তৈরির মাধ্যমে স্বনির্ভর হচ্ছে হোমের প্রতিবন্ধী আবাসিকেরা।