অরুণ কুমার সাউ, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী মেলা ময়নার রাস মেলা। জেলা জুড়ে রয়েছে এই মেলার খ্যাতি। ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই মেলার বয়স প্রায় ৪৫০বছরেরও বেশী। ময়নার রাজ পরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউর রাসযাত্রা ঘিরে এই …
অরুণ কুমার সাউ, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী মেলা ময়নার রাস মেলা। জেলা জুড়ে রয়েছে এই মেলার খ্যাতি। ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই মেলার বয়স প্রায় ৪৫০বছরেরও বেশী। ময়নার রাজ পরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউর রাসযাত্রা ঘিরে এই মেলার আসর বসে ময়নাগড়ে। রাজপরিবারের বাসস্থান ময়না গড়ের চারদিকে রয়েছে জলাশয় ঘেরা পরিখা। গড়ের মধ্যে রয়েছে রাজপরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউর মন্দির। প্রতি বছর রাসপূর্ণিমার দিন রাজপরিবারের কূলদেবতা শ্যামসুন্দর জীউকে মন্দির থেকে গড়ের পরিখার জলাশয়ে নৌকায় চাপিয়ে বাদ্য বাজনা সহকারে শোভাযাত্রা করে গড়ের পরিখা রাসমঞ্চে নিয়ে আসা হয়। ময়নাগড়ে শ্যামসুন্দর জীউর এই নৌ-রাসযাত্রা ঘিরে প্রতিবছর মেলা বসে।ময়নার রাসমেলা মানেই বিখ্যাত কদমা মিষ্টি।৪৫০ বছরের প্রাচীণ ময়নার রাসমেলার কদমা মিষ্টি খুব জনপ্রিয়। প্রতিবছর রসের সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি অন্যান্য জেলার লোকজন মূলত কদমা মিষ্টির টানে ময়নার রাসমেলায় ভিড় করে।
কদমা বাংলার একটি শুকনো মিষ্টি বিশেষ।বাংলায় অনেক পুরনো মিষ্টির মধ্যে কদমা অন্যতম।দেখতে অনেকটা কদমফুল আকারের এবং ভিতরটা ফাঁপা। উপর ও নিচ খানিক কমলালেবুর মতো চাপা। অনেকের কাছে এই মিষ্টি আবার বল মিষ্টি নামে পরিচিত। একটা সময় ছিল বাংলায় অতিথি আপ্যায়নে কদমা অনেক গুরুত্ব পেত। যদিও এখন আর এই মিষ্টির আগের কৌলীন্যতা নেই। মূলত চিনি থেকে তৈরি হয় এই কদমা মিষ্টি। বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে।মেলায় এক একটি মিষ্টি দোকানদার গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ কুইন্টাল চিনির কদমা তৈরি করে থাকেন।চিনি জলের সঙ্গে ফুটিয়ে তৈরি হয় চিনির গাঢ় মিশ্রণ। চিনির মিশ্রণে দেওয়া হয় মাত্র দুই চা-চামচ লেবুর রস। তারপর আঁচ থেকে নামিয়ে চিনির রস একটি লম্বা পাত্রের মধ্যে ঢালা হয়। পরে এটি ঠান্ডা হয়ে এলে একটি মন্ড আকারে পরিণত হয়। ওই মন্ডটি বারবার সুতোর মতো টেনে ধবধবে সাদা করা হয়। সম্পূর্ণ সাদা হয়ে গেলে। একটি পাটাতনের উপর ফেলে ভাঁজ করা হয় পুরো মন্ডটিকে। তারপর সেখান থেকেই নানা সাইজের কদমা তৈরি করা হয়। কদমা তৈরির কারিগরদের থেকে জানা যায়, “চিনির মিশ্রণটি গাঢ় না হলে কদমা তৈরি করা যায় না।”