নিজস্ব সংবাদদাতা,রোহিণী...ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের বহড়াদাঁড়ি নেতাজী ক্লাবের উদ্যোগে দুই মাস ধরে চারটি পর্বে অনুষ্ঠিত হলো দশদিনের বর্ণময় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। এই কর্মসূচির সূচনা হয় গত ২৩ শে জানুয়ারি নেতাজী জয…
নিজস্ব সংবাদদাতা,রোহিণী...ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের বহড়াদাঁড়ি নেতাজী ক্লাবের উদ্যোগে দুই মাস ধরে চারটি পর্বে অনুষ্ঠিত হলো দশদিনের বর্ণময় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। এই কর্মসূচির সূচনা হয় গত ২৩ শে জানুয়ারি নেতাজী জয়ন্তীতে ম্যারাথন দৌড়ের মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে সরস্বতী পূজার সময় নানা কর্মসূচি সহ অনুষ্ঠিত হয় দুদিনের সারস্বত উৎসব।
তৃতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় পুরুষ ও মহিলাদের তিন দিনের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।এই প্রতিযোগিতায় ইনডোর ও আউটডোর গেমের নানা ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। শেষ পর্বে অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার অনুষ্ঠিত হলো চারদিনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সাহিত্য সম্মেলন। শেষ পর্বের চূড়ান্ত দিনে অনুষ্ঠিত হলো অষ্টম 'অন্বেষা সাহিত্য সম্মেলন'। আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বংশধর বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। সাহিত্য সম্মেলন শুরুর আগে ধামসা,মাদল,কলসী মাথায় নৃত্য সহ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা স্থানীয় এলাকা পরিক্রমা করে।শোভাযাত্রা শেষে নেতাজীর মূর্তিতে মাল্যদান করেন উপস্থিত বিশিষ্ট জনেরা।
এই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানান ক্লাবের পত্রিকা সম্পাদক আশিষ কুমার খুঁটিয়া ও মুখ্য উপদেষ্টা প্রদীপ কুমার মাইতি। অনুষ্ঠান মঞ্চে প্রকাশিত হয় হয় প্রবীণ সাহিত্যিক প্রফুল্ল মাহাতোর ১৯ তম উপন্যাস 'পালাবদল'। প্রকাশিত হয় অন্বেষা পত্রিকার দ্বাদশ সংখ্যা। পাশাপাশি প্রকাশিত হয় আশিষ খুঁটিয়ার দ্বিতীয় সুবর্ণ রৈখিক কাব্যগ্রন্থ হাঁউস পুড়ি পাঁউস',বিনয় কৃষ্ণ জানার কাব্যগ্রন্থ 'বিদ্যা বুদ্ধি গুড়ুমের দ্বিতীয় খন্ড।। এদিন ছয়জন সাহিত্যিক ও শিক্ষাব্রতীকে 'অন্বেষা সাহিত্য সম্মান-২০২৫' প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নয় জন কৃতি ব্যক্তিত্বকে 'নেতাজী নবরত্ন' সম্মানে সম্মানিত করা হয়। পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ -মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল এলাকার কৃতি শিক্ষার্থীদের মেধাশ্রী পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়।এদিন কবিতা পাঠ,অণুগল্প পাঠ ,সাহিত্য আলোচনা, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনায় অংশ নেন শতাধিক কবি-সহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মী। এদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় ছাত্রছাত্রীরা আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্য, নৃত্যনাট্য, কৌতুক নাটিকা সহযোগে সাড়াজাগানো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপিত করে। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি কোলকাতার বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী প্রজ্ঞা পারমিতা, ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রদীপ কুমার মাইতি, প্রধান অতিথি ধানবাদ প্রবাসী অধ্যাপক অরূপ কুমার মাইতি,বর্ষীয়ান সাহিত্যপ্রেমী সর্বেশ্বর মহাপাত্র, সাহিত্যপ্রেমী কমল কান্ত রাউৎ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফটিক মিদ্যা, সমাজকর্মী প্রিয়াংকা চক্রবর্তী মজুমদার, পৃষ্ঠপোষক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধার্থ সিনহা,বিশ্ববিজ্ঞানী মেদিনীপুর কলেজের অধ্যাপক সুজিত দে,শিক্ষাব্রতী সুরজিৎ মাইতি, সাহিত্যিক প্রফুল্ল মাহাতো, সন্তু জানা, খগেন জানা, মিহির দন্ডপাট,, অরুণাভ বীর, জগদীশ শীট, সমাজকর্মী বিশ্বজিৎ পাল , রক্তদান আন্দোলনের কর্মী শিক্ষক সুদীপ কুমার খাঁড়া, সমাজকর্মী প্রদীপ শাসমল,অধ্যাপক অমিত মন্ডল, সাহিত্যিক অধ্যাপক সৌকত আলি শা, হরেন্দ্রনাথ ভৌমিক,কবি আশুতোষ রানা,কবি কৃষ্ণ শতপথী, ডাঃ সরোজ সিং,সাহিত্যপ্রেমী অপূর্ব দত্ত, ভাগবত মান্না,প্রণব ধাঁউড়িয়া,অধ্যাপক অমিত মন্ডল,ড.উত্তম মন্ডল, সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনরা জনেরা। অনুষ্ঠান মঞ্চে সভাপতিত্ব করেন সুখেন্দু দে, দীপ্যমান দত্ত, বিদ্যুৎ বরণ দে'কে নিয়ে গঠিত সভাপতি মন্ডলী। ক্লাবের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি শুভঙ্কর পৈড়া, সম্পাদক কৌশিক দে, কোষাধ্যক্ষ মানস পৈড়া, পত্রিকা সম্পাদক আশিষ কুমার খুঁটিয়া,মুখ্য সচেতক তাপস দত্ত, স্বাস্থ্য সচেতক ডাঃ স্বপন পাল সহ অন্যান্যরা। সুনীতা প্রধান,তিয়াস দত্ত,অম্বিকা পাত্র, বসন্ত প্রধান সহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রদীপ কুমার মাইতি।
উদ্বোধক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় ,বিশেষ অতিথি প্রজ্ঞা পারমিতা সহ উপস্থিত গুণি জনেরা নেতাজী ক্লাবের বহুমুখী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন । উল্লেখ্য এবারে সাহিত্য সম্মানে ভূষিত হন সন্তু জানা ,সিদ্ধার্থ সিনহা,সুজিত কুমার দে,অরুনাভ বীর,ফটিক মিদ্যা ও প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী মজুমদার। নবরত্ন সম্মানে ভূষিত হন শান্তিময় দে ,অবনী দে,প্রদীপ কুমার মাইতি,কমল কান্ত রাউৎ , সুবীর দত্ত,মুরলীধর দে, সুদীপ কুমার খাঁড়া, সুরজিৎ দে ও চিন্ময় মাহাতো।আরো উল্লেখ্য মাস কয়েক আগে নেতাজী ক্লাব আয়োজিত রক্তদান শিবিরে রক্তদান করেন রেকর্ড সংখ্যক ২০৪ জন রক্তদাতা।