অরুণ কুমার সাউ, তমলুক:অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ক্ষেতের ফসল ও ফুল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের ফুল চাষীদের মাথায় হাত। জল নেমে গেলেও তৈরি করতে পারেনি তেমন ফুলের চারা। এরপর মাটি ঠিক করে ফুলের চারা বসাতে বসাতে আরো বেশ কিছুদিন স…
অরুণ কুমার সাউ, তমলুক:অতিবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ক্ষেতের ফসল ও ফুল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের ফুল চাষীদের মাথায় হাত। জল নেমে গেলেও তৈরি করতে পারেনি তেমন ফুলের চারা। এরপর মাটি ঠিক করে ফুলের চারা বসাতে বসাতে আরো বেশ কিছুদিন সময় চলে যাবে। ফলে বাজারে ফুলের দাম থাকবে বেশ চড়া। একদিকে ফুলের চারা নষ্ট ,অনেক ক্ষতির সম্মুখীন তার ওপর এখন থেকে চাষিরা প্রস্তুতি না নিতে পারলে পূজোর সময় ফুল বাজারে আনতে পারবে না। এই দুশ্চিন্তায় রয়েছে ভীষণভাবে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া এলাকা। কংসাবতী নদীর তীরবর্তী অঞ্চল এ বছর ভীষণভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়ায় তেমনভাবে চাষীরা ফুলের গাছ করতে পারেনি। আবার অতিবৃষ্টির ফলে অনেকের গোড়া পচে ফুলগাছের চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে কয়েকটা গাছ বেঁচে আছে সেখান থেকে ভালো ফুলের আশা করা যায় না। ফলে যারা ফুলের সন্ধানে আসছে নিরাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাদের। তার উপর সামনে দুমাস পরেই পুজো । পুজোতে ফুলের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হবে বলে চাষীরা জানায়। যদি এরপরে আবহাওয়ার ঠিকঠাক থাকে তাহলে হয়তো পুজোর সময় ফুলের দাম ঠিকঠাক জায়গায় থাকতে পারে। যদি নিম্নচাপের কারণে আবার ভারী বর্ষা নামে সেক্ষেত্রে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ফুল চাষীরা।
পাঁশকুড়া থানার অন্তর্গত ক্ষিরাই স্টেশনের কাছে অবস্থিত দোকান্ডা এলাকা এখনো জলের তলায়।কংসাবতী নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে একাধিক চাষী গাদা ও অন্যান্য ফুলের চাষ করেন কিন্তু এ বছর নদীর জল আর টানা বৃষ্টির জলে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোন কোন অঞ্চলে জল কমে গেলেও চাষিরা এই মুহূর্তে নতুন করে ফুলের চারা লাগাবে কিনা কিছুটা ভাবছে। কারণ শ্রাবণ মাসে আরো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া থেকে ফুল কেবল জেলাতে নয় পার্শ্ববর্তী রাজ্য উড়িষ্যা, বিহার , দিল্লি , মহারাষ্ট্র পর্যন্ত রপ্তানি করা হয়। এবছর ফুল পাঠাতে পারবে কিনা চিন্তায় রয়েছে চাষীরা। কোলাঘাটের চাষী প্রভাস মাইতি বলেন আবহাওয়ার ঠিকঠাক থাকলে ফুলের চারা ভালোভাবে বসবে। আশা করা যায় পুজোর সময় ফুলের দাম কমবে।
তমলুকের ফুল ব্যবসায়ী চয়ন চক্রবর্তী বলেন ,বর্ষায় গাছ গুলি মারা যাওয়ায় গাঁদা, অপরাজিতা ও আকন্দ ফুলের আকাল তৈরি হয়েছে। গাঁদা কিলো ২০০-২৫০ টাকা , অপরাজিতা কিলো ২৫০-৩০০ টাকা, দোপাটি ১৫০-২০০ টাকা।বাজারের দামও বেশ চড়া। ব্যবসার ক্ষেত্রে খদ্দেরদের কথা রাখতে পারছি না।তমলুকের মানিকতলার ফুল ব্যবসায়ী বাপি কালী বলেন কিছু কিছু ফুলের দাম এত বেড়েছে যে চাষীদের কাছ থেকে কিনে এনে ব্যবসা করার খুব মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফুল ব্যবসায়ী সুদীপ্ত পাল কোলাঘাট ফুল মার্কেট থেকে ফুল কিনে কলকাতায় পাঠান। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো ফুলের সংকট দেখা দিয়েছে। কলকাতায় বা ভিন রাজ্যে পাঠানোর ক্ষেত্রে পছন্দমত ফুল পাঠাতে পারছি না।