Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কেশপুর কলেজে চলছে অচলাবস্থা: :বেতন বন্ধ, আন্দোলনে শিক্ষকবৃন্দ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশপুর , পশ্চিম মেদিনীপুর : কেশপুর কলেজে চলছে তীব্র অচলাবস্থা। গত মাসের বেতন না পাওয়ায় অবশেষে আন্দোলনের পথে নামলেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন।…


নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশপুর , পশ্চিম মেদিনীপুর : কেশপুর কলেজে চলছে তীব্র অচলাবস্থা। গত মাসের বেতন না পাওয়ায় অবশেষে আন্দোলনের পথে নামলেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁরা কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

ভূগোল বিভাগের এক অধ্যাপিকা জানান, “পূজোর ছুটির পর থেকেই কলেজে পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ছাত্রদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করার জন্য attendance register পর্যন্ত নেই, শ্রেণিকক্ষে চক ও ডাস্টার-এরও তীব্র অভাব। উপরন্তু গত মাসের বেতন এখনো মেলেনি, কবে মিলবে সেটাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। এই অনিশ্চয়তা ও অব্যবস্থার বিরুদ্ধেই আমরা আন্দোলনে বসেছি।”

শিক্ষক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে প্রশাসনিক উদাসীনতা নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বারবার জানিয়েও কোনো সমাধান মেলেনি। এর ফলে কলেজে পঠন-পাঠন প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কলেজে আর্থিক ও প্রশাসনিক নানা জটিলতা চলছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি অশিক্ষক কর্মীরাও ক্ষুব্ধ। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তার ঘনঘটা।

অন্যদিকে, কলেজের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের বর্তমান শোচনীয় আর্থিক ও প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি স্পষ্টতই জানিয়েছেন যে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন অ্যাটেনডেন্স খাতা, মার্কশিট) কেনার জন্য নগদ অর্থ বা ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ড’ না থাকার কারণে তাঁকে নিজের পকেট থেকে খরচ করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন,“আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কলেজের আর্থিক অবস্থার শোচনীয় চিত্র সামনে এসেছে। ক্যাশ ইন হ্যান্ড না থাকায় শিক্ষকদের ও ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় খরচ নিজের পকেট থেকে চালাতে হচ্ছে। অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া, নভেম্বরের বেতন নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। প্রশাসনিক জটিলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতিদিনের কাজ চালানোই এখন দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।”

মূল সমস্যা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, টাকা তোলার জন্য ব্যাংক অপারেটর ও ডিডিও (DDO) পরিবর্তন করা জরুরি, কিন্তু এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গভর্নিং বডি মিটিং ডাকা হলেও প্রশাসনের তরফে “এসআই সংক্রান্ত কাজ”-এর কারণ দেখিয়ে সেটি বারবার পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এই সমস্ত বিষয়ে ডিপিআই (DPI), বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (VC), আইসি (IC), জেলা শাসক (DM) এবং শিক্ষা দপ্তর সহ উচ্চ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

তিনি তীব্র হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “উচ্চ মহলের এই নীরবতা এবং প্রশাসনিক জটিলতার কারণে কলেজের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা একদিনের জন্য ক্লাস বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানালেও এখন পঠন-পাঠন চলছে বলে জানা গেছে। তবে আর্থিক জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।