Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

দোরগোড়ায় মাধ্যমিক। অকারণ চাপ নিয়ে কাজ নেই

ছবি- সংগৃহীত
------------------------------------
ঋত্বিক ত্রিপাঠী
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক : হবিবপুর সরস্বতী বিদ্যামন্দির হাইস্কুল(উঃমাঃ), মেদিনীপুর।


মাধ্যমিক পরীক্ষা মানে শিক্ষাজীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। নিজের স্কুলের …


ছবি- সংগৃহীত
------------------------------------
ঋত্বিক ত্রিপাঠী
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক : হবিবপুর সরস্বতী বিদ্যামন্দির হাইস্কুল(উঃমাঃ), মেদিনীপুর।


মাধ্যমিক পরীক্ষা মানে শিক্ষাজীবনের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। নিজের স্কুলের বাইরে বেরিয়ে নির্দিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্র তথা অন্য স্কুলের অন্য পরিবেশে পরীক্ষা দেওয়া। পরীক্ষা সেন্টার মানে নিজের স্কুলের বন্ধু ছাড়াও অন্যান্য স্কুলের পরীক্ষার্থী।  তাছাড়া, পর্যবেক্ষক, গার্ড সবাই অচেনা। তারওপর, প্রশ্ন সব আয়ত্তের মধ্যে থাকবে কি না তা নিয়ে হাজারো চিন্তা। আপাত বাধা ও সংকোচ এটুকুই। কিন্তু নিজের প্রতি ভরসা রেখে নিজেকে বোঝাতে হবে --সব কিছুই অজানা অচেনা নয়। মূল বিষয় যে সিলেবাস, যেখান থেকে প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে তা কিন্তু সব পরীক্ষার্থীর কাছেই কমবেশি জ্ঞাত।কোনও প্রশ্নই সিলেবাস বহির্ভূত থাকবে না। প্রশ্নের ভাষা হয়তোবা একটু ঘুরিয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে, বারবার পড়ে অনুধাবন করা জরুরি। নিতান্তই যদি যথার্থ উত্তর মাথায় না আসে, তখন  প্রশ্নটি একেবারে না ছেড়ে দেওয়ার থেকে উত্তরের কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করা যায়। তাতেও কিছু নম্বর পাওয়া যায়।
#
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয় দিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচনা।  বর্তমান, প্রশ্নের কাঠামো ও নম্বর বিভাজনের যে রীতি তাতে হাতে যথেষ্ট সময়। বাংলা প্রশ্নপত্রে বহু বিকল্পভিত্তিক(এম সি কিউ) প্রশ্ন ১৭ নম্বর, আর ১ নম্বরের প্রশ্ন ১৯ টি থাকে।  পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়া থাকলে এই দুই বিভাগ মিলিয়ে পুরো ৩৬ নম্বরই পাওয়া যায়। প্রশ্নের মান অনুযায়ী নির্দিষ্ট শব্দ সংখ্যায় উত্তর লেখার নির্দেশ থাকে। যেমন ১ নম্বরের প্রশ্নের জন্য ২০টি শব্দ, ৩ নম্বরের জন্য ৬০টি শব্দ। ব্যাখ্যাভিত্তিক ও রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তরের জন্য কিছু সহায়ক বইয়ের সাহায্য নেওয়া যায়। গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করলে এ বছরের সম্ভাবনাময় প্রশ্ন কী কী, তাও বোঝা যায় সহজেই। সেগুলোকে বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।  বাড়িতে নমুনা প্রশ্নপত্রের ওপর বারবার পরীক্ষা  দিয়ে শিক্ষককে দেখিয়ে নিলে নিজের ঘাটতি কোথায়, তা জানা যায়। এভাবেই নিজেকে তৈরি  করা জরুরি। শব্দসংখ্যা সামান্য কমবেশি হলে ক্ষতি নেই, তবে খেয়াল রাখতেই হবে তা যেন খুব বেশি তারতম্য না হয়। ব্যাখ্যাভিত্তিক ও রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তরের ভূমিকায় উৎস উল্লেখ করা দরকার। মানে, কোন  লেখকের কোন রচনা থেকে নেওয়া তা উল্লেখ করে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে যাওয়া ভালো। রচনাধর্মী প্রশ্নে কোনও চরিত্রের পরিচয় জানতে চাওয়া হলে চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি পয়েন্ট করে করে লিখলে ভালো হয়। প্রতি পয়েন্টের নিচে আন্ডারলাইন করে দেওয়া দরকার। ব্যাখ্যাধর্মী ও রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর কখনোই একটানা যেন না হয়, হতে হবে বক্তব্য অনুযায়ী অনুচ্ছেদ ভাগ করে করে। প্রথম অনুচ্ছেদে চুম্বক আকারে উত্তরটা ধরিয়ে দিয়ে তারপর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে যাওয়া ভালো।
#
এখন বাংলা বিষয়ে ১০০ তে ১০০ পাওয়া অসম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে  শুধু সঠিক উত্তর লিখলেই হবে না।খেয়াল রাখতে হবে উত্তর পরিবেশনের দিকেও। কঠিন ও গুরুগম্ভীর অলংকার যুক্ত ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।সহজ সরল ভাষায় উত্তর যেন হয় যথাযথ। টু দি পয়েন্ট। বেশি লিখে বেশি নম্বর -- এই ধারণা বর্তমানে একেবারেই অচল। সঠিক,ছোটো ছোটো চলিত গদ্যে শুদ্ধ বানান ও বাক্য গঠনে বক্তব্য যেন হয় সাবলীল। কাটাকুটি যেন না হয়। সর্বপ্রথম চাই প্রশ্নকে বারবার পড়া ও বোঝা। তারপর প্রশ্ন নির্বাচন করা। জানা প্রশ্নগুলোর উত্তর আগে লিখে ফেলতে পারলে আত্মবিশ্বাস অনেকগুণ বেড়ে যাবে। তখন কঠিন প্রশ্নগুলোও আর কঠিন থাকবে না। হাতের অক্ষর সম্ভবপর সুন্দর রাখা, খাতার বামে ও ওপরে যথেষ্ট ভাঁজ কিংবা মার্জিন করে নেওয়া, দাগ নম্বর স্পষ্ট করে লেখা, এক উত্তর থেকে পরের উত্তরের মাঝে দু'তিন লাইনের দূরত্ব বজায় রাখা,অতিরিক্ত পৃষ্ঠাগুলোকে সঠিকভাবে নাম্বারিং করে খাতা বাঁধা, শেষে পুরোটা আর একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলোতে নজর দিলে  উত্তরপত্র সম্পূর্ণতা লাভ করবে।
 #
প্রস্তুতি ভালো থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা সম্পর্কিত একধরনের ভীতির কারণে অনেকের পরীক্ষা মনোমতো হয় না।পরীক্ষার্থীর ভীতি এড়াতে অভিভাবক, শিক্ষকশিক্ষিকা ও শুভানুধ্যায়ী আত্মীয়স্বজনদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষা এগিয়ে এলে অনেক অভিভাবক দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাতে ক্ষতি ছাড়া লাভ হয় না। কারণ তাতে সন্তানের ওপর চাপ তৈরি হয়, পরীক্ষা খারাপ হয়। বরং এই সময়,  অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে নিছক সন্তান হিসাবে না দেখে একজন পরীক্ষার্থী হিসাবে দেখা ও ভরসা জোগান দেওয়া।  কারণ, পরীক্ষা হলে লড়াইটা যে একমাত্র পরীক্ষার্থীকেই করতে হয়।
------------