------------
গার্গী তালধী
প্রেম শব্দটি বিভিনসময়ে বিভিন্নভাবে সাহিত্য, কবিতা,চলচিত্র জগতে আলোচিত হয়ে এসেছে।কিন্তু বৈজ্ঞানিক দিক থেকে প্রেম আসলে কি?
এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা প্রেমের সম্পূর্ন ব্যাখ্যা না দিতে পারলেও বলা যায় মস্…
------------
গার্গী তালধী
প্রেম শব্দটি বিভিনসময়ে বিভিন্নভাবে সাহিত্য, কবিতা,চলচিত্র জগতে আলোচিত হয়ে এসেছে।কিন্তু বৈজ্ঞানিক দিক থেকে প্রেম আসলে কি?
এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা প্রেমের সম্পূর্ন ব্যাখ্যা না দিতে পারলেও বলা যায় মস্তিষ্কে ঘটা রাসায়নিক বিক্রয়া আমাদের মধ্যে এমন অনুভূতি জাগায়।দেখা গেছে কারো প্রতি আকর্ষিত হওয়াটা চা বা কফির প্রতি আসক্তির থেকে কিছু কম নয়।কেনো এমনটা হয়ে থাকে?
স্নায়ুবিশেষজ্ঞদের মতে প্রেমের প্রথম ধাপ ড্রাগের প্রতি আসক্তির সমান।এটি সম্পূর্ণ রাসায়নিক। কারা এই কাজটি করে থাকে -
ক)আমাদের মস্তিষ্ক ডোপামিন ক্ষরণ করে যা আমাদের মধ্যে অপরিসীম আনন্দ জাগিয়ে তোলে যখন আমরা আমাদের পছন্দের মানুষের কাছে থাকি অথবা তাকে পাওয়ার চিন্তা করি।তাই এটি আমাদের পছন্দের ব্যক্তিকে নিদারুণভাবে পাওয়ার জন্য অস্থির করে তোলে।
খ) অন্যদিকে সেরোটোনিন আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে বাড়তে থাকে।যা আমাদের ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।আমরা তখন কিছু ইতিবাচক ভাবনা নিয়ে আরো বেশি করে ভাসতে থাকি।যেটা পাগল প্রেমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।এমনকি দেখা গেছে যে এই সময়ে মস্তিষ্কে থাকা সেরোটোনিনের পরিমাণ OCD অথবা স্নায়ুরোগের সমান হয়।আমরা ভালোবাসার মানুষটির ব্যাপারে অহেতুক চিন্তা করতে থাকি।তাই এই মুহূর্তে কোনো প্রেমের সমাপ্তি খুবই বেদনাদায়ক হয়।বেদনার কারণ স্বল্প সময় এবং ডোপামিন আর সেরোটোনিনের উচ্চমাত্রার উপস্থিতিকে ধরা হয়।
গ)শুধু আমাদের মস্তিষ্কে ঘটা মানসিক চিন্তা নয় একে অপরের প্রতি শারীরিক আগ্রহ প্রথম ধাপে মানসিক চাপের সমান হয়।প্রেম আর মানসিক চাপ শুনতে একই না হলেও দুটোর চিহ্ন কিন্তু একই।দুই ক্ষেত্রেই মানুষ স্নায়বিক দিক থেকে দুর্বল হয়।হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে এবং ঘামযুক্ত হয়, হৃদস্পন্দন বাড়ে,পেট গুড়গুড় করে।যা কোনো মানসিক চাপের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।তাই অনুভব আলাদা হলেও বলা যায় শারীরিক দিক থেকে দুটো প্রায় একই।
ঘ)ক্রমশ সময় এবং নিউরোট্রান্সমিটার আর হরমোনের ক্ষরণের সাথে সাথে ভালোবাসা আর প্রেমের অনুভূতিটা পরিবর্তন হতে থাকে।ডোপামিন ক্ষরণ ক্রমশ কমতে থাকে।যার সাথে শরীর থেকে পাগলামি আর অস্থিরতা দুর হতে থাকে।সেরোটোনিনের পরিমাণ স্বাভাবিক হতে থাকে।যার ফলে অহেতুক চিন্তা দুর হয়।কিন্তু প্রশ্ন হলো তাহলে ভালোবাসা চিরস্থায়ী হয় কিভাবে?
ঙ) অক্সিটোসিন হরমোন যা পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই একে অপরের শারীরিক সংস্পর্শে এলে ক্ষরণ হয়।আর যা প্রেমের ছোঁয়া ঠিক আগের মতোই রাখে।আর এই অনুভূতি চাইলেই বহু বছর বজায় রাখা সম্ভব।যা ডোপামিনের পাগল প্রেম না দিলেও সঠিক প্রেমের অনুভূতি দিতে পারে।
যদি আপনি শারীরিক আর মানসিক প্রেমের ব্যাপারে চিন্তা করেন দেখবেন এটি খুবই মজাদার এবং কৌতুহোদ্দীপক।আমাদের মস্তিষ্ক খুব জটিল ,তাই সমস্ত ব্যাপারটা বোঝা খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
--------------