Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া সাহিত্য পত্রিকার দৈনিক সেরা সম্মাননা

#আশ্রয়হীন
ঘরের পেছনের দিকটা একটু অপরিষ্কার, ওদিকে যাওয়া হয়নি অনেক দিন। আজ খুব ইচ্ছে হলো -- একবার দু'জনে যাই, ঘুরে আসি একপাক। চোখে পড়লো একটা ছোট্ট চারাগাছ, শেকড়গুলো যেন একেবারে চিটিয়ে আছে প্রাচীরের গায়ের সঙ্গে। জানে সে…


#আশ্রয়হীন

ঘরের পেছনের দিকটা একটু অপরিষ্কার,
ওদিকে যাওয়া হয়নি অনেক দিন।
আজ খুব ইচ্ছে হলো --
একবার দু'জনে যাই, ঘুরে আসি একপাক।
চোখে পড়লো একটা ছোট্ট চারাগাছ,
শেকড়গুলো যেন একেবারে চিটিয়ে আছে
প্রাচীরের গায়ের সঙ্গে।
জানে সে অবাঞ্ছিত, আশ্রয়হীন --
তবু কিছু একটা আঁকড়ে বেঁচে থাকার অদম্য প্রচেষ্টা।
ক্ষুদ্র দেহে ভয়ডরহীন বৃহৎ একটা প্রাণ।
সারাটাদিন ঘাড় উঁচু করে, চোখে চোখ রেখে
সূর্যের সাথে কথা বলে সে;
মাখে আলো, শক্তি ছড়ায় দেহের প্রতিটা কোষে।
বাতাসের সাথে তার গভীর বন্ধুত্ব --
কানেকানে গান শুনিয়ে যায় হাওয়া,
সেও মাথা নেড়ে চলে সমান তালে।
কংক্রিটের ফাঁকে ফাঁকে
কতটুকু খাবার থাকে কে জানে!
কিন্তু তাতেই সে খুশী,
বরং বলা ভালো খুশীতে ডগমগ।
দু'দিনের শিশু, এত শক্তি পায় কোথা থেকে?
নিশ্চিৎ, বীজের‌ই মধ্যে সুপ্ত ছিল এ জীবনীশক্তি -- 
পরিস্থিতির শত প্রতিকুলতা সত্ত্বেও
মানিয়ে গুছিয়ে বাঁচতে হবে,
বড় হতে হবে তাকে।

তুমি দেখে নিও --
এই চারাগাছ‌ই একদিন হবে মহীরুহ।
হয়তো থাকবো না আমি,
থাকবে না অনেক যত্নে লালিত তুমিও,
হয়তো ভেঙে যাবে
কংক্রিটের তৈরী ঐ মজবুত প্রাচীরটাও,
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে মিশে যাবে
মাটির সাথে, মাটির মতো করে......
কিন্তু সে থেকে যাবে বীরদর্পে,
সগর্বে, মাথা উঁচু করে।
বাতাসকে সে করবে কলুষমুক্ত,
টন টন অক্সিজেন ভরে দেবে তার ফুসফুসে।
কত পক্ষিশাবক নিশ্চিন্তে
নিরাপদে জন্ম নেবে তার কোটরে,
বেড়ে উঠবে পরম মাতৃস্নেহে,
দেখবে বিশ্বকে নতুন চোখে,
কম্পিত ডানা পাবে আকাশে ওড়ার ছাড়পত্র।
কতশত ক্লান্ত পথিক
তার ছায়াতলে পাবে আশ্রয়,
স্নিগ্ধ শীতল বাতাস
ছিনিয়ে নেবে সব ক্লান্তি,
প্রাণের স্পন্দন সেদিন পুনঃ উঠবে দুলে....
আজকের আশ্রয়হীন হয়ে উঠবে
আগামীর নিরাশ্রয়ের প্রধান ঠিকানা।

-- বন্ধু