বর্তমান বিশ্ব মহামারী করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে পান ব্যবসা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাজুড়ে পান চ…
বর্তমান বিশ্ব মহামারী করোনার প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে পান ব্যবসা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাজুড়ে পান চাষিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুল চাষ সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ছাড় মেলেনি পান ব্যবসার ক্ষেত্রে। ফলে এখন ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পানচাষিরা। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পান চাষে ছাড় সহ একাধিক দাবিতে বুধবার সকাল থেকে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নার পানচাষিরা। এদিন তারা রাস্তার উপর পান ফেলে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভ দেখান।
জেলায় ধান চাষের পরেই অধিকাংশ মানুষের রুটি-রুজি পান চাষের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে পান রপ্তানি একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে এখনো পর্যন্ত পানের আমদানি- রপ্তানি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকম ঘোষণা করা হয়নি। ফলে গত প্রায় দু মাস ধরে পান বোরোজের পান চোখের সামনেই নষ্ট হতে হচ্ছে। তাই দ্রুত পান চাষে ছাড় দেওয়ার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ময়না থানার অন্তর্গত গোজিনা গ্রাম পঞ্চায়েতের স্কুল মাঠ সংলগ্ন রাস্তার উপর পান ফেলে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন পান চাষীরা। এদিন প্রায় আড়াইশো জন পান চাষী রাস্তার ওপর পান ফেলে সামাজিক দূরত্ব মেনে হাতে পোষ্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পান চাষে ছাড়ের পাশাপাশি জেলার পানচাষিদের দাবি, অন্যান্য ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করছেন এভাবে পান চাষীদের জন্যও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে। এছাড়াও জেলার অধিকাংশ পানচাষি ঋণ নিয়ে পান চাষ করেন। তাই তাদের এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত ঋণ মুকুব করতে হবে। বিক্ষোভে সামিল এক পান চাষি বলেন, "পান চাষের ওপর আমাদের গোটা সংসার নির্ভর করে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি তিনি যদি পান রপ্তানির ব্যবস্থা করেন তাহলে আমরা খুবই উপকৃত হব"। জেলা পানচাষি সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অশোক কুমার পাঠক বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে পানচাষিদের অর্ধাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। আর কিছুদিন পর হয়তো পানচাষিদের না খেতে পেয়ে মরতে হবে। তাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের পান সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থার বন্দোবস্ত করে দিতে হবে এছাড়াও সমস্ত পানচাষিদের ঋণ মুকুব সহ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে"।
