Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

লেখক ও কবি তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা গুচ্ছ

ব্যাঙ্ক কর্মীর ডায়েরি ।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
****************
গর্ব করেই বলছি আমি ব্যাঙ্কেতে  কাজ করি
করোনার ভয় দূরেতে সরিয়ে টাকা গুনেই চলি
এই টাকা নিয়ে বাজার দোকান কেনাকাটা হয় সব
আমরা যাই না বাজারে দোকানে সময় কোথায় আর।

হাতে নিয়ে টাকা রা…


ব্যাঙ্ক কর্মীর ডায়েরি ।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
****************
গর্ব করেই বলছি আমি ব্যাঙ্কেতে  কাজ করি
করোনার ভয় দূরেতে সরিয়ে টাকা গুনেই চলি
এই টাকা নিয়ে বাজার দোকান কেনাকাটা হয় সব
আমরা যাই না বাজারে দোকানে সময় কোথায় আর।

হাতে নিয়ে টাকা রাগে গজ গজ পাশবুকে ওঠে নাই
ফাঁকিবাজ বলে গালি শুনি রোজ অকথ্য ভাষা তাই
টাকা জমা রেখে মেলেনি হিসাব ঘরেতে দেখাবো কি
ছেলে মেয়ে বৌ তেড়ে আসবেই হিসাব তো এতে নাই।

আছে তো ব্যালেন্স যদি জমা করি কিসের তোমার ক্ষোভ
দুশো টাকা তুলি রোজ রোজ আসি কোথায় আমার দোষ
ঘরেতে বন্ধ পুলিশি জুলুম ব্যাঙ্কের কাজে ছাড়
তাই ঘুরে যাই পাশ বুক হাতে যাতে যার দস্তুর ।

এসো এসো ভিড় করে এসে দাঁড়িয়েছো দরজায়
লক্ষী তোমরা গ্রাহক আমার তোমাকে ফেরানো দায়
আমি আছি ভয়ে ব্যাঙ্কের কাজ সংক্রমণের ভয়
তোমার তাতে কি পাশপোর্ট নিয়ে নেই কোন সংশয়।

মোটা মাহিনাতে চাকরি করি যে এ কথা সকলে বলে
কেউ জানে নাকো মাহিনাতে ব্যাঙ্ক কার পিছনেতে আছে
দেশের কাজেতে দিনরাত নেই নোটবন্ধি তে রাত হতো
আজ করোনায় ব্যাঙ্কের কাজ সে রকমই চলে অবিরত।

তবুও বলছি সেবা করি নাকো দাম দিই চাকরির
আমার ঘরেতেও দিনশেষে ফিরি হাসি হাসি মুখে আজও
তাই বলি দরকার যত সেটুকু করো না আজ
লকডাউন শেষে আমরা থাকবো কলুর বলদের কাজ।

তোমরা বাঁচলে তোমাদেরি লাভ পরিবার পরিজন
কাজ নিয়ে এসো আমরা করবো বিপদ আসুক যতো
এই কটি দিন আমাদের ও পরিবার ভেবে চলো
গর্ব করি না কাজ করে দেব সুখে সকলেই থাকো।


................................…....……
বাজার  ।।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।
******************
শোন শোন ও বাঙালি শোন দিয়ে মন
এমন করেই করবে বাজার আর কতদিন 
দুলিয়ে লুঙ্গি গায়েতে গেঞ্জি হাতেতে ঝোলা ব্যাগ
সকাল বিকাল নাহলে বাজার ঘুম আসে না তার।

তখন ছিল ভোর সকালে অফিস যাবার দায়
নাকে মুখে দু গাল গুঁজে লাল কালিতে ভয়
এখন এসব  থোরাই কেয়ার কালির লোকই হাওয়া 
বাজার ছাড়া কোথায় আছে এমন মধুর পাওয়া ।

বেছে বেছে রুই কাতলা ভেটকি পার্সে ও 

ইলিশ 
বুকপকেটের ওজন দেখে ব্যাকগিয়ারে ফিনিশ
সর্ষে ছোলা ময়দা আটা রেশন থেকেই নেওয়া 
দু আঁটি শাক ব্যাগে ভরেই হনহনিয়ে হাঁটা।

আজকে নগদ কাল ধারেতেই বাঙালীর আছে প্রান
আজ ফিরছি কাল আসবোই নব নব স্লোগান
ঘরেতে ফিরেই লক্ষীর ভাঁড়ে আলতো আছাড় দিয়ে 
খুচরো গুনেছি এক এক করে কাল বাজার যাব বলে।

সন্ধ্যায় বৌ কাছে পেয়ে আজ বেগুনি ভেজেছে কত
পাশের ফ্লাটে বাটি চলে যায় দিনরাত অবিরত
ফুচকা এখন বাজারে মেলে না রান্না ঘরেতে আছে
তেঁতুল জলেতে লেবু বেটে বেটে হাত টক হয়ে গেছে।

শোন বাঙালি শোন আজ কবিতায় দাও মন
তারপর নয় কেনা কাটা হবে আছো তো সর্বক্ষন
রবীন্দ্রনাথ কে কখনো দেখেছো বাজারের আশে পাশে
নেতাজী কি কখনো গিয়েছে বাজারের ব্যাগ হাতে।


.………..............................
ফিরে এসো পাট।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।



ফিরে এসো পাট।
চটের ব্যাগ হাতে ইস্কুল 
বগলে শ্লেট
খাতা বই বিলাসিতা ।
অঙ্কের মাস্টার নেই
ব্লাক বোর্ড ই ভরসা
এ প্লাস বি 
মাইনাস সি
হোল স্কোয়ার ।
গঙ্গার দু পারেই
কুন্ডলী ধোঁয়া 
মাঠে মাঠে
নদী নালা
পাট ধোয়াধুয়ি
পানের বরোজ ঘেরা
সেই পাটকাটি।
একদিন সব শেষে
মুখাগ্নি লগ্নে
জ্বলে ওঠা কাটি
প্যাঁকাটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে 
কালো পোড়া কাঠ
আর ছাই রাশিরাশি।
ফিরে এসো পাট
ইতিহাস লেখা হোক
চটকল ভরুক শ্রমে
পেট ভরা ভাত
দুখান রুটি।
আবারও ফিরে দেখা
গঙ্গার পার বরাবর 
চটকলের ল্যাঙটো 
শ্রমিকের ছেলেপুলে
ইস্কুলে 
দড়িবাঁধা প্যান্ট
সাদা সফেদ গেঞ্জি ।
ফিরে এসো
এই বাংলায় ।