Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

ক্যাসিওপিয়া-সাহিত্য-পত্রিকা-দৈনিক-সেরা-সম্মাননা

( অন্তরের গল্প ).........  [  অন্দরের যুদ্ধ  ].......  ত্রিদিব  কুমার  বর্মণ  ।
       ---------------------              -----------------------          -------------------------------

     আসলে কি জানেন  ---------

       খুব …


( অন্তরের গল্প ).........  [  অন্দরের যুদ্ধ  ].......  ত্রিদিব  কুমার  বর্মণ  ।
       ---------------------              -----------------------          -------------------------------

     আসলে কি জানেন  ---------

       খুব সংক্ষিপ্ত  অথচ ভয়ংকর  দু'টি শব্দ  ---  হ্যাঁ  অথবা  না , একটি উন্মুক্ত  কিম্বা উলংগ স্বীকারোক্তি  ,  নিজের কাছেই বিচারক এবং আসামী , আমি  নিজেই একান্ত ব্যক্তিগত আদালত...... ।  সংবিধানে  কোনো স্বীকৃত  শাস্তি নেই....... ।

       রক্ত হিম করা জ্বলন্ত বর্শার মত একটি প্রশ্ন ... ।  মুখোমুখি  দাঁড়াতে হ'বে , ভাবিনি কোনোদিন ... । ভাবতে হয়েছে আজ হয়তো সমস্ত জীবন ধরেই ভাববো , মানুষের একান্ত বন্ধু  বা  শত্রু বলতে সে' তো নিজেই , কখনো সেই তাকে একান্ত নরম নদীর মত  বুকে জড়িয়ে ধরে , কখনো বাঁকানো নীল রোদ্দুরের মত তাকে ছোবল মারে ,  -- এই বিষের কোনো ওঝা নেই.... । 

       আমি একটি সরকারী কলেজে দর্শন  পড়াই... । নিজের বলতে আমার অনেকে থেকেও কেউ নেই... ।  শ্রীরামপুরের একটু ভেতরে নিরিবিলিতে আমার ছোট্ট , ছিমছাম  বাড়ি  -- ' লাবণ্য ' ... ।  থাকতে হয় একাই... ।  মনবিচ্ছেদে বনিতা , আমার সহধর্মিণী  সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাকবে পাশেই , ওর বাবার নিজস্ব বাড়িতে, -- বাড়ির নামটা ,  ' নিরালা ' .... ।

      জানেন  ;  ----  আমার জানালার পাশে একটা অদ্ভুত গাছ আছে... । ম্যাগনোলিয়া .... ।   বনিতা গাছটা নিজ হাতে লাগিয়েছে... । প্রতি বসন্তে ওটাতে একটাই ফুল ফোটে ... ।  বিয়ের ঠিক মাস খানেক পর   ও   গাছটা লাগিয়ে বলেছিল ,  ---
  '  গাছটাকে ইন্টেন্সিভ  কেয়ারে  রেখো ... ।  '  কথা বলার সময় বেশ স্নিগ্ধ চোখে আমার দিকে তাকিয়েছিল এক দৃষ্টিতে... ।

     চিকন শ্যামবর্ণ চিবুকে , গালের নিভাঁজ টোলে , বিদিশা নিশার মত চুলে , পড়ন্ত গোধূলির মিষ্টি আলোর রহস্যময় চুম্বন শাঁখের মত হাতের আংগুলের অস্তমিত সূর্যের রঙ্ থরথর  ক'রে কাঁপছে  ও , মানে  ' বনিতা ' ...... ।

    অনাগত ঝড়ের আশংকায় নিজের সাথে বহুক্ষণ যুদ্ধ করে ও  হেরে গিয়েছিলাম ..... । সমুদ্রতটে আছড়ে পড়েছিল বৈশাখী ঝড়.... ।  ওর মুখে কথা সরেনি... । শুধু ঠোঁটের বুকে থরথর  করে কম্পন  ওর... । আমার চোখের পাতায় ঠোঁট ছুঁয়ে প্রশ্ন করেছিল  আমায় , ---- ' কি গো ,  রাখবে তো ...  ! '

    এমনি করে ওর কামনা - বাসনার কথা শেষ হয়নি , তার আগেই নিবিড় আলিংগনে কাংক্ষিত আর্তি 'র কথা কানে কানে বলেছিল ,  --- '  আরো কিছুক্ষণ  থাকা যায়না  শরীরে শরীর দু'জনে... !  '  আমাদের মিলিত নিঃশ্বাস আর হৃদপিন্ডের শব্দের কুঁড়ি থেকে খসে পড়েছিল সুখের পাপড়ি.... ।  বুকের ভেতরে মুখ লুকিয়ে লজ্জা মেশানো গলায় বনিতা আরো বলেছিল ,  ---  '  চারা তো পুঁতলে ,  গাছ  হ'বে তো.. !  মাতৃত্ব পেতে চাই গো .... । '

     
      চলুন না  আজ আমার সাথে , আমার বাড়িতে ... ।   হ্যাঁ ,  আপনাকে বলছি .... ।
কেননা , আপনি তো এই গল্পের তৃতীয় চরিত্র.... । বনিতা খুব খুশী হ'বে , আপনি গেলে... ।  আজ ও আমার বাড়িতে আসবে ,  আজ রথ উত্সব না.... !  গত বছর এই দিনটিতে ও আমার বাড়িতে এসেছিল ... ।  নিজের হাতে ওর সাধের
ম্যাগনোলিয়া  গাছে জল দেয় , প্রাণ ভরে ফুলটাকে দ্যাখে.... । আজই সেই দিন , আজই সেই ফুল সম্পূর্ণভাবে  ফোটে... ।
এ'ভাবে আর কোনোদিনই ফোটে না......... ।

     সত্যিই যাবেন.....  !  খুব ভালো লাগছে..... ।  আজ দেখবেন , বনিতা  একেবারে অন্যরকম.... ।  ওর পরনে , হালকা গোলাপী রংগের শাড়ি , কানে ডালিম ফুলের দানার মত দুল ,  কপালে জম্পেশ  ম্যাচিং টিপ ,  কনুই পর্যন্ত লেস লাগানো
থ্রি '  কোয়াটার ব্লাউজ , ঘাড়ের কাছে এলানো খোঁপা ,  খোঁপায় বেলফুলের কাঁটা  , গলায় কালো পূঁথির মালা , সর্বাংগে
এসেন্সিয়াল পারফিউম.... ।  কাছে গেলেই   ম ' -  ম '  সুগন্ধি .... ।  সব মিলিয়ে অনবদ্য ...... ।

     চলুন এবার  নামা যাক্ ...... । শ্রীরামপুর  এসে গেছে ..... ।

     আচ্ছা ,  আপনি নিজের সাথে কোনোদিন যুদ্ধ করেছেন ....... !  যেখানে আপনার , নিজের ও  হাত পৌঁছায় না  ,  অন্যের
কাছ থেকে পালানো যায়  ,  কিন্তু নিজের কাছ থেকে পালাবেন কোথায় , কি ' ভাবে ........ ! 

    বনিতা  আমায় একটা প্রশ্ন করেছিল ,  যার উত্তরে  হ্যাঁ  বলা শক্ত ,  না   বলা আরো বেশী কঠিন ........ ।

    আমরা একবার দেবানন্দপুর গিয়েছিলাম দু 'জনে..... । ব্যান্ডেল নেমে রিক্সায় যেতে যেতে  ও  বলেছিল  ; -----
'  আচ্ছা  দীপ ,  তুমি তো বলো  --  ভালোবাসা বেঁচে থাকে মনে ,  ভালোবেসে বীজ পুঁতলে  কি  চারা হ 'তে কত সময় লাগে.... !  '
     আমি একটু   চম্ কে   ওর দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম  ;  ---- '  হঠাৎ   এ '  প্রশ্ন  কেন ....... !   '

     অসাড় দেহ কখনো জ্বলে ..... ।  ভাবলে অবাক লাগে .... ।  সত্যি তো ,  যেমন জ্বলে মরামানুষ , আগুনে.... । একেবারে ছাই ,  মিশে যায় মাটিতে ... ।  দীপের মনটা এখন জ্বলছে .... ।  দীপ ভাবছে , এ'ভাবেই পুড়বে সারাজীবন .... ।  এ '  জ্বলনের কোনো দমকল আছে কি ..... !   নেই ........ ।

     নিজেকে বড় অসহায় লাগে ..... । দীপের মতো অনেকেই জ্বলছে...... ।  যেমন ওই ম্যাগনোলিয়া গাছটা.... । দু ' দুটো বছর জ্বলছে .... । অথচ পাতা মেলে বেশ সজীবতা রয়েছে..... ।   ওকে দেখে কেউ বলবে না ,  যে  ওর মধ্যেও দুঃখ কত...।

    জানালার ফাঁক দিয়ে দীপ তাকিয়ে.... । ভাবছে ওর কথা .... ।  কখনো বা  বনিতা  আসার  অপেক্ষায়..... ।  রাত প্রায় নয়টা
ছুঁই ছুঁই.... । ভাবনার বিরাম নেই...... ।

    দরজাটা খোলাই ছিল ...... ।  বনিতা না জানিয়েই  ঘরে ঢুকল...... ।  দীপ তেমনভাবে দ্যাখেনি... ।  আনমনা ভাব... ।  মনটা তখন অন্য কোনো স্থানে.... ।   বনিতা  প্রশ্ন করল  ; ---- ' এসেছি , খেয়াল করো নি.... !  '
দীপ বলল , --- '  রাতে থাকবে .... !  '   জবাব বসাল বনিতা  ; --- '  দু ' টো  অন্তর যদি একান্তভাবে কামনা - বাসনা করে
এই পূণ্যতিথিতে ,  সুফল আসবেই .... ।  '  আরো যোগ করল কথাকলি , --- '  আমাকে আমার বন্ধুরা বলেছে... । '

   বনিতার হাতদু 'টো  বুক সমান সমান্তরাল ..... । আকুতির আহবান....... । দু ' জনার অন্তরের মি