দৈনিক সেরা কলম সন্মাননা প্রতিযোগিতা
বিভাগ: গল্প
শিরোনাম : অবক্ষয়
কলমে : গৌতমী ভট্টাচার্য
*********************
জীর্ণ প্রাসাদোপম অট্টালিকার গেটের পাশে মার্বেল ফলকে "রায় বাহাদুর হেমকান্ত রায়"লেখা শব্দগুলোতে সযত্নে হাত ব…
দৈনিক সেরা কলম সন্মাননা প্রতিযোগিতা
বিভাগ: গল্প
শিরোনাম : অবক্ষয়
কলমে : গৌতমী ভট্টাচার্য
*********************
জীর্ণ প্রাসাদোপম অট্টালিকার গেটের পাশে মার্বেল ফলকে "রায় বাহাদুর হেমকান্ত রায়"লেখা শব্দগুলোতে সযত্নে হাত বোলাতে লাগলেন সিদ্ধার্থ দত্ত।মনক্যামেরায় ভেসে উঠল অজস্র ছবি।
ইংরেজদের সঙ্গে ব্যবসাবানিজ্য ও হৃদ্যতার ফলে " রায় বাহাদুর" হেমকান্তর আর্থিক সংগতির পর কলকাতার উপকন্ঠে অনেক স্বপ্ন আশা ভালোবাসা দিয়ে তার নিজের পরিবার ও অনেক নিরাশ্রয়ের অন্নদাতা আশ্রয়দাতা হয়ে এই অট্টালিকাটি বানিয়েছিলেন।
শিক্ষাদীক্ষা সংস্কৃতিরচর্চা দোলদুর্গোৎসব পালনে উচ্চবিত্ত বনেদিয়ানার আভিজাত্যে সমাজে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল পরিবারটি।
কিন্তু স্বাধীনোত্তর কালে ক্রমশ ব্যবসাবানিজ্যর অবনতিতে আর্থিক অস্বাচ্ছন্দ্যে ভাঙন ধরতে শুরু করল হেমকান্তের স্বপ্ন ভালোবাসা আশা দিয়ে তৈরি যৌথ পরিবারের। আশা নিরাশা অবক্ষয়ে আভিজাত্যের বড়লোকি খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে পড়ল সাদামাটা মানসিকতা।
কালের চক্রান্তে জীবনের ঘূর্ণাবর্তে বৃহত্তর স্বার্থগুলো ক্রমশ কুক্ষিগত হয়ে সংকীর্ণ হতে থাকল ছোট্ট পরিসরের মধ্যে।হেমকান্তর পরবর্তী দুই প্রজন্ম এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও আলোকপ্রাপ্ত সুশিক্ষিত চতুর্থ প্রজন্ম জীবিকার প্রয়োজনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল স্বদেশেও বিদেশে।শিকড়ের টান ক্ষীণ হলো।অভ্যাস বশত পারিবারিক মহিমার চর্বিত চর্বন করলে ও তাকে রক্ষা করার দায় কেউ নিল না।ফলে শতাব্দী প্রাচীন গৌরবোজ্জ্বল বাড়ীটি চলে গেল প্রমোটারের দখলে। ভাগবাটোয়ারা বুঝে নিতে কেউই পিছপা হলো না।
সিদ্ধার্থ দত্ত এই পরিবারেরই আশ্রয়ে ও বদান্যতায় আজ প্রখ্যাত বাস্তুবিদ হয়েছে। এমনিই অদৃষ্টের পরিহাস আশ্রয়দাতাকে ভেঙ্গে বহু মানুষের ছোট্ট স্বপ্ননীড় ফ্ল্যাটবাড়ী রূপায়নের দায়িত্ব দিয়েছে প্রমোটার তাকেই।ঐতিহ্যশালী বাড়ীর অবক্ষয়ে দগ্ধ হতে থাকে সিদ্ধার্থর মন।