Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার এর পাক্ষিক সেরা গল্প সম্মাননা

পাক্ষিক  প্রতিযোগিতা  পর্ব  - 01
বিষয়  ----উন্মুক্ত
অনুগল্প
অনু গল্পের নাম ---- ছোটুর মানবিকতা
লেখায় -----সুমিতা বেরা
24-06-2020

ছোটু হলো  আট  বছরের একটি ছোটো ছেলে ,  ওর স্কুল এখন ছুটি ,  আচমকা ছুটি.. .  !  ও তো অবাক হয়ে গেছিলো …


পাক্ষিক  প্রতিযোগিতা  পর্ব  - 01
বিষয়  ----উন্মুক্ত
অনুগল্প
অনু গল্পের নাম ---- ছোটুর মানবিকতা
লেখায় -----সুমিতা বেরা
24-06-2020

ছোটু হলো  আট  বছরের একটি ছোটো ছেলে ,  ওর স্কুল এখন ছুটি ,  আচমকা ছুটি.. .  !  ও তো অবাক হয়ে গেছিলো ! পরে বাবা বুঝিয়ে বলেছিলেন এখন অনির্দিষ্ট কালের জন্য সব ছুটি.. কেন ?  জিগ্যেস করতে বাবা  বলেছিলেন  ও তুমি বুঝবেনা .. বড়ো হও জানতে পারবে
 এখন সবার  ছুটি  ! বাবারও ছুটি , মায়ের স্কুল  বন্ধ  !  . ছোটুর ভালো লাগছে না ঘরে থাকতে.. . -- বন্ধুদের কথা মনে পড়ে ওর !  কেউ খেলতে ডাকতে আসেনা  আজকাল  ! পাড়ার  মোড়ে দাদারা বিকেলে  কেউ খেলে না  ! .. ভোরবেলা কাগজওয়ালা  কাগজ দিতে আসে না .. দুধওয়ালা  দুধ দিতে আসেনা..  কাজের মানদা মাসি   কাজ করতে আসে না !  সবার  নাকি এখন ছুটি.. মনে  মনে ভাবলো  ইস সব দিন গুলো রবিবার হয়ে গেলো   ! কি মজা !
          বাবা বলছিল  -----  এসো  ছোটু আমরা ঘরে খেলবো,  লুডো নিয়ে এসো .. ওর মা বাবা এখন  দুজনেই সারাদিন বাড়ি থাকে...তাতেই  ওর খুব মজা  !... ঘরের ভিতরেই ওরা তিন জন লুডো খেলে , ক্যারাম  খেলে..
একদিন সকালে ছোটু সকালের জলখাবার খাওয়ার পর দোতলা ব্যালকনিতে এসে দাঁড়িয়েছে.... রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা !কোনো লোকজন   সাইকেল  বাইক.. কিচ্ছু  নেই  !
  কদিন ধরেই   সে  এমন দৃশ্য দেখছে   !   ছোটু দেখলো ওদের বাড়ির উল্টো  দিকে রাস্তার এক কোনে যে চায়ের   দোকানটা  সেটাও কদিন ধরে বন্ধ ! পাড়ার  খোঁড়া কুকুর টা মাঝে মাঝে  বন্ধ দোকানের কাছে যাচ্ছে  আবার  ওই গ্যারেজের পাশে ওর কতগুলো ছোটো ছোটো  বাচ্চা আছে ওদের কাছে গিয়ে বসছে.....  ছোটু বুঝলো ---- "ওদের  খিদে পেয়েছে    বাচ্চা গুলো কুই কুই করে কাঁদছ
 , কে দেবে খাবার !  দোকানপাট  বন্ধ  !  রাস্তায় লোকজন নেই   !  খাবার কে দেবে ?  দোকান থেকে বিস্কুট  কেকের  টুকরো পেতো   কিন্তু সেটা তো বন্ধ.. ছোটুর খুব কষ্ট  হচ্ছে.. .. . হটাৎ সে লক্ষ করলো ---  স্কুল যাওয়ার পথে  রাস্তার ধারে  যে একমাথা উস্কোখুস্কো চুল আর  গোঁফদাড়ি ভরা দাদু টাকে চুপচাপ বসে থাকতে  দেখতো  ..! অনেকে পাগল বলে ঢিল মারতো  ! সেই   পাগল দাদুটা ওদের দোতলা বারান্দার ঠিক নিচে রাস্তায়  দাঁড়িয়ে আছে  !  একদৃষ্টে ওর দিকে তাকিয়ে আছে... কি করুন মুখ  ! . খিদে পেয়েছে নিশ্চয় .  !.. .   ছোটুর  ছোট্ট হৃদয় টা কেঁদে উঠল  !. ও তাড়াতাড়ি  ঘরে চলে গেলো ---  কি করবে  এখন !  ওই দাদুটার খুব খিদে পেয়েছে যে..  ছোটুর কান্না পেতে লাগলো  -- হটাৎ  ওর মাথায় একটা বুদ্ধি এলো  !  ও দেখলো  ওর মা  এখন  বাথরুমে ,   বাবা ঘরে  একমনে  টিভিতে খবর শুনছে..   ও আস্তে আস্তে  রান্না ঘরে গিয়ে  হটপট খুলে  দুটো পরোটা   তাতে  খানিকটা আলুরদম    নিয়ে  ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ালো  ----  শুনশান রাস্তায়  তখনো  ব্যালকনির দিকে মুখ তুলে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে  পাগলাদাদু  ! ছোটু চুপিচুপি একটা পুরোনো খবরের   কাগজের ওপর  পরোটা আর আলুরদম   নিয়ে একটু ঝুকে কাগজটা ফেলতেই এক  অভাবনীয় ঘটনা ঘটে গেলো ! কোথা  থেকে সেই ল্যাংড়া কুকুরটা   চলে এলো  !.. পিছন পিছন  ছোট্ট ছোট্ট   কুকুর ছানা....!. রাস্তায় পরে আছে পুরোনো কাগজ  তার ওপর দুটো পরোটা  আর   রাস্তায় ছিটকে পড়া ,  খানিকটা পরোটায় মেখে যাওয়া.. আলুর দম  !---পরম নিশ্চিন্তে খাচ্ছে  এক দিক দিয়ে ওই পাগলা দাদু  আর  অন্য  দিক  দিয়ে বাচ্চা গুলো সমেত খোঁড়া কুকুর মা..! কোনো ঝগড়া নেই মারামারি নেই  !   ছোটুর ছোটো হাতে সাবধানে  দেওয়া অল্প খাবার  কি পরমানন্দে খাচ্ছে একই পাতে  পাগলা দাদু আর কুকুর পরিবার  !! ছোটুর আনন্দে দুচোখ  চক  চক   করে উঠল ! ও আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠল  !. মনে মনে বললো  আবার কাল দেবো .. তোমরা এসো গো... ছোটুর ছোট্ট মানবিক মুখটা আনন্দে ভরে উঠল  !

                             সমাপ্ত

🌷পাক্ষিক সেরার সেরা গল্প 🌷