পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব-২
গল্প/অনুগল্প
বিষয়- অলৌকিক
বিভাগ- অনুগল্প
অণুগল্প- মা
সুমিতা চৌধুরী
তাং-০৭\০৭\২০২০
আগামীকাল মায়ের বাৎসরিক কাজ। তীর্থর আজ মাকে ঘিরে সমস্ত স্মৃতি মনে ভিড় করে আসছে বারবার । আজকের দিনটাও যেন সেই একবছর আগ…
পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব-২
গল্প/অনুগল্প
বিষয়- অলৌকিক
বিভাগ- অনুগল্প
অণুগল্প- মা
সুমিতা চৌধুরী
তাং-০৭\০৭\২০২০
আগামীকাল মায়ের বাৎসরিক কাজ। তীর্থর আজ মাকে ঘিরে সমস্ত স্মৃতি মনে ভিড় করে আসছে বারবার । আজকের দিনটাও যেন সেই একবছর আগের দিনটার মতোই । সন্ধ্যা থেকে তুমুল ঝড়বৃষ্টি । মায়ের কথা ভাবতে ভাবতেই কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল তীর্থ রাতে। হঠাৎ বাজ পড়ার শব্দে, আর মাথার সামনের জানলা দিয়ে আসা বৃষ্টির জলের ছাটে ঘুম ভেঙ্গে গেল । তাড়াতাড়ি জানলাটা বন্ধ করতে যেতেই সামনের জবাগাছটার দিকে তাকিয়ে তীর্থর দমবন্ধ হওয়ার জোগাড় । জবাগাছের সামনে মা দাঁড়িয়ে আছে সেই আটপৌড়ে লাল চওড়া পাড়ের সাদা শাড়িটা পড়ে । তীর্থর সারাশরীর কুলকুল করে ঘামছে, গলার স্বর বন্ধ হয়ে গেছে, তাই কাউকে ডাকতেও পারছে না। হৃৎপিণ্ডটা যেন কানের কাছে মাদল বাজাচ্ছে । কোনোমতে নিজে বাঁচতে, শরীর ও মনের সমস্ত শক্তি একজোট করে জানলাটা সশব্দে বন্ধ করে আপাদমস্তক মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ল চুপচুপে ঘামে ভেজা শরীরেও। ভয়ে ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে, তীর্থ সজ্ঞানে ছিল না। ভোরের দিকে তার তন্দ্রার ঘোর ভাঙে । তখন আলো ফুটেছে সবে। কোনো অমোঘ টানে অনিচ্ছা স্বত্তেও তীর্থ জানলা খুলে জবাগাছটাকে দেখতে গেল। ভোরের আলোয় দেখল একটা লাল পাড় সাদা শাড়ি ঝড়ে উড়ে এসে জবাগাছটাকে এমনভাবে জড়িয়ে রেখেছে যেন এক মানুষের আদল নিয়েছে। বৃষ্টিতে শাড়িটা ভিজে লেপ্টে রয়েছে গাছটার সাথে। ডাকাবুকো বিজ্ঞান মনস্ক তীর্থ নিজের নির্বুদ্ধিতায় নিজেই হেসে উঠল। আস্তে আস্তে ওখান থেকে সরে এসে মায়ের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করে বলল,"আমার ক্ষণিকের মানষিক দুর্বলতার জন্য আমায় ক্ষমা করো মা। তুমি ভূত কি করে হবে? ভূত মানে তো অতীত । তুমি আমার কাছে কালও যা ছিলে, আজও তাই আছো, আগামীতেও তাই থাকবে। তুমি আমার অস্তিত্ব । অস্তিত্ব কি ভূত হতে পারে? আমার সাথে এভাবেই থেকো সবসময় মা, আমায় সঠিক পথ দেখিয়ে ।"