Page Nav

HIDE

Post/Page

Weather Location

Breaking News:

latest

কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক তরুণ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা গুচ্ছ

মেঘের সঙ্গে আড়িআর কি বলতে পারিরোদ খসিয়ে বৃষ্টি আনেএমন সে আনাড়ি।
মেঘের সঙ্গে ভাবলতায় পাতায় থাকনীলাকাশে পেঁজা তুলোঘুরেই শুধু যাক।
এই তো আর কত দূরছাদের পরে ছাদ জুড়লেহোক না সমুদ্ররহাতেই ধরি মেঘ।
কালিদাসের পিওন ছিলআমার কেন নয়মেঘ তোর সঙ্…

 


 মেঘের সঙ্গে আড়ি

আর কি বলতে পারি

রোদ খসিয়ে বৃষ্টি আনে

এমন সে আনাড়ি।


মেঘের সঙ্গে ভাব

লতায় পাতায় থাক

নীলাকাশে পেঁজা তুলো

ঘুরেই শুধু যাক।


এই তো আর কত দূর

ছাদের পরে ছাদ জুড়লে

হোক না সমুদ্রর

হাতেই ধরি মেঘ।


কালিদাসের পিওন ছিল

আমার কেন নয়

মেঘ তোর সঙ্গে আর নয়

কোন ই বাক্য বিনিময়।


আসবি যখন জলে

কথায় কথায় নাইতে নামার ছলে

শরীর ভরে মেঘে মেঘে

কলসি ভরা জলে।


জানি থাকবি না বহূক্ষন

আবার তো মেঘের আমন্ত্রণ 

এ কেমন বন্ধু ওরে তুই

জল করে থই থই।


তার থেকে এই তো ভালো

নীল সাদা যা তোর পছন্দ 

আমার রঙে মিলতে এলি কই

রঙের খেলা চলে অনন্তই ।


আজ দগ্ধ দহন জ্বালা

কাজ হয়নি সারা

হয় নাকো কাজ সারা

জীবন এমন ধারা।


বন্ধু হতেই পারিস

শত্তুরতা তে নেই পাপ

তোর কাজ তোকেই মানায়

আমি নিরুত্তাপ ।


মেঘ ।

তরুন চট্টোপাধ্যায় ।

**********************

প্রেম পিরিতি আসে না আজ

শুনে রাখুন গোঁসাই মশাই 

লতাপাতার ইস্কুলেতে ঝুলছে তালা

দিদিমনির টিকিটি নাই,

কবে যেন খুলবে এসব

থাক সে সব দেরাজ ভরে

এখন শুধু তেল ঢেলে যাও

রাজা রানির পদের তলে।


 মন্দির তো তৈরি হবে

করোনা কাঁটা আটকায় নি

সাষ্টাঙ্গে প্রনাম করি

প্রনতি আজ দেশের মশাই ,

লাশের পরে লাশ হাঁটছে

জীবন চলে আহ্লাদেতে

ভোট বাক্স ভরবে এবার 

মরা মানুষের আঙুল ছাপে।


বুদ্ধিজীবি ঘরে ঘরে

চরিত নিয়ে নো কেরামতি 

কাক এঁকে কেউ জীবন ধারা

কেউ এঁকেছেন হাওয়াই চটি,

বুদ্ধি বেচি মাছ বাজারে 

আনাজ বেচে স্নাতক যুবা

লকডাউনের চাবি খুঁজি

কাঁদছে কেন বসুন্ধরা ।


হাসপাতালে বেড খুঁজছি

পিপি ঢাকে বদ্যির মুখ

অক্সিজেনের নল এঁকে আজ

শ্বাস প্রশ্বাস সিঁড়ির অসুখ।


কার হাতে আজ যাদুকাঠি

কে লিখছে জীবন চরিত

তুলসী পাতা চোখে দেব

পাইতো আগে লাশ কখানি।


চলছে যেমন গুছিয়ে কলম

কাব্য লেখে সব আনাড়ি

লেখার কথা ছিল যাদের

বন্ধ সে সব কলম দানি,

দেবারতি বন্ধ যে আজ

মারন রোগে কি ঝকমারি

বন্ধ দোরে টোকা দিয়েও

দ্বার খোলেনি গৃহস্বামী ।


আসবে নাকি সুদিন আবার 

বাজার জুড়ে শুনছি বানী

বুদ্ধি বেচা মানুষ যে সব

আসবে তখন নয়নমনি,

দ্বিতীয় স্বাধীনতার পরশ

পেয়ে গেছি সবুজ খামে

আনন্দ আর আহ্লাদেতে

তা ধিন ধিন নাচছে জনে।


আহ্লাদে আজ অট্রহাসি

আহ্লাদে আজ অট্রহাসি 

সিংহ কখন শিয়াল হবে

শিয়াল কখন বাঘ বাবাজী,

রাজার অসুখ প্রজার অসুখ

কেমন অসুখ কে বা জানে

দূরের থেকেই দাঁড় টানছি

খেয়া বাঁধা নদী ঘাটে।


আহ্লাদে আজ অট্রহাসি ।


তরুন চট্টোপাধ্যায় ।

********************

 শুনো শুনো জনগন শুনো দিয়া মন

অপূর্ব এক কাহিনী সবে করিব বর্নন

কোথা থেকে এলো এক ক্ষুদ্র ভাইরাস

জনগনে সব মতি ধ্বংস করে আজ,

সকালে বিকালে সে ঘরবন্দি থাকে

কদাচ বাহিরে গেলে মুখে মাস্ক আঁটে

সদা ভয় যদি হয় জ্বর সর্দি বা কাশি

ঘরেতে কুলুপ এঁটে দেব দ্বিজে মতি,

বাকি সব রোগ বালাই আসে নাকো আজ

করোনা দেবী একা করিতেছে সংহার। 


যদিও বা রোগ জ্বালা ধরে নিলো তাঁকে

অ্যাম্বুলেন্স হেঁকে দেয় দশ হাজার মুদ্রা তে

আধমরা হয়ে সেতো পৌঁছে যখন গেলো

হাসপাতালে শয্যা নাই আর এক ঠাঁয়ে চলো,

ঘুরিতে ঘুরিতে সে যে ইস্টনাম জপিতে

সরকারী হাসপাতালে জায়গা জোটে শেষে

তারপর গাদাগাদি লাশ আসে যায়

ঘরের লোকের সাথে কথা নাহি হয়,

সরকারী নথিপত্র সরকারের খরচে

গৃহদেবতা তুললে মুখ ঘরে ফেরে শেষে।


করোনা দেবীর শ্রীচরনের পায়ে পায়ে 

ফুল মালা বিল্বপত্ত রাখো একে একে

কুপিত হইলে দেবী রক্ষা নেই আর কোনও

শ্যাম বাবুর দেহ যাবে রাম বাবুর অন্তেষ্টি তেও,

টাকা পয়সা ঘর বাড়ি যা করেছো একে একে

সব মায়া ত্যাগ করে প্লাস্টিক মোড়া থাকে

ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন যত ফাটাও না গলা

করোনা দেবী অট্রহাসি বাকি সব ই বৃথা,

জিডিপি বা অর্থ নিতী চীৎকার ফুৎকারে

নিমিষে সব শেষ সংক্রমণের হাত ধরে।


তাই বলি জনগন শুনো দিয়া নিজ নিজ মন

দূরত্বটা বাড়িয়ে দিতে করবে না লঙ্ঘন 

মুখেতে জোর করে এঁটে রাখো মাস্ক 

ঘন ঘন স্যানিটাইজারে ধৌত কর হাত,

সকলে আমরা সবার জন্য সকলে এখন পর

নিজে বাঁচলে বাবার নাম বুঝেছে যে ঘর

কত পাপ কত দম্ভ হিসাব করিছেন তিনি

যত করো মঙ্গালতি দেব দ্বিজে মতি,

যদি তুমি টিঁকে যাও ভাগ্যবলে বাঁচা

মানুষের পাশে থেকো সরিয়ে সব ধূর্ততা।


শ্রী শ্রী  করোনা মাতা মিনতি তোমায় করজোড়ে 

আজ যদি সরে যাও বিপন্নপৃথিবীর সব ঘর থেকে

কথা দিলাম জনতার দরবারে পূজিত হবে তুমি

প্রকৃতির গায়ে হাত কখনো পড়বে না তা জানি,

লোভী পাপী নারীলোভী পিশাচের এই পৃথিবীতে 

মানুষের জায়গা তুমি করো নাও তোমার ইচ্ছা তে

ফুল ফল  লতা পাতা যা কিছু প্রকৃতির দান

সব কিছু কারো নয় ওসব শুধু শিশুদের প্রান,

সব শিশু সব মাতা এক করে দাও তোমার কল্যানে

দুধে ভাতে বেড়ে উঠুক ওরা ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে ।


এখন চলি যে আজ তোমার পাঁচালী করে শেষ

নতূন এক প্রভাত আসুক স্বপ্ন ভরা সবুজ এই দেশে।


করোনা মাতার পাঁচালী।


তরুন চট্টোপাধ্যায় ।

************************

 দেবীদের হাতে ভ্যাকসিন 

দেবীদের হাতেই মৃত্যুবান

দেবীরা যদি দেয় বাঁচিয়ে 

দেবীরা দেয় অমৃত পান।


দেবীরা এখন মর্থ ভূমিতে

দেবীরা পরেছে সাদা পোষাক

দেবীরা দেখছি হাতে তে নিডিল

দেবীরাই দেবে ইনজেকশন ।


দেবীদের চোখে পাহাড়ের ঘুম

দেবীরা ছুটেছে দিন ও রাত

দেবীরা বাসা বাড়িতে ঢোকে না

দেবীরা শরীরে বিষ মাখে।


দেবীদের আজ ফুল ফোটানোর দিন

দেবীরা আজ দিয়ে গেছে হাতে ভ্যাকসিন ।


ভ্যাকসিন ।


তরুন চট্টোপাধ্যায় ।