#লকআউট_বনাম_লকডাউন#সোমা_ত্রিবেদী
স্টেশন চত্বরের ফাঁকা দোকান গুলো যেন পরিহাস করছে।
অনেকেই যেতে আসতে দু পাঁচটাকা আমাদের দিতো। তাতে আমার আর সুরঞ্জনার ভালোই চলতো। আরে সুরঞ্জনাকে চেননা? সুরু, আমার একমাত্র সঙ্গী ভীতু দিশি কুকুর। আমাদে…
#লকআউট_বনাম_লকডাউন
#সোমা_ত্রিবেদী
স্টেশন চত্বরের ফাঁকা দোকান গুলো যেন পরিহাস করছে।
অনেকেই যেতে আসতে দু পাঁচটাকা আমাদের দিতো। তাতে আমার আর সুরঞ্জনার ভালোই চলতো। আরে সুরঞ্জনাকে চেননা? সুরু, আমার একমাত্র সঙ্গী ভীতু দিশি কুকুর। আমাদের কেউ কোথাও নেই, দুজনে স্টেশনে বাস করি। কখনও দোকানিদের লেখার কাজ বা ফর্মফিলাপ করে দিলে, ওরা খাওয়াতো আমাদের। ভালোই চলছিল হঠাৎ সব থেমে গেল।
দুদিন আমরা বিস্কুট খেয়েই কাটালাম। আমার নাহয় না খাওয়ার ধাত, সুরু পারে? সুরঞ্জনাকে বললাম স্টেশনে পড়ে থাকলে খেতে পাবি না, তুই যা আমাকে ছেড়ে, তা সে বেটি নড়েনা আমায় ফেলে।
বাধ্য হয়ে বহু বছর পর বার হলাম স্টেশন থেকে ভিক্ষা করতে। কোথায় যে গেছি কে জানি চেনা ঠেকলো চোখে। সুরুও চলে পিছনে। বেশিরভাগই পয়সা দেয়! আমরা পয়সা নিয়ে কি করবো?
ঘুরতে ঘুরতে একবাড়ি গেলাম আমাদের খেতে দিলো, সুরুর সেকি আনন্দ। তারপর হাজারো জিজ্ঞাসা তাদের। যতো বলি যাই যাই সে তারা ছাড়েনা। তারপর এক বুড়িকে আনলো সে আমার দিকে তাকিয়েই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো আমারও তাকে বড়ো চেনা মালুম হলো। তার দুচোখে দেখেই চিনতে পারলাম এ আমার সেই সুরঞ্জনা। ও এখানে কিভাবে এলো?
সুরঞ্জনাই বলল, সেবার আমার কারখানা লকআউট হতে মাথাটা কেমন বিগড়ে গেলো, কোথায় যে চলে গেলাম আর খোঁজ পাওয়া যায় নি। সেই থেকে সুরঞ্জনা লোকের বাড়ি কাজ করে আর আমাকে খুঁজে বেড়ায়।
আমার সব ভুলে গেলেও মনের গভীরে থেকে গিয়েছিল সেই নাম, তাই হয়তো ওই চারপেয়েটাকে অমন নাম দিয়েছিলাম। যদিও সব কথা আমার মনে পড়ছেনা তবুও আবছা আবছা খেয়াল পড়ছে। এক লকআউট আমার সব কেড়েছিল এই লকডাউন আমাকে সব ফিরিয়ে দিল। এগোলাম নতুনভাবে আমি ও আমার দুই সুরঞ্জনা।
___________
(শব্দ সংখ্যা-১৪৫)