শব্দের অনাদি বার্তারোজী নাথ
অষ্টপ্রহর লুকোচুরি খেলা শেষ হলে কখন যে শব্দরা ঘুমিয়ে পড়ে নীল বাসন্তী ছায়ায়।
তরঙ্গ মনে উদাসীন সূর্য তার সোনা রোদ প্রলেপ লাগিয়ে আমাকে নিশুতি রাতের ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে।
জেগে উঠা শব্দরাও প্রভাতফেরী শ…
শব্দের অনাদি বার্তা
রোজী নাথ
অষ্টপ্রহর লুকোচুরি খেলা শেষ হলে কখন যে শব্দরা ঘুমিয়ে পড়ে নীল বাসন্তী ছায়ায়।
তরঙ্গ মনে উদাসীন সূর্য তার সোনা রোদ প্রলেপ লাগিয়ে আমাকে নিশুতি রাতের ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে।
জেগে উঠা শব্দরাও প্রভাতফেরী শেষে কানে কানে বলে যায় ------ এবার সকাল হলো , শুরু হোক পথচলা।
কৈশোরকে হার মানিয়ে ঝড়ো বসন্ত ঝাঁপ খোলার সজল বার্তা দিয়ে যায়।
সহস্রধারার সপুষ্পক সৌন্দর্য জানা অজানার চাঁদরে ফুল কথার বেহিসেবী আলপনা এঁকে দেয়।
মনের ভেতরের ঘুমন্ত বা অব্যক্ত শব্দের নীরব মিছিলও যেন আবেগের নদী হয়ে বালিয়াড়ি ছুঁয়ে যায়।
কত শত পুরোনো প্রেম-বিরহের কাব্যকথা এসে বলে যায় ---------- সেই অনাদি মহাকাশে নিজের প্রতিচ্ছবি সনাক্ত করে নিতে।
কখনও গানে গানে , কখনও পয়ার ছন্দে শব্দেরা আমাকে জাগিয়ে দিয়ে বলে দেয় আবারও একটা নতুন ভোরের ছবি আঁকতে ------- একটা বিজয় মালার প্রতিবিম্ব এঁকে দিতে।
..............................................................................
: এ কোন অনাদি বন্ধন ?
রোজী নাথ
ভুলেই তো যেতে চেয়েছিলাম অদৃশ্য সেই বাঁধনকে।
সে আর পারলাম কোথায় বলো?
সেই অনন্তকালের জপের মালা হয়েই তো রয়ে গেলে আমার সারা অন্তরের পরতে পরতে।
বারে বারে ভুলতে চেয়ে যতই সমুদ্রগামী হতে চেয়ছি;
বহু দূরের নীলাচল সুখে যতই বিভোর হতে চেয়েছি , ততই শয়নে স্বপনে আমাকে তুমি শ্রীরাধিকার আঁচলে এনে দিয়েছো।
এড়িয়ে যেতে চেয়েছি যত , ততই যে পুরোনো স্মৃতির পাতাগুলো আরো বেশি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আমাকে করে দিয়েছে নীল দিঘির আয়না।
এ কেমন টান ? এ কেমন অদৃষ্ট বন্ধন ?
সর্বশক্তি দিয়ে আমার সব স্মৃতির ডাইরী মুছে নিতে চেয়েও অবলীলায় আবার হাতে তুলে নেই সেই রঙ তুলি।
কেন যে বারে বারে সামনে এসেই দাঁড়াও প্রতি পদে পদে?
এ কি কোনো ভ্রম , নাকি মন ভ্রমরার গুঞ্জরণ ?
নিজেকে এক ঘোরের রাজ্যেই আবিষ্কার করি
তুমিময় সেই মায়াবী ইন্দ্রজালিকার রাজ্যে।
যতটাই দূর দ্বীপবাসিনী হতে চেয়েছিলাম , ততটাই তো বাঁধা পড়ে গেছি তোমার অনন্ত পরিধিতে।
কি শিরোনাম দেবো বলো এই বাঁধনের?
.........................................
...শিক্ষক
রোজী নাথ
জীবনের অন্তহীন যাত্রাপথে মা - বাবা'র চোখেই প্রথম দিগদর্শন।
তারপর পরা অপরা কক্ষপথে শিক্ষক বা গুরুর স্নিগ্ধ সান্যিধ্যে যাত্রাপথে সাবলীল প্রদক্ষিণের মন্ত্র শেখা।
গুরু তুমি চিরকালই বুক খোলা প্রান্তর।
তোমার দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে যখন তোমারই পরমাত্মার অংশ হয়ে যাই , তখন পথকে পথের মতো করেই চিনে নিতে ভুল হয় না।
তোমার নীতি আদর্শ বা তোমার পদচিহ্ন হয়ে ওঠে আরোহনের সোপান।
নিজের অজান্তেই জীবনের পরতে পরতে লিখে রাখি
বৈভবী বর্ণমালা আর জড়িয়ে রাখি সুদক্ষিণা নদী।
দিক্ষিত হয়ে যাই জীবনের মূলমন্ত্রে , তোমার স্নেহের পাত্রখানি জড়িয়ে রাখি বুকে।
কর্মজীবন বা জীবনযুদ্ধে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে নিজেরই অজান্তে কোনো এক অদৃশ্য শক্তি আমাদের সাফল্যের পথে পথপ্রদর্শকের বার্তা হয়ে যায়।
শৈশব হতে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের পথে আলোর মশাল হাতে যখন বিশ্ব পরিভ্রমণ করি তখন তোমার মুখটাই ভেসে ওঠে আলোছায়াতে।
তুমি গুরু , তুমি অনন্ত যাত্রার কান্ডারী।