🌸🌸🌸🌸🍀🌸🌸🌸🌸#পূজার _শপিং #কি _যে _হল!#মন্দিরা ঘোষ
অনেকদিন অপেক্ষায় রেখে শেষ পর্যন্ত লকডাউন শিথিল হয়েছে,তাই দোকানপাট সব খুলে গেছে,কিন্তু ঐশী শুনেছে যে দোকানে তেমন ভীড় হচ্ছে না। মা সেদিন খবরের কাগজ পড়ে বলছিল,"কি যে হল,দো…
🌸🌸🌸🌸🍀🌸🌸🌸🌸
#পূজার _শপিং
#কি _যে _হল!
#মন্দিরা ঘোষ
অনেকদিন অপেক্ষায় রেখে শেষ পর্যন্ত লকডাউন শিথিল হয়েছে,তাই দোকানপাট সব খুলে গেছে,কিন্তু ঐশী শুনেছে যে দোকানে তেমন ভীড় হচ্ছে না। মা সেদিন খবরের কাগজ পড়ে বলছিল,"কি যে হল,দোকান গুলো খুলেছে বটে,কিন্তু কোথাও সেরকম ভীড় হচ্ছে না। কি যে হবে কে জানে!দোকানে ভীড় না হলে ওদের তো খুবই লোকসান হবে। আবার এটাও ঠিক যে কার হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ আছে যে দোকানে যাবে,পূজার জামাকাপড় কিনবে! আচ্ছা খুকু ঐ যে বস্তির বাসিন্দা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কে জামাকাপড় কিনে দেবে বলতো মা?"
মাএর কথা শুনে ঐশীও চিন্তায় পড়ে যায়। ও ভাবতে থাকে যে বাবা বলেছে এই রবিবার সবাইকে নিয়ে "সাউথ সিটি মল"এ যাবে পূজো শপিং করতে। ওর বাবা শহরের বিখ্যাত ডাক্তার,ওঁর অত্যন্ত ভাল পসার।
ওদের কোন চিন্তা নেই,বাবার যেদিন সুবিধা হবে সেদিনই ওরা যে কোন জায়গায় গিয়ে পূজোর জামাকাপড় কিনে আনতে পারে।
কিন্তু মাএর কথাটা যে ঐশীর মনে গেঁথে গেছে। সত্যিই তো ঐ বাচ্ছাদের কে জামাকাপড় কিনে দেবে?ওরা যে চরম আর্থিক দুর্গতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
ওদের অনেকেরই বাবা বহুদিন ধরে কর্মহীন হয়ে দিন কাটাচ্ছে।
কারো কারো তো দুবেলা খাবারও জোটেনা। ওদের জন্য ঐশীর খুব কষ্ট হচ্ছে।
আর ঐ দোকানদার কাকুরাই বা কি করে সংসার চালাবে,ওঁদেরও তো তেমন আয় হচ্ছে না।
পূজার আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। ঐশীদের মত লোকেরা যদি নামীদামী শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে কেনাকাটা করে,তাহলে সাধারণ দোকানগুলোকে ঝাঁপ বন্ধ করে দিতে হবে।
ঐশী ওর ভাই অভ্রর সঙ্গে সবকিছু আলোচনা করে ঠিক করল যে বাবাকে বলবে যে এবার দেশের এই অসহায় অবস্থায় ওরা এবার পূজোয় সাধারণ দোকানে গিয়ে কেনাকাটা করতে চায়,তার সঙ্গে ওরা নিজেদের জামাকাপড় কেনার আগে ভোলাদাদা,কুসুম মাসী কিংবা রামু দারোয়ান দাদাকে ওদের ছেলে মেয়েদের জন্য জামাকাপড় কিনে দেবে,তাতে যদি ওদের একটা করে মাত্র জামা হয় ,ওরা খুব খুশি হবে।
ওদের মনের কথাগুলো ওরা গিয়ে আগে ওদের মা মানসীকে জানাল। মা তো বেজায় খুশী হল। সানন্দে ওদের প্রস্তাব মেনে নিল।
শনিবার রাতে ডিনার টেবিলে বাবা বলল,"খুকু এবং বাবু আগামী কাল সকালে আমরা সকলে পূজো শপিং করতে যাব। তোমরা সবাই তৈরি হয়ে নিও সময়মতো। ঠিক বেলা এগারোটার সময় আমরা বেরোব।"
নিজের কথা গুলো বলেই উনি ডিনারের প্লেটে হাত লাগালেন।
ঐশী এবং অভ্র ভেবে পায় না বাবাকে ওদের ইচ্ছের কথা কি করে জানাবে!
ওরা দুজনেই মানসীর দিকে চাইল,মানসী সবকিছু বুঝতে পেরেই ওদের বাবাকে সবকিছু খুলে জানাল।শুনে ওদের বাবা ডাক্তার সোমেশ বসু খুব খুশি হলেন। উনি সঙ্গে সঙ্গে ওদের মতকে অনুমোদন করলেন।
একঘণ্টা পরে ওরা চারজন গাড়ি করে বেড়িয়ে পড়ল।
প্রথমেই ওরা পাড়ার "শ্যাম সুন্দর বস্ত্রালয়ে" গিয়ে যা যা দরকার সাধ্যমতো কিনল। তারপর মিঠু মাসির দোকানে গিয়ে বাচ্ছাদের জামাকাপড় কিনল।
সবশেষে ওরা ঐ দোকান থেকেই পছন্দ মত জামাকাপড় কিনল নিজেদের জন্য।
ওদের মা বাবা কিছু কিনলেন না ।
ওঁরা বললেন,"আমাদের অনেক কিছু আছে,আমরা আর কিছু কিনবনা। বরং ঐ টাকায় ঐ ছোট ছেলেমেয়েদের বইখাতা কিনে দেব। "
এইবছর ওরা সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হল পূজো শপিং করে।